তূয়া নূর
অন্য বেলা
সূর্য পড়েছে ঢলে
উঠোন থেকে আস্তে আস্তে যাচ্ছে রোদ সরে
লাল টালির ছাদে নরম পরশ
গাছ থেকে ঝরে পড়ছে পাতা
নেড়ে দেয়া শাড়ি বাতাসে উড়ছে এলোমেলো।
ছোটবেলায় ছাঁদে বসে বিকালে বিমূঢ় হয়ে এভাবে দেখতাম বিলিকাটা চুল ছুঁয়ে রোদের চলে যাওয়া।
পরের সময়ের জন্য
মাটির অনেক গভীরে একটা গ্রীন হাউস বানাও
সব ধরণের গাছ, ধানপাট খাদ্য শস্যের বীজ রেখো সেখানে।
সবার গুদামে জমানো আনবিক বোমা দিয়ে পৃথিবীটাকে হাজারবার ঝলসানো যাবে।
গাছ পালা মাটি পুড়ে হবে কয়লা।
কোন মানুষ যদি যায় সেই তাণ্ডব থেকে বেঁচে যায় সৌভাগ্যক্রমে?
সেই গাছ রোপন করে ডেকে আনবে সবুজ
নীল আকাশ, পানি ও বৃষ্টি।
মাটি নরম হলে ছড়িয়ে দেবে ধান, গম এ রবিশস্যের বীজ,
আবার শুরু হবে নতুন করে সভ্যতার।
নতুন করে জীবনঘাতি অস্ত্র বানাতে লাগবে কয়েক শ’ বছর,
ততোদিন অন্ততঃ শান্তিতে থাকবে পৃথিবী।
অন্যরকম সকালের অপেক্ষায়
আবার যদি সকাল হয় কখনো কোনদিন
রাত হতে দিও না এমন দীর্ঘতর একজীবনের সমান
এমন যে রাত যা অমাবশ্যার রাতের চেয়েও অন্ধকার
নৃশংসতায় পূর্ণ, সন্তান হারানো মায়ের কান্না
একা ঘরে দেয়াল ঘড়ির টিকটিক শব্দ
একজন শিশু যার বাবা আসি বলে আজো আসে নি
কিশোরী সে এখন বাবার ছবি পড়ার টেবিলে
বাতাসে পাতা ওড়ে, সেই খস খস শব্দ শুনে দৌড়ে আসে
বাবা তার আসবে ফিরে, তার বিশ্বাসে একটুও চিঁড় ধরে নি।
এই অন্ধকার ভরা শুধু ধোঁকায়
ইচ্ছেমতো খুনগুম আর মিথ্যাচার
পথ খুঁজে পাওয়া যায় না।
গাছ থেকে ঝুলে থাকা শরীর গায়ে এসে লাগে।
সকাল আসে না প্রতিদিন
যে সকাল জীবনের সমস্ত কিছু দিয়ে চাওয়া
যে সকাল জীবনের সব দুয়ার খুলে দেয়
যে সকাল রোদ হয়ে এসে জানলা দিয়ে শিশুর কপালে দেয় চুমু
এমন আলো ভরা বানভাসি সকাল যদি আসে কখনো কোনদিন
ধরে রেখো তাকে, রাতের কাছে পরাজিত হতে দিও না।
**************************