You are currently viewing দরজার কোণে || মোহাম্মদ কাজী মামুন

দরজার কোণে || মোহাম্মদ কাজী মামুন

দরজার কোণে

মোহাম্মদ কাজী মামুন

(১) পিঠ

এই নিয়ে ৩য় বার এল, আর দাঁড়িয়ে থাকল দরজার কোণাটা ধরে। আমি যখন একবার তাকিয়ে চোখটা আবার বইতে নিবদ্ধ করলাম, তখন সে ৩য়বারের মত চলে গেল। আমি জানি, শামুককে এখন একটুও আস্কারা দেয়া যাবে না। আমার যে তাকে নিয়ে একটু গড়াগড়ি খেলতে ইচ্ছে করছে না, তা না। কিন্তু জানি একবার তার খাঁচার ধারে কাছে গেলেই আর ছাড়া পাওয়ার উপায় থাকবে না। সে হাত দুটো বাড়িয়ে টেনে ধরবে, ছাড়াতে গেলে চিৎকার, চেচাঁমেচি ছাড়াও আমার শরীর ক্ষতবিক্ষত করবে, সঙ্গে মনও!

ইদানিং তো তার ফুটবল খেলার নেশা ধরেছে। ঘরে ঢুকলেই সে আমায় দাঁড় করিয়ে দেবে তার ড্রইয়িং রুমের পর্দার স্ট্যান্ডে, তারপর সোফাটার প্রান্তে চলে গিয়ে একটা জোরাল কিক করবে। আমাকে তখন বলটা গড়িয়ে দিতে হবে পালটা কিক করে। এই করে সারাটাদিন ধরে তার সঙ্গে কাটিয়ে দিতে হবে, যেন আর কোন কাজ নেই আমার! আমার যেন জন্ম হয়েছে তার বল প্র্যাকটিসের পার্টনার হতে!

আমার পুরো বডিটাকে সে একটা স্বাধীন প্লেগ্রাউন্ড বানিয়ে ফেলেছিল, ওদিক আমি এক অথর্ব পরাধীন প্রাণীতে পরিণত হচ্ছিলাম দিন দিন! এইতো সেদিন একটুখানি কাঁধে উঠিয়ে দেয়ালে ঝুলে থাকা টিকটিক ঘড়িটাকে ধরতে দিয়েছিলাম, আর সে আচ্ছা করে ঘড়ির আয়নাটা ঝাঁকিয়েছিল, তা আর কেউ করতে দিত? এ জন্য ওর মা কি বকাটাই না দিল আমায়! শামুকের সব থেকে অদ্ভুত বিষয় হল, এই বয়সেই বিচ্ছুগিরি শিখে গেছে। এখনো কথা বলতে শেখেনি, কিন্তু ডজে পারদর্শী হয়ে উঠেছেন তিনি। আমি ল্যাপটপে কাজ করছিলাম এক দুপুরে, আর সে অলোবলো করতে করতে ঘুরঘুর করছিল আমার পাশে। আমার গলায় গলা, কাঁধে কাঁধ মেশাচ্ছিল, আর মাম মাম করছিল। ভাবলাম, এত করে ঘুরছে, একটুখানি রাইমস দেখিয়ে আনি। ওমা, যেই না বসিয়েছি হাঁটুটার উপর, সে পুরো দখলে নিয়ে নিল মনিটর, আর কিবোর্ডটা। প্রথম থেকেই ল্যাপটপটাই ছিল তার টার্গেট, কিন্তু কিচ্ছু বুঝতে দেয়নি আমায়। আরেকটু হলে মেরেই ফেলেছিল আমার এত দামি অষ্টপ্রহরের সঙ্গীটাকে। সঙ্গে সঙ্গে ওর বাবার কোলে দিয়ে এসেছিলাম, কিন্তু ব্যাপারটা সহজ হয়নি মোটেই, সে ঘাড়টা কাত করে এমন করে ডিগবাজি খেল শূন্যে! প্রবল আতঙ্কে ওকে আমি সর্বশক্তি দিয়ে হুড়মুড় করে ধরে ফেলি, আর সে সুবোধতম শিশুর মত আমার ঘাড়ে মাথা রেখে পোকা হয়ে পড়ে থাকল। তারপর থেকে লাই দিতে দিতেও শেষ মুহূর্তে সাবধান হয়ে যাই আমি, সরে থাকার সুযোগ খুঁজতে থাকি সব সময়।

আমার এই সতর্কতা কাজে দিল খুব, সে ঘরের ভেতর আর এল না, কোণেই দাঁড়াতে লাগলো শুধু। প্রথমে বারবার, তারপর একবার দুবার করে, তারপর শূন্যবার। এমনি কিছুদিন চলে যাওয়ার পর বাসার সামনের লনে মায়ের সাথে হাঁটতে দেখে একদিন উপরের বারান্দা থেকে দেখে ডাকলাম ওকে। সে তাকাল, কিন্তু চিনতে পারলো না মনে হয়। আমার বুকে ধাক্কা লাগলো, না, অপমান, ঠিক বলতে পারবো না। তবে এটুকু মনে আছে, আমি ছুটে গিয়ে জোর করে জাপটে ধরতে গিয়েছিলাম, কিন্তু সে এমন চিৎকার করল যেন জমবি দেখছে চোখের সামনে!

তাহলে আমার ভাগ্নেটা কি তার একমাত্র মামাকে ভুলেই গেল? না, কারণ, অল্পদিনেই সে বড় হয়ে গেল আরো, আর আমায় খুব সঠিক উচ্চারণে মামা বলতে পারলো। তখন সে স্কুলেও ভর্তি হয়েছে, আর ক্লাস ওয়ানের বইব্যাগ নিয়ে স্কুল কোচে উঠতে শিখেছে।

একদিন সে স্কুল ছুটির পরে মাঠে খেলছিল। আর সেদিন তার কোচোয়ান জ্বর বাঁধিয়ে বাসায় বসে কাতরাচ্ছিল! তো তাকে বাসায় নিয়ে আসার ভার পড়েছিল আমার উপর, আর খুশী মনেই তা গ্রহণ করেছিলাম, মাঝেমধ্যে এক দু টুকরো দায়িত্ব পালন না করলে হয়! শামুক খেলায় এত নিমগ্ন ছিল যে আমায় দেখেইনি। আমি চিৎকার করে ডাকলে হুঁশ ফেরে তার; যে গতিতে এসেছিল, ভেবেছিলাম আমার সাথে একটা ধাক্কা খাবে, আর আমায় পেঁচিয়ে ধরে মুখখানা পুরো গুঁজে দেবে শার্টে। কিন্তু সে আমার থেকে এক হাত দূরে থেমে গেল, আর চুপচাপ দাঁড়িয়ে থাকল।

ধাক্কার ধাক্কাটা কেটে গেলে তাকে একটা সুখবর দেই আমি, “জানিস শামুক, তোর জন্য ফিফা ফুটবল কিনেছি একটা, ব্যাগ গোছা তাত্তারি, দেখব আজ তুই আমায় হারাতে পারিস কিনা, মেসির মত ডজ দিয়ে গোল করতে পারিস কিনা!” এরপর সে জোরে নিঃশ্বাস নিতে নিতে “থ্যাংক্স, মামা” বলে বন্ধুদের মাঝে মিলিয়ে গেল!

আমি ওর পিঠটাই শুধু দেখতে পাচ্ছিলাম বিশাল মাঠটার মধ্যে, যেখানে ধুলো আর বাতাসের তোড়ে এক বিন্দু ফোঁটায় পরিণত হয়েছিল সে!

(২) নিয়ম ও বিষ্মরণ

আমি খুব গুরুত্বপূর্ণ একটা কাজ করছিলাম, একটা অ্যাসাইনমেন্ট, এর সাথে জড়িয়ে আছে আমার ক্যারিয়ার। হঠাৎ দেখি বাবা এসে দাঁড়িয়েছে দরজার কোণে। যতটা না মনযোগ বিঘ্নিত হল, তার থেকে বেশী ভয় হতে লাগলো। যে জিনিসগুলি মাথায় ছিল, তা আবার ভুলে যাব না তো? বাবার দিকে তাকালে, তিনি তার ঘোলা চোখ আর ঝোলা নাকটা বাড়িয়ে দিয়ে জানতে চাইলেন, আমি আমার পরিচিত ইঞ্জিনিয়ারকে গাঁয়ের রাস্তাটার কথা বলেছি কিনা। আমি গাঁয়ে যাই না, এমনকি ঈদের সময়েও না। কিন্তু বাবা যান বছরে এক-দুবার, আর খোঁজখবর রাখেন সহস্রবার। তো সেই রাস্তাটার ব্যাপারে আমায় উদ্বিগ্ন হতেই হবে, কারণ বাবা যে উদ্বিগ্ন!

গত বেশ কিছুদিন যাবত এই করে কাটাচ্ছেন। অহেতু ও অর্থহীণ কাজ ও কথার কারবার! তার সময় আছে, করতেই পারেন, বারণ করছে কেউ? কিন্ত আমায় কেন? আমি ভীষন ক্ষোভে ফুঁসে উঠতে যেয়েও সামলে নেই। এরপর গুনাহের ভয়ে দোয়া দরুদ পড়ে পরিস্থিতিটা যতই কাটানোর চেষ্টা করি, ততই আরো বেশী করে ক্ষতবিক্ষত হই নিজের মধ্যে। অথচ বাবা এই অন্তর্লীন ঝড়ের খবর কমই রাখেন, বায়ু ঘন ও গরম হয়ে উঠতে দেখলেও পাঠোদ্ধার তার পক্ষে সম্ভব হয় না। এই তো সেদিন ডিসের বিল দেয়ার সময় কেন আমি চেপে ধরলাম না সার্ভিসম্যানকে, ভাল সার্ভিস দিচ্ছে না জেনেও বিলটা আটকে দিলাম না কেন, তা নিয়ে অনেকক্ষণ নসিহত করলেন। আমার ড্রাইভারটা, ডাক্তারটা ভাল নয়। বোনের বাসায় অনেকদিন হল যাচ্ছি না কেন? এসব বিষয় ছাড়াও রাজনৈতিক মত বিনিময়ও রয়েছে। সেদিন আমার ঘরে এসে প্রথমে সাবধানে থাকার পরামর্শ প্রদান করলেন, দিনকাল ভাল যাচ্ছে না মোটেই। কিন্তু এরপরেই শুরু করলেন রাজনীতির সাত কাহন। তার একটি প্রিয় দল রয়েছে, তার পক্ষের যুক্তিগুলো নিয়ে তিনি পত্রিকায় একটা প্রবন্ধ পড়তেই পারেন, কিন্তু তাও আমাকে দেখাতে আর শোনাতে হবে? আমার কি তবে ভুল হয়েছে নিজের কাজ ফেলে তার জন্য উঠে দাঁড়িয়ে পাশে বসানো, আর কথাটা মনোযোগ দিয়ে শোনার ভান করা? আমার রক্তক্ষরণ চলতেই থাকবে, আর তিনি তার গল্পগুলো বলতেই থাকবেন।

বাবার বেশীর ভাগ কথার জবাব দেই না আমি, অথবা, হে হে, তাই তো, তাই তো করি। কখন উত্তর এড়ানো না গেলে আর বড় হয়ে গেলে তাড়াহুড়োর একটা টোন সেট করে নেই। এত কিছুর পরেও বাবাকে যে আমি সহ্য করি না, বা, তার জন্য যে কিছু করি না, বা, তার কোন দায়িত্ব মাথায় নেই না, তা কিন্তু না! তার ঔষুধপত্র তো আমি কিনে নিয়ে আসি, পোশাকটা কিনে দেয়া, লন্ড্রি থেকে ইস্ত্রি করে আনা, তার হাস্পাতালে থাকার সময় রাত জাগা। তার ইহকালিন সুখ স্বাচ্ছন্দ্যের জন্য যা দরকার তা করার পাশাপাশি, তাকে তো হজ্বও করিয়ে এনেছি, তার পরকালের জন্যও তো রাখিনি কোন ফাঁক। এছাড়া তার হাতে প্রতি মাসেই তুলে দিচ্ছি বেশ কিছু টাকা, যা দিয়ে তার আশা-আকাংখা, চাওয়া-পাওয়া সব পূরণ হয়ে যাওয়ার কথা। কিন্তু আমার নিস্তার নেই! আমি রেহাই পাই না। আমার মধ্যে এক সময় অগ্নুৎপাত ঘটে, বহুদিনের সঞ্চিত ক্ষরণ উদগীরণ হতে শুরু করে, আর সম্পূর্ন তুচ্ছ একটা কারণে তার সাথে রাগারাগি করি। হয়েছিল কি, সে এই কনকনে শীতের মধ্যে বাজারে যেতে চেয়েছিল, আমি তার সাথে লোক দিতে চাইলে সে গলা খাঁকারি দিয়ে উঠে, সে না কি একা একাই যেতে পারবে, আমরা যতই তাকে বাতিলের খাতায় ফেলে দিতে চেষ্টা করি না, সে এখনো শক্ত আছে! তখন আমি মুখ ফস্কে বলে ফেলি, “হ্যাঁ, সে তো তুমি যেতেই পারবে, কিন্তু তারপর যে অসুখটা বাঁধাবে, তার জন্য লাখ দুয়েক টাকা খরচ করাবে।“

এরপর বাবা আর কথা বলতেন না, ঘেঁষতেনও না কাছে খুব একটা। আর দরজার কোণে কারনে অকারনে এসে দাঁড়াতেন না। একপ্রকার খুশীই হলাম আমি, দাপিয়ে দাপিয়ে আমার কাজকর্ম আর প্রাইভেট লাইফ উপভোগ করতে লাগলাম। এরই মাঝে একদিন বাবা হঠাৎ অসুস্থ হলেন আর হাসপাতালে ভর্তি হলেন। তবে এটা ছিল একান্তই রুটিন একটা ব্যাপার, এর আগেও বাবা ভর্তি হয়েছেন আর নিয়ম করে সাতদিনের মাথায় ফিরে এসেছেন। এবারও তেমনি ফিরবেন নিশ্চিত, তাই তো আলাদা কোন আদর-যত্ন-সেবার চিন্তা মাথায় আসেনি আমার।

বাবা হাসপাতালে থাকতেই একটা বড় প্রমোশান হয়ে গেছে আমার, অফিসের অনেক বড় পদে আসীন হয়েছি আমি। একইদিনে ইঞ্জিনিয়ারের সাথেও দেখা হয়ে যায় আমার, আর গাঁয়ের রাস্তার কাজটা নিশ্চিত করে আসি। দু দুটো গরম খবর বাবার জন্য, আমার আর তর সইছিল না, দৌড়ে বাসায় যেয়ে বাবার ঘরে ঢুকি! কিন্তু ঘরটা খালি ছিল!

প্রবল একটা উত্তেজনা আমায় আপাদমস্তক গিলে নিয়েছিল সম্ভবত! ইতোমধ্যে যে সাত দিন পার হয়ে গিয়েছিল আর বাবা যে হাসপাতাল থেকে ফেরেননি – পুরো বিষয়টাই ভুলে গিয়েছিলাম আমি!

(৩) বড়-ছোট

বাবা বারবার রিমোট লুকোচ্ছেন, এ পর্যন্ত পাঁচবার রিমোট ভেঙ্গেছে শামুক। বাবা বিড়বিড় করতে থাকেন, ‘কবে যে বড় হবে বিচ্ছুটা!”

ওদিকে শামুক বারবার দৌড়ে বাবার কাঁধে উঠে পড়তে চাইছে, কিন্তু নাগাল পাচ্ছে না। আজ দুপুর থেকেই তার মাথায় একটা ঝোঁক চেপেছে, ফলের খালি সাজিটা বাবার মাথায় পরিয়ে দেবে। এক সময় হতাশা জেগে উঠে তার অন্তরে, “কবে যে ছোট হবে নানাটা!”

(৪) অন্তরীণ

অনেকক্ষণ ধরে নিস্তেজ পড়ে ছিল, কোন সাড়াশব্দ পাওয়া যাচ্ছিল না তার, যখন ইউটিউবে থাকে, তখন এই অবস্থা ঘটে। এরই মাঝে হঠাৎ সে শব্দ করে উঠল, আর নানুর হাঁটুতে টোকা দিতে লাগলো, এরপর এক পর্যায়ে চিৎকার করতে শুরু করল।

নানা শুয়ে শুয়ে পত্রিকা পড়ছিল, কিন্তু তার মনোযোগ ভংগ হল প্রিয়ন্তির চিৎকারে না, বরং তার নানুর চিৎকার তাকে হাড়সুদ্ধ কাঁপিয়ে দিল। হাওয়াই মিঠাই পেতে পারে সে অনেক খুঁজে, যদিও এই সত্তর বছর বয়সে তার পক্ষে অতটা হাঁটা কষ্টকরই! কিন্তু আলমারি থেকে কয়েকখানা নোট প্রিয়ন্তির নানার হাতে গুঁজে দিয়ে যখন হাওয়াই মিঠাই বানানোর মেশিন কিনে আনতে বললেন, তখন কথা না বাড়িয়ে তিনি পাশ ফিরেছিলেন। আর যায় কোথায়! শুরু হয়ে গেল অশ্রাব্য ভাষণ আকাশ বাতাস ফাটিয়ে, “এমুন দুরমুইশা মানুষ দেখছো কোনখানে! একটা আস্ত সিমার! সারাডা জীবন জ্বালায় খাইল আমারে!”

দুদিন পর প্রিয়ন্তির নানা ঘরের বিছানা থেকে হাসপাতালের বিছানায় ট্রান্সফার হল। দুকুলে যত আত্মীয়স্বজন সবাই ভীড় করল হাসপাতালে। শুধু প্রিয়ন্তির নানিকে পাওয়া গেল না সেখানে। সে নিজেকে অন্তরীণ করে রেখেছিল বাসাটা আর তার মধ্যকার জায়নামাযটাতে। প্রিয়ন্তি অবশ্য মাঝে মাঝে দরজার কোণটাতে উঁকি মারত; কিন্তু হাওয়াই মিঠাই বানানোর মেশিনটা যে তার আর চাই না, তা জানানোর সুযোগ না পেয়ে কাঁদতে কাঁদতে ফিরতে হত তাকে।

(৫) আরো গল্প

আমি শেষ না করে মাঝপথেই ছুঁড়ে ফেলি হাতের বইটা, আর সে থপথপ শব্দ করতে করতে মেঝেয় পড়ে উলঙ্গ হয়ে, দরজার কোণটা ভেঙ্গেচুড়ে! এত জঘন্য হয় কিছু! পুরা বস্তাপঁচা! স্রেফ ফাজলামি পাঠকের সাথে, তাদের বোধ-বুদ্ধিকে অপমান করা!

বইটাতে শামুক, বাবা, প্রিয়ন্তি, আর তার নানা, নানুর আরো অনেক গল্প ছিল।

============================