দু’টি কবিতা
মেহেনাজ মুস্তারিন
চন্দ্রগ্রহন
পড়ে আছি শূন্যতায়, কেউ নেই পাশে
জোছনা যা ছিল চুরি হয়ে গেছে আমার অজান্তে,
লাল পিঁপড়ার দল হেঁটে চলে গেছে, তাদের অরুচি
এই শরীরে! বাতাসও পাশ কাটিয়ে যায়, কোন
গন্ধ নেই বলে সেও আবেগহীন! হায় জীবন!
তার কাছে আমার কোন দাবি ছিল না; মরনের কাছে
যে দাবি রেখে যাবো, সে ইচ্ছেটাও মরে গেছে! জানি আছে
কারো কারো আজব এক অহংকার; শূন্যেরও অহংকার থাকে,
আমার বেলায় সেও দেখি কৃপন!
শুধু মন, আমার বোকা মন,
এক আজব নিরবতায়
কারো ফিরে আসবার পথের দিকে চেয়ে থাকে।
******************************
নিঃসঙ্গ আকাশ
মনের ক্ষতগুলো রক্তের সাথে লেপ্টে আছে!
কী যেন লিখে! কী নিয়ে যেন আঁকিবুঁকি খেলে!
হৃদয়ের দীর্ঘশ্বাস সমুদ্রের নোনাজলে
ডুব দিয়ে যায় কিছুক্ষণ পরপর, তারপর
ঢেউয়ের সাথে উথাল-পাথাল খেলা করে!
এসে দেখে যাও!
স্বপ্নগুলো নিশুতি রাতে চুপিচুপি
কথা বলে দেয়ালে লেপ্টে থাকা টিকটিকির সাথে!
ওরা নড়ে না, চড়ে না!
বাকহীন ছন্দে দোলে না!
শুধু রকিং চেয়ার দুলতে থাকে শব্দহীন ছন্দে!
এসে দেখে যাও!
অভিযোগ, অনুযোগ চাওয়া পাওয়া সব
দ্রোহের অনুভূতিতে বন্দী! যেন জীর্ণ বাড়ীতে
লুকিয়ে থাকা অজানা সব গল্প শ্রোতার অপেক্ষায়
বসে আছে! কবে আসবে মেঘ! কবে মাধবীলতার শুকনো পাতায়
শ্রাবণের অশ্রু হয়ে ঝরে পড়বে অঝোরে!
এসে দেখে যাও!
এসে দেখে যাও!
চেনা গল্প কেমন অচেনা! আগের মতো তারা রঙ মাখে না!
বর্ণালী সময় ধূসর রঙে মোড়ানো!
মনের কোনায় কোনায় খুঁজে চলি পরিচিত সেই ঘ্রাণ!
ভালোলাগার সেই উজ্জ্বল মিষ্টি মুহূর্ত!
এসে দেখে যাও!
ছায়ার গভীরে আবছায়া কীভাবে খুঁজে চলে নিজেকে!
সমুদ্রের অতল থেকে সাহসী ডুবুরি রত্ন তুলে আনে! মনের টানে!
আমার মনের হাহাকার নিঃসঙ্গতার আড়ালে দোলা দিয়ে যায়,
অনন্ত চিন্তা স্থির! শুধু তারাগুলো জেগে আছে
কারো অপেক্ষায়!
==================