শাহিদ আনোয়ারঃ একজন স্বাপ্নিক বিপ্লবী কবির প্রস্থান
উৎপল দত্ত
দারুণ সময় ছিল তখন।
রৌদ্রকরোজ্জল দিন, চাঁদের আলোয় আলোকিত রাত। কর্ণফুলীর বুকে ভরা জোয়ার। ঘন বর্ষায় মাঠে দাপাদাপি । যৌবনের উদ্দামতা। আর ছিল দুঃশাসনের হাত থেকে মুক্তির স্বপ্ন । বিভোর ছিলাম “ এখন যৌবন যার যুদ্ধে যাবার তার শ্রেষ্ঠ সময়/এখন যৌবন যার মিছিলে যাবার তার শ্রেষ্ঠ সময়” কবিতায়, কাজে।
১৯৮০ সালের ৩০ মে তৎকালীন রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রাহমান হত্যাকান্ডের পর বাংলাদেশ স্থবির ।
প্রেসিডেন্ট আব্দুস সাত্তার সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি ছিলেন। তাঁকে বাংলাদেশের অস্থায়ী রাষ্ট্রপতির দায়িত্ব দেয়া হয়। ১৯৮১ সালে অনুষ্ঠিত নির্বাচনের মধ্য দিয়ে তিনি নির্বাচিত রাষ্ট্রপতি হিসেবে দায়িত্ব গ্রহন করেন। মন্ত্রীদের দুর্নীতির কারন দেখিয়ে তাকে পদত্যাগে বাধ্য করে ১৯৮২ সালের ২৪ মার্চ তৎকালীন সেনাবাহিনীর প্রধান হোসেইন মোহাম্মদ এরশাদ রাষ্ট্র ক্ষমতা দখল করে দেশে সামরিক আইন জারী করেন।
বাংলাদেশের মানুষ হোসেইন মোহাম্মাদ এরশাদের ক্ষমতা গ্রহন ও সামরিক আইন মেনে নিতে পারে নি। তারই প্রথম প্রকাশ ঘটে ১৯৮৩ সালে। মজিদ খান শিক্ষানীতির বিরুদ্ধে ছাত্র সংগঠন গুলো ১৯৮২ সাল থেকেই নিজেদের মধ্যে আলোচনা ও ছাত্রদের সংগঠিত করতে সচেষ্ট ছিল। ১৯৮৩ সালের ১৪ ফেব্রুয়ারী বিস্ফোরণ ঘটে; ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে হাজার হাজার ছাত্র সামরিক আইন ভেঙ্গে রাজপথে নেমে আসে। সামরিক শাসকের অধিনস্ত আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী মিছিলে নির্বিচারে গুলি বর্ষণ করে, গুলিতে জাফর, জয়নাল, দিপালী সাহা, কাঞ্চন, মোজাম্মেল সহ কমপক্ষে ১০ জন ছাত্র শহীদ এবং অসংখ্য ছাত্র আহত হয়। এই ঘটনার প্রতিবাদে তারপর দিন ১৫ ফেব্রুয়ারী সারা দেশে স্বতঃস্ফূর্ত ভাবে ছাত্র ধর্মঘট পালিত হয় । এই দিন চট্টগ্রামের শহীদ মিনার প্রাঙ্গণে ছাত্র সমাবেশ চলাকাল বাংলাদেশ রাইফেলস এর গুলিতে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র মোজাম্মেল শহীদ হন।
বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ অনির্দিষ্ট কালের জন্য। আমরা ও উত্তাপের মধ্যে পুড়তে পুড়তে তামাটে বর্ণ ধারণ করেছি। প্রতিদিন সামরিক শাসন বিরোধী মিছিল, মিটিং, ছাত্রদের সংগঠিত করার কাজে ঝাপিয়ে পড়েছি। দেশের ঐতিহ্যবাহী বাম ছাত্র সংগঠন বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়ন লড়াই -সংগ্রামে সামনের কাতারে । মাথার মধ্যে, কথায়, চলনে বলনে, মননে তখন শুধুই ““সচেতন জনতা সেই ভাল অস্ত্র / প্রয়োজন হলে হয় সকলে সশস্ত্র” (নিষিদ্ধ সম্পাদকীয়” কবি হেলাল হাফিজ) এই দু’টি চরণ।
আমি ছাত্র ইউনিয়ন চট্টগ্রাম নগর কমিটির সাধারণ সম্পাদক। ঘুরছি পাড়ায় পাড়ায়, রোদে পুড়ছি, বৃষ্টিতে ভিজছি, মিছিল, মিটিং প্রতিদিনই । শুধু সরকারী পুলিশ নয়, জামাত এর ছাত্র সংগঠন ইসলামী ছাত্র শিবির আমাদের উপর হামলা করছে কলেজে, পাড়ায়। এতো কিছুর মধ্যে ও সাহসী ছাত্ররা এসে যুক্ত হচ্ছে ছাত্র ইউনিয়নে – রাজপথ দাপিয়ে বেড়াচ্ছে।
এই রকম সময়ে আমাদের সাথে এসে যুক্ত হলেন মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিকে কুমিল্লা বোর্ডে সম্মিলিত মেধা তালিকায় তৃতীয় ও পঞ্চম স্থান অধিকারী চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজী বিভাগের ছাত্র শাহিদ আনোয়ার। বুদ্ধিদীপ্ত, সাহিত্যের বিভিন্ন শাখায় বিচরণ , কবিতা লিখছে । এমন একজন কে পেয়ে আমরা যারা সংগঠক তারা সত্যিকার অর্থে আনন্দিত। অল্প কিছুদিনের মধ্যে শাহিদ আনোয়ার আমাদের নগর টিম এর একজন। আমাদের সাথে ছুটছেন সবখানে। আর সাথে সাথে নতুন নতুন উদ্ভাবন ।
আমার সাথে অল্পদিনের মধ্যে বন্ধুত্ব গড়ে উঠল। আমার পাশের এলাকা ফিরিঙ্গীবাজার শ্যাম কবিরাজ ভবনে থাকতেন। এই ভবনটি চট্টগ্রামের প্রাচীন ভবনের একটি। শাহিদ আনোয়ার এই ভবন কে নিয়ে লিখলেন একটি চমৎকার কবিতা-
দেয়ালে বাঁধুনি নেই, গাঁথুনির চুন সুরকিরা কবে গেছে ম’রে
পুরোনো ইটের সাথে মৃত ইট আজো আছে দাঁড়িয়ে কী-করে
এ- এক বিস্ময় “
( শ্রী শ্যাম কবিরাজ ভবন । ১।)
আমার কাজ ছিল সকাল ১০ টার মধ্যে শাহিদ আনোয়ার এর বাসায় গিয়ে তাকে নিয়ে দারূল ফজল মার্কেট এর ৩য় তলায় ছাত্র ইউনিয়ন অফিসে আসা। সেখানে সবার সাথে কথা বলে কোন একটা কলেজে বা এলাকায় গিয়ে ছাত্রদের সাথে যোগাযোগ করা। আর যেদিন প্রোগ্রাম থাকতো না সেদিন দুজনে হেঁটে হেঁটে বোস ব্রাদার্সে গিয়ে আড্ডায় যোগ দেয়া। তখন বোস ব্রাদার্স ছিল চট্টগ্রামের তরুন কবি- সাহিত্যিকদের আড্ডা। তুমুল আড্ডা। রাজনীতি, সমাজনীতি, কবিতা সবই আড্ডার বিষয়। আমি সম্ভবত একমাত্র ব্যতিক্রম ছিলাম সেখানে , যে কবি নয়-রাজনৈতিক কর্মী ।
বোস ব্রাদার্সের আড্ডার পর আমরা দু’জন আবার কবি ও সাংবাদিক আবুল মোমেন ও রবীন্দ্র সঙ্গীত শিল্পী শীলা মোমেন পরিচালিত ফুলকি ( শিশুদের শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ) তে গিয়ে আড্ডায় বসতাম । তখনকার ফুলকির চেহারা ছিল অন্যরকম। টিনশেড বেড়ার ঘর । আর সব ছাপিয়ে ফুলকির সার্বক্ষণিক, শিল্পী অচিন্ত্য আইচ। আবার আড্ডা। দুপুর গড়ালে আড্ডা শেষে আমি আর শাহিদ একসাথে বাড়ি ফিরতাম।
শাহিদ একদিন আমাদের কাছে প্রস্তাব দিলেন ছাত্র ইউনিয়ন এর উদ্যোগে একটি পাঠ চক্র করতে চান, আর সেই সাথে যুক্ত করলেন পাঠচক্রের উদ্যোগে একটি প্রদর্শনী করবেন । আমরা রাজি। সবাই মিলে ঠিক করলাম পাঠ চক্রের নাম হবে “ আত্ম মুক্তি অধ্যয়ন সমিতি” । এই পাঠচক্রের নামে আমরা বিভিন্ন স্থানে “ সমাজ বিজ্ঞান প্রদর্শনী “ নামে একটি প্রদর্শনী করব; এই প্রদর্শনীর মাধ্যমে সমাজের বৈষম্য, শ্রমিকদের উপর শোষনের চিত্র, ইসলামী অর্থনীতির অসারতা আর বিকল্প হিসাবে সমাজতান্ত্রিক অর্থনীতির প্রয়োজনীয়তা ছাত্রদের সামনে তুলে ধরব। পুরো পরিকল্পনা শাহিদ আনোয়ারের। এই প্রদর্শনী অল্পদিনের মধ্যে খুবই জনপ্রিয় হয়ে উঠল।
আবার শাহিদ আনোয়ার উদ্যোগ নিলেন ছাত্রদের নিয়ে বিভিন্ন শিল্প –প্রতিষ্ঠানে গিয়ে কি ভাবে শ্রমিকরা কাজ করে তার অভিজ্ঞতা নেয়ার। এবার ও আমরা তার এই প্রস্তাবের সাথে একমত হয়ে নতুন নতুন ছাত্রদের স্টীল মিল, জি ই এম প্লান্টে পাঠানোর ব্যবস্থা করলাম। এই হচ্ছে শাহিদ আনোয়ার । সৃজনশীল ভাবনা তাকে আচ্ছন্ন রাখতো।
আবার মিছিলে মিটিংএ ও ছিলেন সরব, রাগী, একরোখা, ভাবাবেগে পূর্ণ । ১৯৮৪ সালে চট্টগ্রাম কলেজে রাতের অন্ধকারে ঘুমের মধ্যে কলেজ ছাত্র ইউনিয়ন নেতা উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষার্থী শাহদাত হোসেন ইসলামী ছাত্র শিবিরের হাতে শহীদ এর মৃত্যু বরণ করে। এই ঘটনার প্রতিবাদে ছাত্র ইউনিয়ন স্কুল কলেজে পাড়ায় মহল্লায় ছাত্র শিবিরকে সামাজিক ভাবে বয়কটের আহ্বান জানায়। শাহিদ আনোয়ার এই আন্দোলনে অন্যদের সাথে নেতৃত্বের ভূমিকা গ্রহণ করেন। তাঁর সমাজ বিজ্ঞান প্রদর্শনী চট্টগ্রাম নিউ মার্কেট এর সামনে, চকবাজার মোড় সহ শহরের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ স্থানে সাধারণ মানুষের মধ্যে প্রদর্শিত হতে থাকে। অনেক বাড়িতে ছাত্র শিবিরের কর্মীরা লজিং থাকতো। শাহদাত হত্যার ঘটনা মানুষের মধ্যে ছাত্র শিবির সম্পর্কে ভীষন ঘৃণা তৈরী করে । ফলে অনেক ছাত্রের অভিভাবক শিবির কর্মীদের লজিং শিক্ষকের কাজ থেকে বের করে দেয়। শাহিদ আনোয়ারের প্রদর্শনী এখানে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
পুলিশের হাত থেকে বাঁচার জন্য রাজপথে মিছিল করে দু’জন অনেকদিন চট্টগ্রামের এই গলি সেই গলিতে পালিয়ে বেড়িয়েছি । রেয়াজুদ্দিন বাজার আমতলায় ( এখন রাস্তার মাঝখানের আম গাছটি নেই ) মিছিল শেষ করে রেওয়াজউদ্দীন বাজারের ভেতর পালিয়ে তিনপুলের মাথা দিয়ে বের হয়ে নন্দন কানন গিয়ে ঢুকতাম । ঐ পাড়ায় পুজন দত্ত, সাহিদ উদ্দিন আহমদ, মিলন কানুনগো, কবি আশীষ সেন, খেলাঘর নেতা রূপক চৌধুরী থাকতেন।
পুলিশ ঘিরে ফেলেছে দেখে নন্দন কাননে কত রাত একসাথে বন্ধু পুজন দত্তের বাড়িতে কাটিয়েছি তার হিসেব নেই ।
শাহিদ শুধু নিজেই ছাত্র ইউনিয়ন করতেন না, তাঁর সাথে ছোট বোন জাফরীন, ছোট ভাই মঈনুদ্দীন ও ছাত্র ইউনিয়নের সাথে যুক্ত হয়। মঈনুদ্দীন ছাত্র ইউনিয়নের চট্টগ্রাম নগর কমিটির গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন করে একসময়।
শাহিদ আনোয়ার সম্পর্কে লিখতে বসে অনেক কথা মনে পড়ছে। সেই আমাদের সোনালী যৌবনের আগুন ঝরা দিনের কথা ।
একজন কবি শাহিদ আনোয়ারের কথা বলি।
কখনো কখনো তার বাসা থেকে বের হয়ে বলতেন- চল নদীর ধারে যাই একটা কবিতা লিখেছি তোমাকে শোনাব । কাছেই জলিল গঞ্জে কর্ণফুলীর পাড়ে কাঠের গুড়ির উপর গিয়ে বসতাম । পকেট থেকে ছোট্ট কাগজ বের করে শোনাতেন-
“গোলাপ ওষ্ঠে নেশার পরশ
প্রেম বিনুনি দোলে
মদের মত গন্ধ ঢেলে
তোমার খোঁপা খোলে”
(শুড়িখানার নুড়ির মধ্যে)
আবার কখনো কখনো কোতয়ালী থানার উল্টোদিকে দাঁড়িয়ে পকেট থেকে কাগজ বের করে বলতেন- দাঁড়াও কবিতা লিখেছি, শোন-
“সিরিঞ্জ ভরা দুঃখ দিলে হাসপাতালের শুভ্র নার্স
দুঃখ দেওয়ার ভঙ্গিমা তোর
ভুলতে তবু পারবো না”
আবার কখনো বোস ব্রাদার্সে এক কাপ চাপ ভাগ কর নিয়ে টেবিলে মুখোমুখি বসে মৃদু উচ্চারণে শোনাতেন –
‘“ আমি ব্লেড দিয়ে কাটবো নিজের গলা
আমি আমার সমস্ত নখ উপড়ে ফেলবো
সারা রাজপথে লাল পথনির্দেশ দেবো
আমি …… জঘন্যভাবে খুন করবো তোমাদের!”
( আটচল্লিশ ঘন্টা একটানা হরতালের পর ফিরে পাওয়া স্বাভাবিক জীবন)
বন্ধু, কবি শাহিদ আনোয়ারের এমন অনেক সদ্যজাত কবিতা শুনেছি রাস্তায় দাড়িয়ে, কর্ণফুলীর পাড়ে, বোস ব্রাদার্সে বসে। কি অসাধারণ সব কবিতা সাধারণ ভাবে শুনিয়ে যেতেন।
শাহিদ আনোয়ার একাধারে কবি, বিপ্লবী, কম্যুনিস্ট ।
১৯৯০ সালে গ্লাসনস্ত ও পেরস্ত্রইকা তাসের ঘরের মত ভেঙ্গে দেয় সমাজতান্ত্রিক রাষ্ট্র সোভিয়েত ইউনিয়ন। কোটি কোটি মানুষের ‘মুক্ত মানবের মুক্ত পৃথিবী’ গড়ার স্বপ্ন ভেঙ্গে চুরমার হয়ে যায়। বাংলাদেশের অসংখ্য যুবকের মত শাহিদ আনোয়ারও এই ঘটনায় আঘাত পেয়েছিলেন। স্বপ্ন ভঙ্গের বেদনায় রক্তাক্ত হয়ছিল হৃদয় । সেই সাথে পুঁজিবাদী সমাজের ‘আমি’ কেন্দ্রিক চিন্তাধারীদের আঘাত ও ছিল। বিভিন্নভাবে শাহিদ আনোয়ারের “ আমরা” “আমাদের” চিন্তাকে প্রশ্নবিদ্ধ করেছে। তৈরী করার চেষ্টা করেছে আত্ম- পীড়নের। হয়তো কখনো তিনি দুর্বল হয়েছিলেন, কিন্তু ভেঙ্গে পড়েন নি। কাজ করেছেন সাংবাদিক হিসাবে, কলেজে পড়িয়েছেন। ভোগ- বিলাসের জন্য কখনো কাতর হয়ে পড়েন নি। জীবন সঙ্গী করেছিলেন আর একজন কবি, সমাজ বদলের সৈনিক সেলিনা শেলীকে। দু’জনে মিলে হাতে হাত ধরে পথ চলেছেন। শেলীও শক্ত করে ধরেছেন শাহিদের হাত । দু’জনে মিলে যুগল কবিতায় শুধুই মুগ্ধতা ছড়িয়েছেন
শাহিদ আনোয়ার এক বছরের ও বেশী হাসপাতালে অসুস্থ ছিলেন ।
তাঁর সহধর্মিণী আমাদের রাজপথের সহযোদ্ধা কবি সেলিনা শেলী ২৭ সেপ্টেম্বর ভোরে জানালেন- শাহিদকে আবার একটি প্রাইভেট হাসপাতালে ভর্তি করিয়েছে । কিছুই বুঝতে পারছে না। ডাঃ নিশীথ কে ফোন করলাম, ডাঃ মিলাদকে ফোন করলাম, হাসপাতালের ডিরেকটরদের একজন বন্ধু সিদ্ধার্থ কে ফোন করলাম।কেমন আছে একটা খবর নিতে। কিন্তু কাউকে কিছু করার কোন অবকাশ না দিয়ে বন্ধু, কবি, কমরেড শাহিদ আনোয়ার পাড়ি দিলেন আর এক জগতে। যেখানে পৃথিবীর কোলাহল নেই, স্বৈরশাসন নেই, নেই দুষ্ট চক্রের কালো ছায়া ।
এখনো মনে হয়, শাহিদ আনোয়ার এই বুঝি ডেকে বলল- উৎপল, অনেকদিন কবিতা শুনাইনি, দাঁড়াও একটা নতুন কবিতা লিখেছি-
“ তুমি নিশ্চয়ই অস্বীকার করবে না
ইয়াসির আরাফাতও হতে পারেন বিশ্বাস ঘাতক
তবুও ফিলিস্তিন স্বাধীন হবেই”
(তুমি নিশ্চয়ই)
কবিতায় নিজের বিশ্বাসের প্রতি অবিচল আস্থার কি সুন্দর মায়াময় বহিপ্রকাশ !
কবি শাহিদ আনোয়ার তা দেখিয়েছেন বিনম্র উচ্চারণে।
প্রিয় শাহিদ আনোয়ার। অনেক ভালবাসি কমরেড ।
অক্টোবর, ২০২১।