You are currently viewing তিনটি কবিতা – ওমর কায়সার

তিনটি কবিতা – ওমর কায়সার

কীভাবে এত ছন্দ ধরে রাখে

শরীর কীভাবে এত  ছন্দ ধরে রাখে

গতির আমেজে কত  ঘ্রাণ, কত  আড়ম্বর

পায়ের আওয়াজ শুনে নূপুর চঞ্চল

সন্ধ্যার পৃথিবী আজ বোবা নাচঘর।

 

শ্যামলী তোমার পথ ঠিকানা ভুলেছে

লৌকিক প্রভার ভাঁজে অলৌকিক সুর তোলে কাব্য

সমুদ্র বাঁ দিকে রেখে নদীও সচল হয়

তোমাকে উজানে ডেকে মোহনায় ধরে রাখে নাব্য।

 

দিন শেষে নদীতীরে কেন তুমি হেঁটে চলে গেলে

পার ভাঙে, ঘর ভাঙে, ধ্যান ভাঙে জোড়া অন্ধকার

জটিল পৃথিবী জুড়ে অনর্থক করুণা ছড়িয়ে

বাতাসেরা দিয়ে গেল শব্দহীন ধুধু হাহাকার।

 

প্রশ্নের চিহ্নের মতো

প্রশ্নের চিহ্নের মতো দাঁড়িয়েছে বালিকা নাদিন
কীভাবে কবর হয় বাড়িঘর, সভ্যতারও ধ্বংস্তুপ
জৈষ্ঠ্যের বাতাসে দেখ আজও কোনো হাহাকার নেই
অগ্নিময়ী কৃষ্ণচুড়া থমথমে কেমন নিশ্চুপ !

তারও কী রক্তের নেশা ইস্রাইলের লোভের মতো

ভূমধ্যসাগরে আজো ঢেউ খেলে কীসের উচ্ছ্বাসে ?

তারও কী আনন্দ দেয় ভিটেহারা ট্রমার পৃথিবী

তারও কী উল্লাস জাগে রক্তমাখা শিশুদের লাশে।

 

সঙ্ঘনিরোধ কাল শেষ হলে


বাতাসের তাড়নায় আমি দৌড়ে চলে যাব
শাস্ত্র -বহির্ভূত-স্নানে মগ্ন হবো মিষ্টি ঘোলা-জলে
শোভাযাত্রা শেষ করে প্রেমের ঘোষণাপত্র
পাঠ হবে নিশ্চিত ‘অসভ্য’ কোলাহলে।

রবীন্দ্রসংগীত শিল্পী তৈরি থেকো তুমি
এমন অবোধ্যকালে শেষ হলে অন্তরীণ পর্ব
কোনো এক আগামীকাল অন্ধ সন্ধ্যায়
ভাঙা কন্ঠে অশুদ্ধ সুর আমিও ধরব।

ভাতঘুম ছেড়ে দিয়ে চেরাগী আড্ডায়
ধুলোবালি চেটে নেব ভুলে যাওয়া করমর্দনে
কত যে তাচ্ছিল্য হবে, পরচর্চা হাসিতে কাঁশিতে
গিটারে সংলাপ হবে প্রকাশ্য-গোপনে।

এই করোনাকাল শেষ হলে- অনর্থ আবদার
বেড়ে যাবে – বন্ধুদের – দুষ্টু উপদ্রব,
খুব পাখিবৃষ্টি হবে, রোদ্দুরের ঘ্রাণ নিতে নিতে
জন্ম নেবে পৃথিবীর নতুন উৎসব।