বৈশাখী পঙতিমালা
একক কবিতা
অভিজিৎ ভট্টাচার্য
অদৃশ্য সুতো
চিন্তাঘুড়ি ওড়ে শনশন
এলোমেলো চারদিক ….
পারস্পরিক।
শৈশব থেকে কৈশোর
কৈশোর থেকে বৈভব
ক্যাটালিস্ট হয় ভোগ… দুর্ভোগ
সন্ত্রাস থেকে সন্ন্যাস।
মনগাড়ি যায় ঠিকানা-বিহীন
আকাশ-পাহাড়-বন্য-গহীন…
ধ্রুবতারা হয় আবছা স্টেশন
রবি-নজরুল-লেনিন-লালন
পিপাসার জল টেরেসা-স্টেশন
সিগন্যাল-এ থামে লুথার কিং।
চিন্তাঘুড়ি দিক বদলায়
দিন বদলায় বিষুব-হাওয়ায়..
রাত্রির রূপে ভয়ার্ত চুপ
সুশীল সজাগ সচেতন সায়।
সুস্থ মানুষ আলো হাওয়া খোঁজে
কাটাঘুড়ি খোঁজে মাটি,
জমির দখলে খেলোয়াড়
খেলে গোয়েবেলসীয় ঘুঁটি।
চঞ্চল নাঈম
বৈশাখে তোমার পরিচিতি
অগত্যা বৈশাখে নাগরিক সমাহারে ঢুকে পড়ি
হাওয়ার উৎসবে একাকী দক্ষিণে হাঁটি
সন্ধ্যায় তোমার কথা শুনে পরিচিতি পায়
বৈশাখের ধারাবাহিক নানান পিকচার
হৃৎযন্ত্র-শব্দে দিগন্তের প্ল্যাটফর্ম উন্মোচন
একটা উৎসবে হাসিগুলো অমরত্বের ভূমিকা রাখে
মাঝে-মধ্যে ক্ষুদ্র জায়গাও বিরোধীতা করে
আর কিছুটা সরল মতামত বৈশাখের হাওয়ায় আসে।
২
উৎসব সমাজের মেদ থেকে ক্ষুদ্রতা পোড়ানো আয়োজন
আর উৎসব সোসাইটি সম্পর্কে একটা ধারণার বিবিধ অধিবেশন
সব মানুষই সুবিধায় সরল ফেরে না
ক্রমশ সুবিধা পেলে নিয়তির শূন্যতায় আটকায়
তবে তোমাকে সহজ দেখি বৈশাখের নির্জন সন্ধ্যায়
কেবল প্রণয় পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রিত নিরিবিলি মূল্যায়ন
বৈশাখে স্বপ্নটা তাৎক্ষণিক তৈরি হয়
প্রতিযোগিতা সমূহ মন থেকে দূরে যায়
তখন তোমার মৌন দক্ষতা প্রমাণ ভয়ানক!
আগল ভাঙার সময়
চন্দনকৃষ্ণ পাল
তোমার হারিয়ে যাবার কথা শুনেই আমি কেমন চমকে উঠি।
মাথায় তোমার অদ্ভুত এক পোকা আছে
যখন তখন সে তো তোমায় উড়িয়ে বেড়ায় ড্রোনের মতো-
ঘোর বর্ষায় বাসন্তী রঙ ছড়িয়ে তোমায় আকুল করে।
জীবন মানে স্বপ্ন দেখার ক্ষণ শুধু নয় বাস্তবতাও মানতে হবে,
চলতে হবে ঘোর কাটিয়ে, চোখ কান সব খোলা রেখে
তা না হলে নানান বিপদ ঘিরবে তোমায়
বুঝবেও না কোন শিকলে বন্দী হলে,
কোন অন্ধকার আসছে তোমার ঝলমলে রোদ কেড়ে নিতে।
চেতনাকে মুঠোবন্দী করে তুমি
ভালো থেকে লক্ষ্মী মেয়ে
নিজের পায়ে দাঁড়াও আগে
তারপর ঠিক আগল ভাঙার সময় পাবে।
ভাঙবে প্রাচীর নিজের মতো
ভিত গড়বে সত্য এবং সুন্দরের এক
আকাশ ছোয়া টাওয়ার হবে
তোমার সকল স্বপ্ন নিয়ে…
ভালো থেকো কন্যা তুমি যাও এগিয়ে স্বপ্ন রথে।
জগদীশ গুপ্ত
মনিরুজ্জামান প্রমউখ
—————————————————————–
জগদীশ গুপ্ত
টাইপিস্টের ব্যানারে জীবনের রংধনু উড়িয়েছেন
হাওয়ায় হাওয়ায় সুখ-হীন মর্মরে মনমীম ভেঙ্গেছেন
সত্ত্বার চূড়ান্ত হ্রদে বুনেছেন হৃদয়ের অক্ষর দিয়ে মমত্ব
জগদীশ গুপ্ত।
অচিন্ত্যকুমার সেনগুপ্তের অনুপস্থিত,
প্রেমেন্দ্র মিত্রের অজ্ঞাতবাস
তারে তুলে আনে আসরের মজমায়
উত্তরসূরীর পালক উড়ে সধন্যে সর্বত্রে নির্ণীত অভিধানে
মানিক বন্দোপাধ্যায়ের সগোত্রে উদয় দানে
মনুষ্যধৃত প্রেমশুদ্ধ কবিতা, গল্প, উপন্যাস মনোজসাহিত্য
মকরক্রান্তির রেখায় হাঁটে যেনো বোলপুর হতে যাদবপুর পর্যন্ত
জগদীশ গুপ্ত।
লিপ্ত হতে হতে রিক্ত হয়ে যাননি মনক্ষতে পুষেছেন প্রেমের গীয়ার
রচেছেন অক্ষর দিয়ে বোনা শব্দমালায় সাধনতীর্থ পরা সাহিত্যসাধ
স্মৃতির মলিন করে কে রাখে তারে অবেদ্য জগজ্জীবন সারাময় ব্যাপ্ত?
জগদীশ গুপ্ত।
নববর্ষ
এলা হুইলার উইলকক্স
অনুবাদ: শফিউল আজম মাহফুজ
নববর্ষের কবিতায় কিবা বলা যায় আর
যা হয়নি বলা শত সহস্রবার?
নতুন বছর আসে, পুরানো বছর পিছু হটে
জানি মোরা স্বপ্ন দেখি, স্বপ্ন দেখি জানি বটে।
হাসিমুখে জেগে উঠি, কোন এক নতুন প্রাতে
কেঁদে-কেটে ঘুমে লুটাই, আবার কোন আঁধার রাতে।
যতক্ষণ না কামড় বসায়, জড়িয়ে রাখি ধরনীর চারপাশ
অতঃপর দিই অভিশাপ,আর ডানার জন্য ফেলি দীর্ঘশ্বাস।
আমরা বাঁচি, ভালোবাসি, প্রণয় করি, ফোটাই মোরা বিয়ের কলি,
নতুন বউদের সাজিয়ে তুলি, আর মৃতদের মোরা ঢেকে ফেলি।
আমরা হাসি, আমরা কাঁদি, আশা করি, ভয়েও মরি
নববর্ষে এসব ভারে আবার মোরা নুয়ে পড়ি।
এলা হুইলার উইলকক্স ( নভেম্বর ৫, ১৮৫০- অক্টোবর ৩০, ১৯১৯) উনিশ শতকের
মার্কিন মুলুকের কবি তার বিখ্যাত লাইন”হাসো, আর পুরো পৃথিবী উঠবে হেসে/ কাঁদো, স্বান্তনা দিবেনা কেউ এসে।” তার “The Year” কবিতাটি অনুবাদ করলাম।
সম্ভবতঃ এই কবিতাটি এই প্রথম বাংলায় অনুদিত হলো।
The Year
Ella Wheeler Wilcox
What can be said in New Year rhymes,
That’s not been said a thousand times?
The new years come, the old years go,
We know we dream, we dream we know.
We rise up laughing with the light,
We lie down weeping with the night.
We hug the world until it stings,
We curse it then and sigh for wings.
We live, we love, we woo, we wed,
We wreathe our brides, we sheet our dead.
We laugh, we weep, we hope, we fear,
And that’s the burden of the year.