নুসরাত সুলতানা
মোসাহেব
মানুষের মুক্তির ইতিহাস মূলত
অন্ধকারের পদযাত্রার ইতিহাস।
যূগে যূগে মানুষ আলোর কাছে মুক্তি
ভিখ মেনেছে, আলোর তাসবীহ টিপেছে
আলো তার উরু দেখিয়ে ছলে-কৌশলে প্রাণে মেরেছে।
অন্ধকার এসে মুছে দিয়েছে –
বঞ্চিত মানুষের চোখের জল।
ক্ষুধার্ত মানুষের থালায় ভাত।
মানুষের সঙ্কটের ইতিহাস মূলত
খাদ্য, সঙ্গম আর শিল্পের সঙ্কটের।
অন্ধকার শিল্প আর সঙ্গমকে প্রশ্রয় দেয়
মাতৃ জঠরের মতোই।
আলো শুধুই পুঁজিবাদ আর ক্ষমতার মোসাহেব।
যমুনার স্তন
যমুনার স্তনে টনটনে ব্যাথা।
পদ্মার ঠোঁট শুস্ক, বুকে তার স্থবিরতা।
শীতালক্ষ্যা গুমরে কাঁদে..
প্রাণ হারিয়েছে তার অসংখ্য ছোট বোন।
দখলদার তাদের কবরে বানিয়েছে প্রাসাদ,
হাউজিং সোসাইটি।
পঞ্চাশ বছরের উন্নয়নের শব্দকোষ লিপিবদ্ধ আছে
তাহাদের জলজ রূপালী বুকে।
আর যে জলজ পরীরা প্রাণ হারিয়েছে তারাই জানে
স্বাধীনতার প্রাপ্তি আর উন্নয়নের প্রকৃত রূপকল্প।
কালের সাক্ষী বহমান বুড়িগঙ্গা ডুকরে কেঁদে বলে
শুকে নাও আমার জল
আর দেখে নাও আমার পোড়া চেহারা
বুঝবে উন্নয়নের ব্যাসার্ধ, পরিধি আর ঘনত্ব।
প্রণয়ের কাল
বৃষ্টি ধুয়ে দাও আমার
চোখের কাজল,
ধুয়ে মুছে সাফ কর
আমার গোপন কান্নার দাগ।
মুছে দাও ভালোবাসাহীন সোহাগের চিহ্ন
তোমার আগ্রাসী চুম্বনে ভরে দাও
আমার পেলব দেহ মন!
যখন মেঘ বালক ছিলে;
কত তো দেখেছি তাকিয়ে
প্রলুব্ধ দৃষ্টিতে।
আজ তোমার আমার প্রনয়ের কাল!
===================