তিনটি কবিতা
সাইফুল ভূঁইয়া
মর্ফিনের স্মৃতি
কাউকে বিদায় বলছি না
মরে-ও যাচ্ছি না
পৃথিবী পাল্টে যাচ্ছে, জল পালিয়ে যাচ্ছে, সমুদ্র যাচ্ছে হিমালয়ে
আমি কিছু করছি না…
হ্যালো বলছে টেলিফোন
ইনবক্স উপচে পড়ছে
জবাব দিচ্ছি না, শব্দ করছে দরজা, তেলাওয়াত হচ্ছে
নিঃশ্বাস বন্ধ হচ্ছে না…
চুল ঘুমাচ্ছে, হাত ঘুমাচ্ছে
ঘুমাচ্ছে স্বপ্ন, ঘুমাচ্ছে ঠোঁট
জেগে আছে স্তন, কিছুই বলছে না
তাঁকে ভালোবাসি না, সে জানে না…
ঘা আছে, ক্ষত আছে
রক্ত ঝড়ে পড়ে গেছে
গলে পড়ছে পুঁজ, লেপ্টে আছে ব্যথা
মোর্ফিনের স্মৃতি খুঁজে পাচ্ছি না…
জিতে যাচ্ছে কেউ
কেউ করছে আত্মসমর্পণ
জানালায় উঁকি দিচ্ছে, থুতু ফেলে নিজের নাম লিখছে
আমার স্বপ্ন হোটেলে ঘুমাচ্ছে, ডেকে তুলছে না কেউ…
পপিফুলের প্রেম
কথা বলছি কাবুল আর তালেবান
কুকুরের খাবার আর কাবাবের দাম নিয়ে
রুটি চোরের মাথায় ড্রোনের রং তুলি
পপিফুলের প্রেমের বুকে নিশানা একেঁছি
শামসিয়া হাসানি, তোমার বাড়িতে যাবো
আমাকে একেঁ ঝুলিয়ে রেখো দেয়ালে
আজকের আলোচ্য ভ্যাক্সিন আর হিজাব
একজনের দুই ঠোঁটের মাঝে সেফটিপিন
ঢাকার ইদুঁরেরা জানাজায় শরিক হয়
বার্সেলোনা কাঁদছে মেসির জন্য
তবুও বুঝতে পারে না কেউ
কত দূর চলে গেছে প্রেম!
আমিতো কান্দাহার যেতে চেয়েছি
ঢাকার পত্রিকায় অফিস করে কবি-ক্রীতদাস
ছায়াগুলোর গলায় গলায় বাঁধা শেকল
যদিও এক বিপাশা প্রেম ফেলে চলে গেছে সাজেক
তবুও তার জন্য কিনে রাখলাম চাঁদ ১৫ শতক।
ঘুমন্ত মুখে টেলিভিশনের আলো
পাশাপাশি হাঁটছি।
আমাদের হাতে কোনো হাত নেই
আমাদের ঠোঁটে নেই কোনো গল্প
আমরা ভাবছি আমাদের মায়েদের কথা।
আমার মা জ্বরে পুড়ে প্রলাপ বকছে
-সিঁড়িঘরে রাখা নৌকায় লেগেছে উইপোকা
-বহুকাল ঘুড়ির সুতোয় মাঞ্জা দাওনি
-জলের অভাব হবে না তোমার
যদি হও হাঁসছানাদের অনুগামী
তাদের মায়ের পিছু পিছু গেলে
পেয়ে যাবে জল আর শৈবাল।
সে ভাবছে-
বেলকনিতে পাখিদের জন্য রেখেছে শস্যদানা
টেলিভিশন দেখতে দেখতে ঘুমিয়ে গেছে মা
জ্বলেনি সন্ধ্যা বাতি, বেজে যাচ্ছে কলিংবেল
ঘুমন্ত মুখে খেলা করছে টেলিভিশনের আলো।
আমাদের দুটো হাত আর মা
দুদিকে ভেসে যাচ্ছে
পাশাপাশি হাঁটছি।
আমাদের হাতে কোনো হাত নেই…