You are currently viewing তিনটি কবিতার অনুবাদ > জেবুন্নেছা জোৎস্না

তিনটি কবিতার অনুবাদ > জেবুন্নেছা জোৎস্না

তিনটি কবিতার অনুবাদ
   জেবুন্নেছা জোৎস্না

 

আপেলের ভেতর

  ইহুডা আমিহাই

 

তুমি এলে আপেলের ভেতর আমার সাথে দেখা করতে। 

আর আমরা তখন একসাথে শুনতে পাই বাহিরে

চাকু তার শানিত দক্ষতায় অতি সন্তর্পণে 

আপেলের বাহিরের খোসা ছাড়িয়ে নিচ্ছে! 

 

তুমি কথা বলছিলে, আর আমি সে কথাকে বিশ্বাস করছি

কারণ সে কথায় এক গাঢ় দুঃখবোধের ঘন মিশেল আছে 

যেভাবে মৌমাছির চাকে স্তুপীকৃত মধু থাকে 

শুদ্ধতার অতিশয় ঘনত্বে! 

 

আর আমার আঙ্গুলেরা নবুও্যয়াতি ইশারায় তোমার ওষ্ঠ ছুঁতেই 

ওরা রং বদলে হয়ে যায় লাল, ঠিক যেমন মৌসুম শেষে

আগুনের দাহে ফসলী মাঠ অবশিষ্টে হয় ভস্মের কালোতে! 

আর এ সব খুবই সত্য! 

 

তুমি এলে আপেলের ভেতর আমার সাথে দেখা করতে,

আর এও জানি যতক্ষণ না চাকুটি 

আপেলের অর্ন্তভেদ করছে

তুমি ততক্ষণ আমার সাথে থাকবে! 

 

পাউরুটি আর গান

কনরাড আইকেন

 

যে সংগীত আমরা শুনতাম একসাথে , তা ছিল গানেরও 

অধিক 

যে রুটি ভাগাভাগি করতাম আমরা, উদরপূর্তির চাইতেও ছিল তা ততোধিক! 

এখন তুমি ছাড়া আমি নিঃস্ব, শুন্য চারিদিক;

যা কিছু ছিল সুন্দর একদিন, আজ সবকিছু মৃত্যুতে বিলীন ।

 

তোমার হাত ছুঁয়েছে এই টেবিল আর রুপার পাত্রকে। 

আমি দেখেছি তোমার আঙ্গুলেরা জড়িয়ে থাকতো গ্লাসটাতে।  

তোমার স্পর্শ এখনও ওদের গায়ে থাকলেও 

প্রিয়তম, ওরা মনে রাখেনি তোমাকে! 

 

তবে তোমার স্পর্শ আর চাহনীর আশীর্বাদপুষ্ট 

এ আসবাবে, তুমি বেঁচে আছো আমার হৃদয়ে।  

ওরা অনন্তকাল জানান দিবে আমাকে, যে 

ওরা জানতো তোমাকে, হে  সুন্দর, অভিজ্ঞ! 

 

সবটুকু সত্য বলো

এমিলি ডিকিনসন

 

সত্য বলুন,তবে সরাসরি নয়, একটু পরোক্ষ ভাবে।

আর এভাবেই মৃদু সত্য বলয়ে সত্য’র সার্থকতা আসে। 

অপ্রিয় সত্য কখনও খুব কঠিন হতে পারে 

যা হয়তো দুর্বল হৃদয়ের পক্ষে সহ্য করা সম্ভব না। 

 

ঠিক যেমন বজ্রপাতে ভীতু না হতে বাচ্চাদেরকে 

মোলায়েম ভাবে বোঝানো হয়, সত্যও তেমনি 

ধীরে ধীরে কাউকে প্রকাশ করা উচিত, যাতে 

হঠাৎ এর চমকে মানুষ অন্ধ না হয়ে যায়।

 

জেবুন্নেছা জোৎস্না: কবি ও অনুবাদক