দুইটি কবিতা || সুমন শামসুদ্দিন
দুঃখনদী
পলক ফেলে তাকায় হেসে দুঃখ-আঁখি,
দিগবলয়ে ডানা মেলে দুঃখপাখি।
নিদ্রাবিহীন রাতের শেষে দুঃখভোরে-
আত্মভোলা গোপন-পাখি একলা ওড়ে।
এক-দিগন্ত দুঃখ বুকে দুঃখরাতে
দহন-ক্ষত হৃদয় পোড়ে অন্ধপ্রাতে।
পান্থনিবাস খাঁ খাঁ করে শূন্য দুপুর,
উদাস সুরে ভ্রষ্ট নাচে দুঃখনূপুর।
কামনাহীন দুঃখ-বিকেল মলিন-আকাশ,
থমথমে গাছ স্তব্ধ পাতা ভারী বাতাস;
দুঃখ-সাঁঝে রক্তপাতে দিগন্ত লাল,
বিষাদ-প্রেমে কাঙ্খিত-রাত হারায় যে তাল।
জলসা-ঘরের তানপুরাটা বাজছে না আর,
নিনাদ-বিহীন বেহালাটার নেই কোনো তার!
কৃষ্ণচূড়ার ফুলগুলো সব রুক্ষ ঊষর,
জোছনা বিহীন দুঃখ-চাঁদের বর্ণ ধূসর।
আয়ুষ্কালের উল্টোপিঠে সূক্ষ্ম-ক্ষতি,
অলক্ষিত দুঃখনদীর বিধুর গতি।
সুন্দরতা
সুন্দর তুমি হেঁটে যাও এই স্তব্ধ রাতের ঘোরে,
আঁধারের গান সুরেলা নৃত্যে মৃদুছায়া হয়ে ওড়ে।
কবিতার পাতা জেগে থাকে সাথে দীপ্তভাষ্য কাব্য
মায়াময় রঙে গভীর রাগিনী সুরভিত প্রাণ নাব্য।
ইচ্ছের বীজ উদ্গত হয় সুন্দরতার আশে,
নিশি হেঁটে আসা ছায়াবিথী পথে চমকিত চারু ভাসে।
ঐন্দ্রজালিক নিঃশব্দতা সঞ্চরণের কায়া,
শূন্যহৃদয়ে খুঁজে ফিরি রাতে চারুতার মিহি মায়া।
বাতাসের কানে মেঘবাতায়নে উদারগগন পটে,
গিরিধারা পথে শোভিতকাননে আদিমসিন্ধু তটে,
নিখিলপ্রান্ত খুঁজিতে শ্রান্ত হারিয়েছি আজ দিশা,
যত ছুঁতে চাই পিছে সরে যায় ছায়াবৃত ক্ষীণ তৃষা।
সুন্দর সদা ব্যাপৃত ভূমে চিত্তমনন চিত্র,
অভিনিবেশিত তৃষ্ণা বিহীন হয়না শোভন মিত্র।
——————————-