রিজোয়ান মাহমুদ || একগুচ্ছ কবিতা
হেমন্ত চাষিরা
আকাশ একটি ফাঁদ
চাঁদ গহ্বর – সেসব গ্রীলের ফাঁকে বৃষ্টিধোয়া
কদম ফুলের রমণী বিলাস
যে হরিণ বুকব্যথা নিয়ে অদৃশ্য সাঁতার হলো, তাকে চেনে রোদের ঝিলিক
ভাতের বদলে যারা দুমুঠো জোছনা খায়
তারা ধানমন্ডি লেকে সমুদ্রের গোঙানি শুনতে পায়।
ভাতগন্ধ নিয়ে তুমি এসো
ভাবের বিরাম চিহ্ন ভাত – সাদা ফুল
কত উপনিষদ পুরাণ এলো – গেলো
কত জোছনার তলা থেকে ফুঁপিয়ে কেঁদেছে আলো
ক্ষুধার চিৎকার কেউ বুঝতে পারি নি,
অথচ ভাতচাষিদের আমরা মনে রাখি না কখনো
ভাতের একটি দানা আমাদের গৃহস্তরা ফুল
খাওয়া এবার শেষ হলে
তুমি লবন ছিটাতে এসো
চাষিদের ঘাম ঝরা ইতিহাসে লবণ ক্ষরণ থাকে।
এক অদৃশ্য আলামত
তোমার কোমল পায়ে আমারই ‘গাঁ
আমি গ্রাম প্রধান না হয়ে কৃষক হলাম,
কি এক অদৃশ্য আলামতে –
পীড়নের ক্ষরণ না বুঝে
তোমার নাভিকমলে সকাল দেখেছি,
মুখাকৃতির স্থাপত্য
দেহের সংগীত যেন প্রাচীন শৃঙ্গারে গাঁথা
গুহাশিল্পের মতন অভাবিত বাঙময়।
তোমার পা’ দুটো কবিতাময় ঘুঙুর – তার ধ্বনি
আমাকে বিদীর্ণ করে,
একটি নদীর সাঁকো নড়বড়ে কেঁপে ওঠে
চন্দ্রবিন্দু লজ্জা নিয়ে একটি কবিতা
অগোছালো বদ্বীপ পেরিয়ে যায়।
আমি ধাক্কা খেতে খেতে তৎক্ষনাৎ
কুপোকাত জলে –
পতনের এই লজ্জা হেনাবিবি কখনো-ই জানবে না।
শব্দটা ইল্লিন
কলকল করা শব্দটা যখন জিহ্বার আগায় আটকে থাকে – তাকে কখনো খুঁচিয়ে বের করতে যেয়ো না।
কত কিছু গোর দিচ্ছি প্রতিদিন, কত কিছুই আটকে
দিচ্ছি – একটি শব্দের জন্ম না হলে তোমার ভাব থেমে যাবে কখনো ভাবতে নেই। যা বলতে চাও তুমি
সর্বংসহা সড়কে দাঁড়িয়ে বলো ; তার জন্ম জিহ্বার ব্যায়ামে।
মগজখেতের উলটপালট করে শব্দ জন্ম পেতে চায় –
তথাপি আটকাও তাকে মুহুর্ত বারণে। লবণের স্বাদ প্রথম বুঝেছে জিহ্বা। সেটুকু সেন্সর করেছে মস্তিষ্ক।
বয়স আঠারো হলে বলো, ” ভালোবাসি” উঠোনে দেখবে হঠাৎ থৈথৈ বৃষ্টি ও আঠারো ঘটি জল, বাঁচো অনেক হাঁসফাঁস
থেকে। সবুরে মেওয়া ফলে মায়মুরব্বিদের কথা কিছুটা মানতে হয়। শব্দটা ইল্লিন।
=========================