বই নিয়ে কিছু কথা || রুখসানা কাজল
আফগানিস্তানের নারী লেখকদের লেখা কিছু গল্প নিয়ে এই অনুবাদ বইটি ঢাকা এবং কলকাতা থেকে দুই প্রচ্ছদে দুই শিরোনামে দুটি প্রকাশনী থেকে প্রকাশিত হয়েছে। ২০১৯এর নিদারুণ করোনা কালের ভয়াবহ দুঃসময়কে অতিক্রম করার উপায় হিসেবে অনুবাদ কাজে দিয়েছিলাম। ছোট থেকে প্রচুর অনুবাদিত রুশ গল্প উপন্যাস পড়ে বেড়ে উঠেছি। সেই সব অনুবাদের সুগভীর মাহাত্ম্য এবং অনুবাদের সারল্যে আমার মন প্রবল আবেগে ডুবে ছিল। যদিও দীর্ঘ লেখালেখির সময়কালে অনুবাদকর্মটিকে আমি সবেগে এড়িয়ে গেছি। সংশয় ছিল, যাঁদের অনুবাদে প্রলিপ্ত হয়ে মুগ্ধ সমাহিত হয়ে আছি, সেই সম্মান কি আমি রাখতে পারব !
কিন্তু সময় সাহস জুগিয়েছে। করোনা মহামারীর ভয়কে জয় করতে অনুবাদে মগ্ন হয়ে গেছিলাম। গোটা করোনাকাল জুড়ে বাংলাদেশের সুপরিচিত গল্পকার পত্রিকা আমার অনুবাদিত গল্পগুলো ছেপে গেছে। পাঠকের মতামত জানিয়েছে। অবশেষে বই করার প্রস্তাব দিলে আমি আবার গল্পগুলো নিয়ে বসেছি। বর্তমান সময়ের পেশাদার অনুবাদকদের গোঁ গাইডেন্স শুনেছি, মেনেছি কিছু না মেনে নিজের মতো করেই অনুবাদ করেছি। ত্রুটি ছিল, আছেও। চেষ্টা করেছি। তবু যা কিছু আছে তার কাছে আমার শ্রম সর্বাংশে সৎ এবং খাঁটি। আর কে না জানে, শিল্প সাহিত্যে সর্বাংশে নিখুঁত বলে কিছু নেই। আছে দাগিয়ে দেওয়ার মাপকাঠি।
বইয়ের গল্পগুলো বন্ধুজন এবং অন্তর্জালের সাহায্য নানা উপায়ে সংগ্রহ করেছি। নেই কোন ধারাবাহিক সময়কাল। ভয় ছিল। তীব্র আতঙ্কে কেঁপেছি সারাক্ষণ। মনে হত, গল্পটি আর শেষ করতে পারব না, তার আগেই করোনা কেড়ে নেবে আমার প্রাণ !
গল্পগুলোর উৎস ভাষা ছিল, আফগানিস্তানে প্রচলিত ‘দারি’ এবং ‘পশতু’ ভাষা। এই বইয়ের নারী লেখকদের অনেকেই আজন্মের জন্য নির্বাসিত এবং প্রবাসি। কেউ আবার তরুণ লিখিয়ে। কাজ করে যাচ্ছেন অবরুদ্ধ জন্মভূমি আফগানিস্তানকে নিয়ে।
পাঠক সুজনেষু, কলকাতার মিসিসিপির মেঘ থেকে প্রকাশিত বইটি পাওয়া যাচ্ছে কলকাতা বইমেলায়। এবং ঢাকা থেকে প্রকাশিত বইটি পাওয়া যাবে আসন্ন একুশে বইমেলার গল্পকার প্রকাশনীর স্টলে।
===============================
******************************************