তিনটি কবিতা
সাজ্জাদ সাঈফ সরকার
স্বপ্ন
আমরা স্বপ্নকে নিয়ে বিপদেই আছি, তাকে ডান হাতে নিব নাকি বামে, কলিজায় নাকি হৃদয়ে, স্নায়ুপত্রালি নাকি খুলি ভরপুর, বিপদ ঘনিয়ে আসে, পাখিরা গণবিলুপ্তির আগে আগে দলছুট হয়, মৃত্যুকে বিপর্যয় মনে হয়।
এত শত গ্রাম ঝলমলে ড্রেস পরে নগরীর খ্যাতি পেলো আমাদের স্বপ্ন দেখা ফুরালো না, ওই নদীর উজান লক্ষ্য করে কত ক্লেশ গায়ে নিয়ে যে হারিয়ে গিয়েছে স্বপ্ন পূর্ণ হবার গল্প তা শুধু শ্রেণীসাম্যের নামে ধোকা খাওয়া মানুষ জানেন, চা-শ্রমিকেরা জানেন, শহীদজায়ারা জানেন!
কেউ দাবায়ে রাখতে পারবা না
আকাশ গুরুগম্ভীর
বাতাসে কে ধরালো চির?
তুমি বেহেশতে আছো ভাবতেই রেলঘুমটির গর্জনে শতাধিক ছিন্নমূলের কাচা ঘুম ভেঙ্গে যাচ্ছে সখী। আমাদের হাত আছে তর্জনী নাই। সুমধুর আবৃত্তি আছে, ওয়াজ আছে গর্জন যে আর নাই এ-কথা পাড়ার বৌ-ঝিরাও জানে।
অথচ নিউজ চ্যানেলের সামনে বসে দাঁত কিড়মিড় করে সরকারপক্ষরে আমরা কতই না গালাগাল দিই। দিনে দুপুরে মাথা নীচু করে অফিসে যাই। বাজারে যাই। কারখানায় যাই। পার্টি অফিসে হাত কচলাই। রাত যত বাড়ে টাউন হল ততই গরম ক্যাসিনো রয়েল।
আমরা বেহেশতে আছি হে স্বজাতি। কেউ দাবায়ে রাখতে পারবা না!
কবিতা
যেখানে থেমেছি আমি, খোলা আছে নদীর দুয়ার
কোমরে কলস বেঁকে, কুমারির হাসির জোয়ার!
এই সেই অনাদর ঘাট, পলি এনে শতাব্দী সাজালো
কোনো ক্রমে বেঁচে থাকা তার, বর্ষার ঢেউয়ে চমকালো!
এখানে পলির ধ্বনি, সারারাত স্রোতের আঁচড়
ঘুম পেয়ে মেঘেরও শিথিল, পেশি-দম, হাওয়া মন্থর;
যেখানে থেমেছি আজ, গতকাল এখানে ছিলাম?
যেন এক মাটির গহনা; আগজন্মে করেছি নিলাম!
মাটি এক শিশুকন্যা, কোলে ধরা মায়ের ভূমিকা!
কোনোদিন ভুসুকুপা আর মুকুন্দ রায়ের কবিতা
নির্জন পাকুড়তলা, পটে আঁকা গাঁয়ের মতন
আমি সেই নির্জনতা, বুকে নিয়ে একক জনম
এখানে কবিতা লিখি, বুকে ঢেউ মেঘনা সমান
একা নই চর্যা আছে, খনা ষড়ঋতু বাতলান!