দুইটি কবিতা || রেজা শামীম
ঈশ্বরের বুক রিভিও
ঈশ্বরের এই বইটি একদম যাচ্ছেতাই।
হয়তো তাড়াহুড়া ছিলো তাঁর, অথবা তাচ্ছিল্য।
‘মিলন’ এর চার ফর্মা’র উপন্যাসের মত
হয়তো তিনিও একটানে লিখেছেন গল্পটা।
অজস্র বানান ভুল, বাক্যগুলো অসমাপ্ত
সুখ বানানে দিয়েছেন তালেব্য শ,
উচ্চারন সুখের মত হলেও আদতে তা সুখ নয়।
দু:খ শব্দটি রেখেছেন আবার মাত্রা ছাড়া।
কোথাও কোন যতি চিহ্ন নেই;
বই খুললেই তাই শব্দগুলো হেলে পড়ে এদিক সেদিক।
পাঠক আঁটকে থাকবে এমন কোন বাঁক নেই গল্পে
নিরাভরণ ন্যারেটিভ নিতান্তই এক ঘেয়ে।
তাঁর অসংখ্য ক্লাসিক ও জনপ্রিয় বই এর ভেতর
স্যান্ডুইচ এর চিজ এর মত চ্যাপ্টা হয়ে থাকে এই বই
কেউ কেউ টেনে নেয় হাতে, দু’পাতা উল্টায়
তারপর সময়ের অপচয় অপবাদে রেখে চলে যায়।
ঈশ্বর এর এই বইটি অচল, কেউ পড়েনি, কেউ পড়েনা …
মৃত্যুর মেনু-বুক
যে রেস্তোরাটিতে আমি এলাম তার মালিক স্বয়ং ঈশ্বর।
ভেতরে এক পৃথিবী মানুষের ভীড়।
প্রবেশপথের দীর্ঘ লাইন ঠেলে যখন সামনে এলাম,
রিসিপশনে দেবদূত আমাকে জানায় অভ্যর্থনা।
পরনে তার শুভ্র আলখেল্লা, পিঠে পাখির ডানা।
আমাকে সাদরে টেবিলে বসিয়ে হাতে তুলে দেয় মৃত্যুর মেনু-বুক।
পুরু কালো মলাটের ভেতরের পাতায় পাতায় সারি সারি মৃত্যুর নাম।
জলজ মৃত্যু, ঝলসানো মৃত্যু,
ঘরের মৃত্যু, বাইরের মৃত্যু,
একলা মৃত্যু, গণমৃত্যু,
স্বেচ্ছা মৃত্যু, অতর্কিত মৃত্যু।
অসংখ্য বিচিত্র এই তালিকা থেকে
আমি নিজের জন্যে বেছে নেই একটা সাদামাটা মৃত্যু,
আর ‘পানীয়’ হিসাবে চাই কারো ক’ফোটা চোখের জল।
দেবদূত মেনু-বুক গুটিয়ে চলে যায়
আমাকে এক জীবন অপেক্ষায় রেখে …
********************