You are currently viewing দু’টি কবিতা> হেলাল মহিদীন

দু’টি কবিতা> হেলাল মহিদীন

দু’টি কবিতা> হেলাল মহিদীন

 

জাদুঘরপরস্পর

জাদুঘর দেখতে বেরিয়েছিল দুনিয়ার দুই প্রান্তের দুই হোমোস্যাপিয়েন। দেখেছে ল্যুভ, হার্মিটেইজ, অ্যাক্রোপলিস, স্মিথসোনিয়ান, প্যার্গামন, অ্যাক্যাদ্যেম্যা, গুগেনহ্যেইম।

জেনেছে মানুষ চোখ রাখতে শিখে গেছে ব্ল্যাকহোলে, অতলান্ত অতল পাতালে; কাঁকড়াবিছের হাঁড়েগোঁড়ে। দেখেছিল মিলিয়ন বয়সী গুহাগাত্রে অংকিত যুদ্ধ দৃশ্য পেট্রোগ্লিফ। বরফ যুগের প্রণয়াবদ্ধ পিঁপড়া ফসিল। দেখেছে অতি-আধুনিক ফরেন্সিক বিপ্লব, সিমুলেশন। আকাশের পর্দায় লেজারে বিচ্ছুরিত জম্বি অ্যাপোক্যালিপ্স। মমি-কফিনের মায়াযাদু ঠেলে উঠে আসা প্রেমাবিষ্ট ফারাও, তুতেনখেমেন।

তবু তারা জেনে গেছে জাদুগৃহ কিছু নয়, ফসিলে-মমিতে-কেমিক্যালে নিছকই কূহক! কোনো জাদুঘরে মিলেছে কি সময়ের মমি? ফসিলায়িত আকুলিবিকুলি? খোদিত অভাব? স্পর্শ-অধীর প্রতীক্ষাঝড়, জ্বরজ্বর কষ্টবিন্যস্ত অশ্রুকণা, পলল খোয়াব? কিউবে টিউবে ভিনেইগারে সুরক্ষিত দীর্ঘশ্বাস, মেঘপদ্য-এলোচুল, প্রণয়-অভিমান, মনোছবি, স্মৃতিকথা হিরোগ্লিফস?

উত্তর খুঁজে কেটে গেছে অজস্র প্রহর। তারপর একদিন এক জাদুঘরে কাকতালে দেখা পেল পরস্পর। আদম খুঁজল হাওয়ার গহীন, হাওয়াও দেখল আদমের অন্দর।  দু’চোখেই সুরক্ষিত সময়ের মমি, ফসিলায়িত আকুলিবিকুলি, অপূর্ণ-অভাব; স্পর্শ-অধীর প্রতীক্ষাঝড়, জ্বরজ্বর কষ্টবিন্যস্ত অশ্রুকণা, পলল খোয়াব; কিউবে টিউবে দূরাগত দীর্ঘশ্বাস, মেঘপদ্য এলোচুল, প্রণয়-অভিমান, মনোছবি, স্মৃতিকথা হিরোগ্লিফ রেলি্কস।

হাওয়াই আসলে আদমের জাদুঘর, আদম ও হাওয়ার অনন্য জাদুনগর!

 

 

বনছাদ

বিগত যুগের দূরপদ্য-এঁটোবৃষ্টি বনছবি

এলোচুলে আটকে রাখতে জেনেছে যে নারী

তাকে কবি চেনে ও চিনেছে, জানে ও জেনেছে—

সে কোনো রমণী নয়, সে বিপুলা বনছাদ

চিরহরিদ্রা বনাণী-নিসর্গ, পৃথূলা ক্যানোপি!