মহুয়া বৈদ্য’র দু’টি কবিতা
নেশা
আবেশ সমূহ যেন ঢেউ
বাতাসেতে একটানা বোহেমীয় সুর
কুয়াশা হাতড়ে কিছু নুনবিন্দু হাতে উঠে এল
প্রবল ঘামের বশে চুলগুলি খোঁপা-ছাড়া করি
এইসব এলোমেলো সাপেদের সহজে ছাড়ি না
তবু যদি মেডুসারা আমাকে পাথর…
অনেক যোজন দূরে বিউগল যেন বেজে ওঠে
ঘুমের চাহনি দফারফা
রাত জেগে আলসেতে আমি এত একা
তোমাকে আকুল পান করি
বিরহ
তুমি আমার অনির্ণেয় ধারাস্নান
প্রতিবিম্বের পাশে বসে তোমার চোখের দিকে তাকাই, আর ধুলোর পরে মেঘের পরে উদাসী শূন্যতা
চুপচাপ বসে থাকার হিসেব পালটে ফেলতে আমি খুব পটু, তা তুমি জানো
অই যে, অপেক্ষার ধনুক থেকে তীর ছুটে আসছে
বিদ্ধ হরিণী এখন আপনা মাংসে বৈরি বলে বিলাপ করলে হবে?
অপেক্ষা তো তারও ছিল
এত বিবেচক দার্শনিকের মতো কথা এই অবেলায় আর ভালো লাগে না
যে অভ্রান্ত শ্বাপদ আমাদের মনের মধ্যে ত্রস্ত চলাচল করে, তাকে আমরা সবাই চিনি
অথচ চিনির মতো মিষ্টি আর কিছুই যেন নেই
ছায়া ও মরীচিকা উভয়ের সাথেই যুদ্ধ
তাই বলে জল চিকচিক করবে না বালির ওপারে!
সেই থেকে আমি ছুটে ছুটে ছুটে …
মেঘের গায়ে ভ্রূ-পল্লব এঁকেছি
রোদের কাছে দখিনের গান ভিক্ষা চেয়েছি
তবু জলের হিসেব ছলাৎছল
জোয়ার যেন ফেঁপে ওঠার আগেই কেঁপে উঠেছে
আরে থামো, অত অমৃতে লোভ নেই আমার
আমি পঞ্চমে তার বাঁধি
আমি জানি পৃথিবীর সমস্ত “না” কেমন করে ধনাত্মক হয়ে ওঠে
এই বিহান বেলায় আমি আর ভোরের বকুল কুড়োই না
আমার নাভিপদ্ম নেই, আমার স্তন যোনি নিরাকারে ভেসে যাচ্ছে তুমি শোনো
তুমি শোনো, আমি গান বাঁধব বলে এই ব্রহ্মরন্ধ্র চিরে তুলে এনেছিলাম কিছু সাকার স্নেহ,
বিনির্মিত পিন্ডকার গোলাপি স্তূপের কাছে আমি বন্ধক রাখিনি আমার ক্লান্ত এই হৃদয় ভার
শুধু ছায়া চেয়েছিলাম মনে মনে
শীতল বটের ছায়া
তাতে জলের ভাগ একটু বেশি বলেই হয়ত…
দুদন্ডের পথিক আমি, তুমি তারে চেনো নাই, প্রিয়
===================