আজ রাতে আমি লিখতে পারি
পাবলো নেরুদা
অনুবাদঃ ফাল্গুনী ঘোষ
আজ রাতে আমি লিখতে পারি দুঃখের পংক্তিগুলি
লিখি, যেমন ‘রাত চুরমার হয়
এবং নীল নক্ষত্রগুলি কাঁপতে থাকে দূরে।’
রাতের বাতাস ঘুরে ঘুরে গান গায়।
আজ রাতে আমি লিখতে পারি দুঃখের পংক্তিগুলি।
আমি তাকে ভালোবাসতাম, এবং কখনও কখনও
সেও আমায় ভালোবাসতো।
এই একটি রাতের মতো আমি তাকে জড়াতাম আমার বাহুতে।
আমি তাকে চুম্বনে ভরাতাম বারবার অনন্ত আকাশের নীচে।
সে আমাকে ভালোবাসতো, কখনও কখনও আমিও তাকে ভালোবাসতাম।
কেই বা না ভালোবেসে থাকতে পারে তার বড়ো বড়ো
চোখ দু’টিকে।
আজ রাতে আমি লিখতে পারি দুঃখের পংক্তিগুলি।
আমি ভেবেছি যে আমি তাকে পাবো না।
অনুভব করতে থাকি যে আমি তাকে হারিয়েছি।
এই বিরাট রাতের শব্দ শুনতে থাকি, তাকে ছাড়া এই রাত
দীর্ঘতর লাগে।
কবিতা ঝরতে থাকে আত্মার মাঝে যেমন শিশির ঝরে
ঘাসের জমির উপর।
কিইবা এসে যায় আমার ভালোবাসা ধরে রাখতে পারেনি তাকে।
রাত চুরমার হয় এবং সে আর আমার সাথে নেই।
এই হলো সব। দূরে কেউ গান গায়। দূরে।
আমার আত্মা তৃপ্ত নয় যা তাকে হারিয়েছে।
আমার দৃষ্টি তাকে খুঁজে বেড়ায় তার কাছে যাবার জন্য
আমার হৃদয় তার দিকে চেয়ে থাকে, এবং সে আমার সাথে নেই।
সেই একই রাতে গাছের মাথাগুলি সাদা হতে থাকে
আমরা, সেই সময়ে, আর একইরকম ছিলাম না।
আমি তাকে আর ভালোবাসি না, এ সত্য, কিন্তু কিভাবে আমি
তাকে ভালোবাসতাম।
আমার কন্ঠ সেই বাতাসকে খুঁজে বেড়ায় যা তাকে ছুঁয়ে থাকে।
সে অন্যের। সে হবে অন্যের। আমার বিগত চুম্বনের মতো।
তার কন্ঠ। তার উজ্জ্বল শরীর। তার অনন্ত চোখ দুটি।
আমি তাকে ভালোবাসি না, তা সত্য, কিন্তু মনে হয়
আমি তাকে ভালোবাসতাম।
ভালোবাসা খুবই সংক্ষিপ্ত, বিস্মৃতি দীর্ঘ।
কারন এই রকম রাতে আমি তাকে জড়াতাম আমার দুইহাতে
আমার আত্মা তুষ্ট নয় যা তাকে হারিয়েছে।
যদিও এ আমার যন্ত্রণার অন্তিম, যা আমাকে আর্ত করে
এবং এই হল তার জন্য লেখা আমার শেষ কবিতা।
********************************************
মূল স্পেনিশ থেকে অনুবাদ: ফাল্গুনী ঘোষ
০৬/১৬/২০২৩
***********************************************