দুর্বৃত্তচক্র ও হায়েনাবেষ্ঠিত
বাংলাদেশ বনাম মুক্তিযুদ্ধের বাংলাদেশ
আলী সিদ্দিকী
পৃথিবীর সকল গতিশীল জাতিসত্তার মৌলচেতনায় ক্রিয়াশীল থাকে স্বাধীনতার স্পৃহা। সেই অদম্য, অপ্রতিরোধ্য স্পৃহায় উদ্বেল চেতনায় তারা যেকোন প্রকার পরজাতি শাসন-কর্তৃত্বের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তোলে। বাঙালী জাতিসত্তাও পাকিস্তানী শাসন শোষণের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়িয়েছিলো, প্রতিরোধ গড়ে তুলেছিলো এবং ত্রিশলক্ষ প্রাণের বিনিময়ে অর্জন করেছিলো সার্বভৌম স্বাধীন বাংলাদেশ। সেই বাংলাদেশের বয়েস আজ ৫০ বৎসর হলো।
উপরের এক প্যারায় যতো সহজে বিজয় অর্জনের কথা বলে ফেলা হলো অর্জনের লড়াইটা ততো সহজ ছিলো না। বাঙালি জাতি যেমন মোগলদের বিরুদ্ধে লড়েছে, তেমনি লড়েছে বৃটিশদের আধিপত্যের বিরুদ্ধে এবং সব শেষে সুদীর্ঘ ও রক্তাক্ত লড়াইটা করেছে ধর্মীয় ভ্রাতৃত্বের নামে চাপিয়ে দেয়া বিজাতীয় আধিপত্য। বাঙালি জাতির সহস্র বছরের ইতিহাসে এতো সংঘবদ্ধ, সুশৃঙ্খল ও অপ্রতিরোধ্য লড়াই নজিরবিহীন।
ধর্ম কোন জাতীয়তা সৃষ্টি করে না, করে সম্প্রদায়। কিন্তু ধর্মান্ধ ও ধর্মব্যবসায়ীদের এই স্বত:সিদ্ধ সত্যে আস্থা আনা সম্ভব নয়। কারন তাদের ধর্মপালন ও ধর্মবিশ্বাসে সুপ্ত আছে স্বার্থসিদ্ধির অসৎ উদ্দেশ্য। ব্রিটিশবিরোধী ভারতীয় জাতীয়তাবাদী আন্দোলনে ভাঙন ধরানোর জন্যে ইংরেজদের ইন্ধনে মুসলমানদের পৃথক রাষ্ট্রের বিষয়টি “দ্বিজাতি” তত্ত্বের মাদকপুরিয়াটি মুসলমানদের আসক্ত করে ফেলে। সংস্কৃতি ও ভাষাভিত্তিক জাতিরাষ্ট্রের বৈজ্ঞানিক জাতিতত্ত্বের বিপরীতে বিজাতি ও বিভাষী জনগোষ্ঠীর সমন্বয়ে ধর্মভিত্তিক জাতি গঠনের যুক্তিহীন রাষ্ট্র পাকিস্তানের সৃষ্টি করা হয়। বাঙালি জাতিকে তার শেকড় থেকে টেনে হেঁচড়ে উর্দুভাষী সিন্ধি-পাঞ্জাবীদের সাথে জুড়ে দেয়া হয়। এই জবরদস্তিমুলক রাষ্ট্রসৃষ্টি ছিলো উপমহাদেশের ইতিহাসে এক জঘন্যতম প্রতিহিংসাপরায়ন অপরাজনীতি। তা যেমন ছিলো বাঙালির জাতিসত্তার প্রতি চরম অপমান তেমনি ছিলো বিজাতীয় উর্দুভাষীদের কাছে পরাধীনতা। ধর্মীয় বন্ধনের চেয়ে জাতিসত্তার বন্ধন যে অনেক বেশি শক্তিশালী তা ১৯৪৮ সাল থেকে ক্রমশ দৃশ্যমান হয়ে উঠতে থাকে। জাতিসত্তাকে উপেক্ষা করে ধর্মীয় প্রভাবকে তীব্র করার লক্ষ্যে পশ্চিম পাকিস্তানী শাসকগোষ্ঠী পূর্বপাকিস্তানের তথাকথিত “তমুদ্দন মজলিস”-এর তাঁবেদার জাতিদ্রোহী বাঙালীদের দিয়ে বাংলাকে উর্দু হরফে লেখার অপপ্রয়াস চালায়। কিন্তু জাতীয় পরিষদে সংখ্যাগরিষ্ঠ জনগণের ভাষা বাংলাকে রাষ্ট্রভাষা করার প্রস্তাব উত্থাপন করে ধীরেন্দ্রনাথ দত্ত বাঙালীর জাতীয়তাবাদী চেতনাকে জাগিয়ে তোলেন। রাষ্ট্রভাষা উর্দু করার বিরুদ্ধে জেগে ওঠে বাঙালীর জাতীয়তাবাদী চেতনা। ১৯৫২ সালের ২১শে ফেব্রুয়ারি বুকের রক্ত দিয়ে বাঙালী জাতি বিশ্ব ইতিহাসে নতুন মাইলফলক স্থাপন করে।
একুশে ফেব্রুয়ারি বাঙালীর জাতীয়তাবাদী জাগরণের দীপশিখা হয়ে ওঠে। বায়ান্নের ভাষা আন্দোলন থেকে ঊনসত্তরের গণঅভ্যূত্থান, সত্তরের নির্বাচন এবং একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধের মূল অনুপ্রেরণা ছিলো একুশে ফেব্রুয়ারি প্রবাহিত জাতিসত্তা চেতনার তীব্র ফল্গুধারা। তাই বায়ান্নের একুশ থেকে একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধ পর্যন্ত সকল আন্দোলন সংগ্রামে একুশের অনুপ্রেরণা ছিলো অবিংসবাদিত।
এক্ষেত্রে বিশ্ব পরিমন্ডলে ঘটে চলা রাজনৈতিক উত্থান-পতনের পরিপ্রেক্ষিত উপেক্ষা করার কোন অবকাশ নেই। রাশিয়ায় সমাজতান্ত্রিক রাষ্ট্রব্যবস্থা, জার্মানিতে ফ্যাসিবাদী নাৎসি শক্তির উত্থান এবং জার্মানী-ইতালী-জাপানের অক্ষশক্তির উত্থান যেমন বিশ্বরাজনীতিতে নতুন মেরুকরণ নিয়ে আসে তেমনি ফ্যাসিবাদী শক্তির পরাজয়ের ভেতর দিয়ে সমাজতান্ত্রিক বিপ্লবের ঢেউ ছড়িয়ে পড়ে বিশ্বব্যাপী। ফলশ্রুতিতে বিশ্বজুড়ে জাতীয় মুক্তি আন্দোলনের জোয়ার বেগবান হয়ে ওঠে। সেই ঢেউয়ের ধাক্কা এসে লাগে বাঙালীর জাতীয়মুক্তি আন্দোলনের স্রোতে। জোটনিরপেক্ষ আন্দোলনের প্রভাব বাঙালীর জাতীয়মুক্তি আন্দোলনকে বেগবান যেমন করেছিলো তেমনি লড়াই সংগ্রামের ভেতর অন্যতম প্রপঞ্চ হয়ে উঠেছিলো সমাজতান্ত্রিক ধারা।
কিন্তু বাঙালীর জাতীয়তাবাদী আন্দোলনের মূল স্রোতধারাটি ক্রমশ উঠতি ধনী ও পাতিবুর্জোয়াদের দখলে চলে যায় এবং শেখ মুজিব হয়ে ওঠেন তাদের মূল নেতা। সমাজতান্ত্রিক জোটের ভেতর বিভ্রান্তি ও বিভাজন মুক্তিসংগ্রামের অভিমুখ পাতিবুর্জোয়া অধ্যুষিত আওয়ামী লীগের হাতে চলে যায় এবং তারা মার্কিন সাম্রাজ্যবাদ বিরোধী ও জোটনিরপেক্ষ আন্দোলনের শরীক কিন্তু ভারতীয় বুর্জোয়াদের প্ল্যাটফরম কংগ্রেস দলের পৃষ্ঠপোষকতা লাভ করে। ফলশ্রুতিতে বাঙালীর জাতীয় মুক্তির আন্দোলনকে জনযুদ্ধে পরিণত হতে না দেয়া এবং নেতৃত্ব ডানপন্থীদের হাতে রেখে দেয়ার ব্যাপারে ভারতীয় কংগ্রেসের ছিলো সক্রিয় ভুমিকা।
শেখ মুজিবুর রহমান কখনোই বামঘেঁষা ছিলেন না। তিনি ছিলেন শহীদ সরোয়ার্দির সাগরেদ এবং সামন্ত আদল ছিলো তাঁর নেতৃত্বের এক অনস্বীকার্য বহি:প্রকাশ। কিন্তু বিশ্ব রাজনীতির আবহ, আভ্যন্তরীণ রাজনীতিতে সমাজতান্ত্রিক চেতনার প্রভাব, মওলানা ভাসানীর বিরোধিতা তাঁকে ব্যালেন্স করে চলতে শিখিয়েছে। তাই স্বাধীন বাংলাদেশের প্রথম সংবিধানে সমাজতান্ত্রিক প্রপঞ্চের সন্নিবেশ ঘটেছে, সমাজতন্ত্র, গণতন্ত্র, ধর্মনিরপেক্ষতা ও বাঙালী জাতীয়তাবাদ মৌলনীতি হিসেবে গৃহীত হয়েছে।
কিন্তু রাজনৈতিক জবাবদিহিতা উপেক্ষা, প্রধানমন্ত্রী/রাষ্ট্রপতির হাতে অত্যধিক ক্ষমতা কুক্ষিগত করা, ১৯৭৩ এর নির্বাচনে কারচুপির মাধ্যমে নির্বাচন কমিশনকে প্রভাবিত করা, পাবলিক সেফটি আইনের মতো কালো আইন তৈরি করা, প্রশাসনকে দলীয়করণ করার মধ্য দিয়েই বঙ্গবন্ধু নিজ হাতেই জনগণের অংশীদারিত্ব অবদমন করেন। তাছাড়া আদিবাসী জনগোষ্ঠীকে বাঙালী হয়ে যেতে বলে তিনি মুক্তিযুদ্ধের মূল চেতনায় আঘাত করেছিলেন। স্বাধীনতাবিরোধীদের বিচার না করে এবং পশ্চিম পাকিস্তানফেরত সেনা সদস্যদের সেনাবাহিনীতে আত্মীকরন করে তিনি চরম ভুল করেছিলেন।
সেই ভুলের মাসুল তাঁকে দিতে হয়েছে সপরিবারে আর বাংলাদেশকে দিতে হচ্ছে অদ্যাবধি। পঁচাত্তরে বঙ্গবন্ধুকে সপরিবারে হত্যার পর তাঁরই রাজনৈতিক সহযোদ্ধা যারা চরম ডানপন্থী হিসেবে পরিচিত তারা সামরিক সহযোগিতায় রাষ্ট্রের ক্ষমতা দখল করে। জাতীয় চারনেতাকে জেলের ভেতর হত্যার মধ্য দিয়ে তারা স্বাধীনতা বিরোধী শক্তির সমাবেশ ঘটিয়ে রাষ্ট্রক্ষমতা কুক্ষিগত করে। এক্ষেত্রে তারা মেজর জিয়াকে ব্যবহার করে এবং অতিবিপ্লবী জাসদকে তুরুপের তাস হিসেবে ব্যবহার করে। কিন্তু আখেরে চরম ডানপন্থীরাই নানান আলখেল্লা পরে দেশের সর্বেসর্বা হয়ে ওঠে। জিয়াউর রহমান রাজাকার আলবদর আর আলশামসের ঘাতকদের রাজনীতিতে পুনরুজ্জীবিত করে দেশে খুন, সন্ত্রাস ও লুটপাটের রাজনীতি বলবৎ করে। জিয়ার জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের ছত্রছায়ায় দেশব্যাপী কলেজ বিশ্ববিদ্যালয়ে স্বাধীনতার চরমশত্রু ও পাকহানাদারদের এদেশীয় হায়েনার দল জামাতের নৃশংস খুনী ইসলামী ছাত্রসংঘকে ইসলামী ছাত্রশিবির নাম দিয়ে ছড়িয়ে দেয়া হয়। শিবির দেশিব্যাপী মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের সকল রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মীদের উপর হামলে পড়ে। রগকাটা আর গলাকাটার রক্তের হোলিতে মেতে ওঠে হায়েনার দল। মুক্তিযুদ্ধের সকল অর্জনকে জিয়াউর রহমান পদদলিত করে ত্রিশলাখ শহীদের রক্তে অর্জিত বাংলাদেশকে পাকিস্তানী ধারায় নিয়ে যায়।
১৯৮১ সালে জিয়াউর রহমান চট্টগ্রাম সার্কিট হাউসে নৃশংসভাবে খুন হলে পাকিস্তানফেরত জেনারেল এরশাদ ক্ষমতা কুক্ষিগত করে। দীর্ঘ দশ বছর জেনারেল এরশাদ বাংলাদেশকে ভেতর থেকে খোলনলচে বদলে ফেলে। প্রশাসনের সর্বস্তরে স্বাধীনতাবিরোধী মৌলবাদী শক্তির দৌরাত্ম্য বেড়ে যায় এবং ইসলামকে রাষ্ট্রধর্ম ঘোষণা করে মুক্তিযুদ্ধের চেতনার কফিনে শেষ পেরেক মেরে দেন। বঙ্গবন্ধু ও জিয়ার দল ক্ষমতার জন্যে সামরিক শাসনবিরোধী আন্দোলনে সামিল হলে বামপন্থী ও মৌলবাদী দলগুলোও তাতে যোগ দেয়। ১৫ দল ও ৭ দলীয় জোটের আন্দোলনে এরশাদের পতন হলেও ১৯৯১ সালের নির্বাচনে মুক্তিযুদ্ধের পক্ষশক্তির ভরাডুবি ঘটে। জিয়াউর রহমানের জাতীয়তাবাদী দল যুদ্ধাপরাধী জামাতকে নিয়ে ক্ষমতা দখল করে এবং দেশব্যাপী মুক্তিযুদ্ধের পক্ষশক্তি ও সংখ্যালঘু জনগোষ্ঠীর উপর নেমে আসে নির্যাতনের স্টীমরোলার। বাংলাদেশ সম্পূর্ণভাবে মুক্তিযুদ্ধবিরোধীদের দখলে যায় এবং লুটপাট, দুর্নীতির মাধ্যমে কয়েক লক্ষ ভুঁইফোড় ধনীর জন্ম হয়। দেশে লুটেরা পুঁজির দৌরাত্ম্য ভয়াবহ আকার ধারণ করে।
১৯৯৬ শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আওয়ামীলীগ ক্ষমতায় এলেও রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিকভাবে বাংলাদেশে সঠিক পথে আনার কোন অবকাশ পায় নি এবং ২০০১ সালে বিএনপি-জামাত পুনরায় ক্ষমতা কুক্ষিগত করে দেশকে পাকিস্তানী ধারাতেই ধরে রাখে।
২০০৫ সালে আওয়ামীলীগ ক্ষমতায় আসীন হয়। যুদ্ধাপরাধীদের বিচার ও বাংলা ভাই বাহিনী দমনের ভেতর দিয়ে আওয়ামীলীগ দেশবাসীর অকুন্ঠ সমর্থন লাভ করে। কিন্তু ক্রমশ আওয়ামীলীগ নিজেদের রাজনৈতিক অবস্থান বদলাতে শুরু করে। সুপরিকল্পিত ভাবে আওয়ামীলীগ হেফাজতে ইসলামকে দিয়ে মতিঝিলে তান্ডব সৃষ্টির পর থেকে আওয়ামী লীগের রাজনৈতিক অবস্থান পরিবর্তন পরিষ্কার হতে শুরু করে। বিশেষত: রাষ্ট্রধর্ম হিসেবে ইসলামকে বলবৎ রাখার মাধ্যমে আওয়ামী লীগের ইসলামী মৌলবাদীদের সাথে গোপন আঁতাতের বিষয়টি সামনে চলে আসে। এরপর পাঠ্যসূচীর সাম্প্রদায়িকীকরণ, পহেলা বৈশাখের শোভাযাত্রায় ছাত্রলীগের নৃশংসতা, মুক্তমনা ও ব্লগারদের হত্যায় ক্ষমতাসীনদের হত্যাকারীদের পক্ষাবলম্বন, দেশব্যাপী সংখ্যালঘু সম্প্রদায় সমূহের উপর হামলা, বিনা নির্বাচনে ক্ষমতা কুক্ষিগত করা, রাজনৈতিক সভা-সমাবেশে লাঠিয়াল বাহিনী, অবাধে ব্যাংক, জাতীয় সম্পদ লুটপাট ও বিদেশে পাচার, সর্বোপরি দেশকে এক গণতন্ত্রহীন সিভিল স্বৈরাচারী শেকলে আবদ্ধ করে মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে অবমাননা করা হচ্ছে। শুধু কি জয়বাংলা স্লোগান দিলেই মুক্তিযুদ্ধের চেতনার বাস্তবায়ন হয়ে যাবে? গণতন্ত্র, সমাজতন্ত্র, ধর্মনিরপেক্ষতা ও বাঙালী জাতীয়তাবাদ থেকে বাংলাদেশ হয়ে উঠেছে লুটেরা ও শোষকগোষ্ঠীর ভয়ঙ্কর কার্টেল।
জিয়া, এরশাদ কিংবা খালেদা জিয়ার হাতে স্বাধীনতা নিরাপদ ছিলো না কারণ তারা ছিলো প্রকাশিতভাবে মুক্তিযুদ্ধবিরোধী শক্তির ক্রীড়নক। কিন্তু শেখ হাসিনার নেতৃত্বে মৌলবাদী শক্তির সাথে গোপন আঁতাত আর সাথে ভয়ংকর লুটেরা দুর্বৃত্তচক্র এবং অসৎ রাজনৈতিক সিন্ডিকেটের হাতের ক্রীড়নক হয়ে মুক্তিযুদ্ধের বাংলাদেশ কি নিরাপদ থাকবে?
বিজয়ের ৫০ বছরের জাঁকজমকপূর্ণ অনুষ্ঠান ও চরম স্তাবকতার ধোঁয়াশা সরিয়ে পরিষ্কার চোখে আগামীর পথরেখা দেখে নেয়াটা অত্যন্ত জরুরী মনে করি।