“এক ধরনের গতিজ অনুভূতির মধ্যে ছিলাম”: ডায়ান সিউসের একটি ছোট সাক্ষাৎকার। নিয়েছেন লিসা অউলস্টাইন। বাঙলায়ন: ঋতো আহমেদ
[ডায়ান সিউস, ২০২১ সালে প্রকাশিত ‘frank: sonnets’ কাব্যগ্রন্থের জন্য এ বছর (২০২২) কবিতায় পুলিত্জার পুরস্কারে ভূষিত হয়েছেন। তিনি কালামাজু কলেজের দীর্ঘ-দিনের আবাসিক শিক্ষক ও লেখক। গত ৯ই মে পুরস্কার ঘোষণার পর এক সাক্ষাৎকারে বলেছেন, “এটা এমন এক প্রাপ্তি যা আমি কখনও, কখনও, কখনওই কল্পনা করতে পারিনি। শক এবং বিস্ময়ের বাইরে অন্য কিছু অনুভব করতে পারছিনা এ মুহূর্তে।” এটি তাঁর পঞ্চম বই। সিউস নাইলে বেড়ে ওঠেন। আর ১৯৭৮ সালে কালামাজু কলেজ থেকে স্নাতক হন। তারপর ওই কলেজেই ইংরেজি বিভাগে শিক্ষকতা শুরু করেন। ২০১৭ পর্যন্ত প্রায় তিন দশক ধরে ওই কলেজের রাইটার-ইন-রেসিডেন্স হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। তিনি মিশিগান বিশ্ববিদ্যালয় এবং সেন্ট লুইসের ওয়াশিংটন বিশ্ববিদ্যালয়েও শিক্ষকতা করেন। এই বইয়ের কবিতাগুলো তাঁর সেই জীবনের গল্প বলে যে জীবন নিয়ত জীবন-পাতার প্রান্তে পিছলে পড়ার ঝুঁকি নিয়ে যাপিত হয়েছে। এখানে সিউসের মিশিগানের শ্রমজীবী শ্রেণির শৈশব থেকে নিউইয়র্ক শহরের বিপজ্জনক প্রলোভনের দিকে এগিয়ে যাওয়া এবং ফিরে আসার গল্প রয়েছে। কবিতাগুলোতে সিউস চিন্তা ও সময়, কবিতা ও কাদা, এইডস ও আসক্তি, খ্রিস্ট আর মাতৃত্ব নিয়ে কোমলভাবে এগিয়ে যান। তিনি আমাদের দেখান কীসে আমাদের সক্ষমতা, কীসে আমাদের অপ্রয়োজন, আর দেখান যখন আমরা নিঃস্ব তখনও পরস্পরের জন্য কী অফার করতে পারি। গতানুগতিক দেখার বাইরে, তিনি আমাদের দেখান অন্যভাবে। কবিতাগুলো সনেট। কিন্তু ট্র্যাডিশনাল সনেট নয় কিছুতেই। তাঁর নিজস্ব ছন্দ ও গঠন এই সনেটগুলোয় বিশেষভাবে লক্ষণীয়।]
সাক্ষাৎকার
[১৪ই মার্চ, ২০২১]
লিসা অউলস্টাইন : কোন আত্মজিজ্ঞাসা আপনার রচনাকে সৃষ্টিশীল হয়ে উঠতে তাড়িত করেছে অথবা নিজেদেরকে এর ভিতর দিয়ে উদ্ভাসিত করতে সচেষ্ট হয়েছে কোন কোন সেই আবেশ? একটু যদি খুলে বলতেন…
ডায়ান সিউস : জীবনের শেষ রোম্যান্টিক সম্পর্কটির ক্লান্তিকর সমাপ্তির দিকে হাঁটছিলাম ওই সময়টায়। তখন মহাদেশের একেবারে দূরবর্তী প্রান্তে আমার অবস্থান। চারপাশে কেবল সুন্দর আর সুন্দর, কিন্তু সুন্দর আসলে কী? আমি কী ছিলাম আগে আর তখনইবা আমি কী? আর এখন..এখন আমি কী? কবিতা কি আমার মতো নির্মিত হতে পারে: পাতলা আর খাটো? কোনও স্মৃতিচারণ কি ১৪-লাইনে প্রকাশ করা যায়? কীভাবে স্মরণ করবো আমি? আমার স্মৃতিচারণকে কীভাবে স্মরণ করবো? সনেটের গঠনে ফ্রাঙ্ক ও’হারা প্রায়শ যেমন করতেন, আমি কি তেমনই স্বতঃস্ফূর্ত দ্রুত-পদচারণায় ভাষাকে নিয়োজিত করবো? শৈল্পিক এবং সৎ— দুটোই হতে পারবো? বইয়ের পৃষ্ঠায় আমি কি মৃত প্রজাপতির মতো আমার সত্তার শাশ্বত অবশেষটুকু তুলে ধরতে পারবো?
লিসা অউলস্টাইন : “গঠন চিন্তাকে মুক্ত করে” বলেছিলেন অ্যানি কারসন। এবং আমারও তাই মনে হয়। আপনার রচনায় চিন্তা আর গঠন কীভাবে একে অপরের সাথে এক হয়ে বিকশিত হয় বলে ব্যাখ্যা করতে চান আপনি?
ডায়ান সিউস : ‘ফ্রাঙ্ক: সনেটস’ বইয়ের প্রথম কবিতাটিই প্রথমে লিখেছিলাম। তখন ওয়াশিংটনে, উইলাপা উপসাগর আর প্রশান্ত মহাসাগরের মধ্যবর্তী এক টুকরো স্থলভাগের এক সরকারী বাসভবনে ছিলাম। ওই ঘরের জানালা যখন খোলা রাখতাম, সাগর থেকে ঘন মেঘমণ্ডলী, বায়ুর স্রোত আর বৃষ্টি আকাশ কালো করে রাত নামিয়ে এগিয়ে আসতো, ঝেঁটিয়ে পেরিয়ে যেত আমার ঘর, উপসাগর। টিনের ছাদে বৃষ্টির অবিশ্রাম শব্দ শুনতে বিছানায় দেয়াল ঘেঁষে শুয়ে থাকতাম। ওভাবেই সকালের মধ্যে সূর্য উঠে যেত। আমিও আবার পেয়ে যেতাম এক নতুন তাজা পৃথিবী। এক ধরনের গতিজ অনুভূতি পেতাম। চক্রীয় গতির চেতনা বলা যায় একে। মিশিগানে, যেখানে বড় হয়েছি আর জীবনের সবচে বেশি সময় কাটিয়েছি আমি, সেখানে ঋতু বদল হয়ে আসে ঘরোয়া অতিথির মতো, দ্রুতই তার প্রাথমিক আকর্ষণ ফুরিয়া যায়—তবু সে থাকে, আমাদের প্রিয় চেয়ারটায় বোসে জোরেসোরে চিবোয়। বলতে চাইছি, ওখানে, ওই এক টুকরো স্থলভাগে যে দিন ও রাত্রিগুলোর বৈচিত্র আমি দেখেছি ওই ক’দিনে, আমার কাছে তা ছিল একেবারেই অভিনব। ওটাই আমার মাথার ভেতর ঘুরপাক খেতে থাকা কবিতার ভাষায় দারুণ প্রভাব ফ্যালে।
হতে পারে ‘ফ্রাঙ্ক: সনেটস’ বইয়ের কবিতাগুলোর গঠন আর চিন্তার বিকশিত হওয়ার ওটা এক প্রকার অস্পষ্ট রূপক। গঠন হচ্ছে কবিতার ঘর। (অ্যানি কারসেন: “কাগজের পৃষ্ঠায় সনেট হচ্ছে একটি আয়তক্ষেত্র।”) চিন্তা—স্বতঃস্ফূর্ত, অপ্রত্যাশিত, কৌতুকপূর্ণ—বায়ুস্রোত যেমন। (টেরেন্স হেইস তাঁর তৃতীয় বইয়ের নাম রেখেছেন উইন্ড ইন আ বক্স।) ফ্রাঙ্ক যে সনেটটি দিয়ে শুরু হয়েছে, “আয়তক্ষেত্রের ভেতর বড় হয়েছি আমি। এলুমিনিয়াম। এক আয়তাকার/ লাল, খেলনার বাক্স। কখনওসখনও খেলনাগুলো বের করে নিজেই ঢুকে যেতাম।/ আয়তকার ক্ষেত্রের ভেতর আয়তকার ক্ষেত্র। মনে মনে গান গাইতাম একটা/ ‘ও আমার ছোট্ট শৈশব।’” এই গঠনটাই এসে গেছে। আমার সুরকে আকার দিয়েছে। ফ্রাঙ্কে গঠনই হচ্ছে ভারসাম্যকারী। হয়তো আমি মৃত্যুর মতো একচেটিয়া কিছুকে সম্বোধন করছি কিংবা মিল্কউইডের মতো ক্ষুদ্রাতিক্ষুদ্র কিছুকে, যার প্রতিটি ওই ১৪-লাইনে প্রকাশিত—এর বেশিও না, আবার কমও না। চর্ম সংরক্ষণবিদ্যার মতো নির্ভরযোগ্য।
আবারও প্রথম কবিতাটির কথায় ফিরে আসি। ভেতরে ভেতরে তখন টের পাচ্ছিলাম আমি আসলে প্রতিম স্মৃতিকথার মতো কিছু লিখতে চাইছি। কিন্তু কোন ফর্মে লিখব বুঝে উঠতে পারছিলাম না। তাই খুব সকালে, গাড়ি চালিয়ে কেইপ ডিসএপোয়েন্টমেন্ট নামের এক জায়গায় যাই। ওটাই ঠিক মনে হচ্ছিল। পৌঁছলাম, আর লাইটহাউজ সহ ওই আইকনিক ক্লিফের দিকে অভিভূত হয়ে চেয়ে থাকলাম। হঠাৎ ওই চূড়া থেকে একবার পতনের চিন্তা মাথায় এলো। হাইক আর ডাইভের চিন্তা বাদ দিয়ে ভাড়া-গাড়িটার পেছন সিটে উঠে শুলাম আর ঘুমিয়ে গেলাম। ঘুম ভাঙলে, পথে এক জায়গায় হিসু করতে আবার একই রাস্তায় চালিয়ে এলাম। “গাড়ি চালিয়ে দীর্ঘ পথ পাড়ি দিয়ে কেইপ ডিসএপোয়েন্টমেন্টে এসে হাজির হই আমি।” নামার কথা ভাবছিলাম। “কিন্তু গাড়ি থেকে নামার একদমই কোনও শক্তি অবশিষ্ট ছিল না/ শরীরে। ভাড়ার গাড়ি। নীল ফোর্ড ফোকাস। পথে একবার এক মাঠের মধ্যে/ হিসু করার জন্য এক আধো-পাবলিক প্লেসে থামতে হয়েছিল। রাস্তার পাশেই/ সেখানে উবু হয়ে বসে গিয়েছিলাম শুধু।” ক্রিয়ার অতীত কালে বর্ণনা করাটা দারুণ অদ্ভুত। বিশেষত এইমাত্র যা ঘটে গেল। আমার ভাবনাগুলো আমার জীবনটাকে তাড়া করছিল, খুব ঘনিষ্ঠভাবেই। ঠিক ওই সময় ফ্রাঙ্ক ও’হারার আবির্ভাব ওখানে। “দেখতে আমি কিছুটা ফ্রাঙ্ক ও’হারার মতো, সুন্দর/ নাক নেই, বাড়া নেই, জীবনে আমার নিউইয়র্ক স্কুল নেই, ল্যারি রিভারসও নেই।” এইটুকুই। তবে, কেন তা জানতে চেও না। ফ্রাঙ্ক ওখানে ছিলেন। ওই বইয়ের ডিএনএ ওই লাইনগুলোই। ওরাই পরিচয় করায় ফ্রাঙ্ককে—যে একটি স্থান ও কাল, কবিতার সাথে যার রয়েছে এক স্বতঃস্ফূর্ত সম্পর্ক, এক ধরনের বংশ পরম্পরার মতো, এবং আরও আছে পুরুষবাদী ও শ্রেণিভেদী একটি যুগ, যার ভেতর দিয়ে বেড়ে উঠেছি আমি। আর এইসব নিয়ে আমার ফ্রাঙ্কীয়তা, ফ্রাঙ্কীয়তা নিজেই। নীল ফোর্ড ফোকাস আমাকে আবৃত করে, নিবদ্ধ করে, আমার চিন্তাকে জ্বলে উঠতে আর ছড়িয়ে পড়তে সাহায্য করে। এইভাবে আমার খাতার আয়তক্ষেত্রে ফিরে আসার আগেই কবিতাটি আমার মনের ভেতর লিখা হয়ে যায়। আর যখন লিখতেই বসি, আপনাআপনি ওটা ১৪-লাইনেই প্রকাশিত হয়। আর শেষের যে ২ লাইন, দারুণ এক যুগল হিসেবে দাঁড়িয়ে যায়। কী হোতো—ভাবি আমি। কী হোতো যদি একটা স্মৃতিকথা লিখতাম সনেটে। কী হোতো যদি আমার স্মরণ করার সময়ে স্মৃতি কমে যেত, কী ঘটেছিল তখন কীভাবে মনে করতাম। স্মৃতির বিষয়ে। স্মৃতিকে চারণ করার বিষয়ে। আমি কোনও প্রশ্ন চিহ্ন ব্যবহার করছি না। কারণ ওগুলো প্রশ্ন নয় আসলে। ওগুলো আমার মস্তিষ্কের অভিপ্রায়ের বিবৃতি। আমার মাথার খুলির গয়নার বাক্সে আটকে রাখা।
লিসা অউলস্টাইন : কবিতার যে বক্তা “আমি” আর আপনি, স্বয়ংএর মধ্যে সম্পর্ক কী? অর্থাৎ আপনার আমি অথবা আপনার দৃষ্টি কীভাবে বইয়ের “আমি”কে জ্ঞাত করছে?
ডায়ান সিউস : কবিতার যে মুহূর্তটিতে “আমি” বাক্সবন্দী এবং ঢাকনায় আবৃত, সেই “আমি” একটি শিল্পকর্ম। ফ্রাঙ্ক-এ আমার এই “আমি”, আমার মনে হয় পুরো বই জুড়ে খুবই সামঞ্জস্যপূর্ণ, আমার আত্ম’র একটা অভিমুখ এটা, চারপাশের মাত্রিক চলন থেকেও মসৃণ, তবে অবশ্যই তা প্রতিবন্ধকতা সারানোর একটি চিপ। এখানেও অন্য অনেকের মতো ভিড় রয়েছে। ফ্রাঙ্ক-এ কিছু কবিতায় আমার মায়ের কথা আছে। আমার পুত্রের কথা আছে। আছে মিকেল, আমার প্রাণের সখার কথা। একটা দৃশ্য আছে যেখানে আমি যে গ্রামীণ পরিবেশ থেকে এসেছি সেখানে “আমি” হয়ে যায় “আমরা”, অথবা একেবারে নাই হয়ে যায়, সাক্ষীর মতো উপস্থিত হয়ে। হয়তো এই “আমি” লিরিকটি এমন কিছু একটা, এমারসন যাকে বলেছেন, “অতি-আত্মা”, এক ভাসমান আধ্যাত্মিক উপস্থিতি যা এখনও ব্যাক্তিগত ডিএনএ ধারণ করছে। অথবা অউলিনা কালেটিয়াক ডেইভিস যেমন লিখেছেন, “‘আমি’ লিরিকটি গাড়ি চালিয়ে তাঁর সন্তানদের স্কুল থেকে আনতে যায়: উত্তরস্বীকারোক্তিমূলক মনোভাবের এই কবিতায়,” পুরো বিষয়টিকে প্যারোডি করে তোলে, “বিষয়বস্তুর সাথে ‘আমি’ এমনভাবে মেখে যায় যে ‘তুমি’ ভাবছ এ তো দেখছি রবার্ট লয়েল। (কিন্তু কে দেখেছে কোনও মেয়েকে রবার্ট/ লয়েলের মতো?) ‘আমি’ কিছুই পরোয়া করে না, ‘তুমি,’ নীরব মানব নিরীক্ষক, থাকো বা না-থাকো, জানেইনা তোমাকে, উড়াল দিতে পারে/ ভুলে যাও, রবার্ট লয়েলকে।” আমার বন্ধু, প্রতিভাধর কবি ও সম্পাদক জেইন হাফম্যান একে সর্বদেবতার মন্দির বলে অভিহিত করেন। আত্ম’র একটি অভিমুখ এক সময় এগোয়, তারপর আবার পেছোয়। থিওডোর রোথেকের কথাও যদি ভাবি, তাঁর সেই বিখ্যাত কবিতা, “আঁধার সময়ে:” “আত্মা আমার, যেন এক তাপ-পাগল গ্রীষ্মের মাছি,/ গুঞ্জন করতেই থাকে করতেই থাকে, দোরগোড়ায়। কোন আমি আমি?” এই যে ইতালীয় বাঁকা দ্বিতীয় ‘আমি,’ আমার কাছে এটাই সমস্ত পার্থক্যের কারণ। সর্বদেবতার মন্দির হয়তো ময়ূর-লেজ। আর ‘আমি’ হচ্ছে সেই ময়ূরের দেহ। অথবা ওই “নীরব মানব নিরীক্ষক… হয়তো সে-ই উড়িয়ে দিতে পারে রবার্ট লয়েলকে,” ফ্রাঙ্ক ও’হারা কিংবা ডায়ান সিউসকেও, ওই একই কারণে। হ্যাঁ, বিশেষভাবে ওকেই।
লিসা অউলস্টাইন : আপনার এই রচনা পাঠের জন্য কি কোনও শনাক্তযোগ্য পাঠককূলের কথা মাথায় রেখেছিলেন তখন? কবিতাগুলো কীভাবে এবং কার সাথে কথা বলছে এই চেতনাটুকু কি বিবর্তিত হয়েছিল আপনার মধ্যে?
ডায়ান সিউস : আমার মনে হয় না তেমন কিছু ভেবেছিলাম। আমি তো কবিতা লিখছি, “বিশ্বের প্রতি চিঠি” লিখছি না, তবে দান্তে যেমন লিখেছিলেন সেই এক “মুহূর্তের স্মৃতিফলক”এর মতো, হয়তো বিশেষভাবে এই ফ্রাঙ্ক। এমনকি যে কবিতাগুলো পড়লে মনে হয় কোনও গল্প বলা হচ্ছে, সেগুলোও একপ্রকার ওই গল্পেরই মুহূর্তের স্মৃতিফলক। আর যদি ধরেও নিই লেখার সময় আমার মাথায় কোনও কার্যকর পাঠক বিদ্যমান ছিল, তবে সে ওই গঠন নিজেই, সে ওই সনেট, মুহূর্তের স্মৃতিফলক আবৃত করার একপ্রকার খাম। এখানে, সনেটই কথা বলে। তোমার পাঠের ওই কথাটা এখানে পিছলে আনো। মেনে নেব।
লিসা অউলস্টাইন : এই বইটির ব্যাপারে সবচেয়ে বিপজ্জনক কোন বিষয়টিকে মনে হয়েছিল আপনার?
ডায়ান সিউস : স্মৃতিচারণ সবসময়ই ঝুঁকিপূর্ণ। অপ্রয়োজনীয় না হয়ে, বেড়ে-ওঠার ভেতর দিয়ে স্মৃতিচারণ, সমন্বয়কারক এমন কিছুকে, এখনও গড়ে তোলার মধ্যে আছে যা—সেটাকেই ঝুঁকিপূর্ণ মনে হয়, কিংবা বলতে পারো একে একপ্রকার চ্যালেঞ্জ। এমনভাবে এই স্মৃতিকে চারণ করা হয় যেন বক্তা (ধরে নাও আমি, এই ডায়ান সিউস) তাঁর দুর্বলতা, নির্বুদ্ধিতা, তাঁর অসংখ্য ভুল পদক্ষেপ, তাঁর বীরত্বের অভাব, অবশ্য, এগুলো আমার ভাবমূর্তির জন্য ক্ষতিকর নয়, আমাকে চেনে এমন যে কেউ বলতে পারবে আমি দুর্বল, বোকা, এবং ভুল করি প্রচুর, তবে আমার মনের মধ্যে এই ঝুঁকিটা সবসময়ই থাকে, বিশেষত নিজের কাছে নিজেকে ভালো না দেখানোটা। যদিও নিজেকে ভিকটিম হিসেবে নির্মাণ করতে চাইনি, তবুও এই সংকলনটিতে যে সময়ের বর্ণনা রয়েছে তাতে আমিই হচ্ছি শিকার। কবিতার বৃত্তে বিপরীতমুখী স্বীকারোক্তিমূলক হওয়ার ঝুঁকি রয়েছে। তাই যতটা সম্ভব এই ব্যাপারে নিশ্চিন্ত থাকার চেষ্টা করি। আমি আশা করি কবিতায় যে বর্ণনা আমি দিয়েছি তা অন্যদের উৎসাহিত করবে। অর্থাৎ এগুলো কিছু না কিছু কাজে লাগবে মানুষের।
লিসা অউলস্টাইন : বইটিতে নান্দনিকতা কীভাবে এর নৈতিকতাকে উপস্থাপন করে কিংবা উল্টোভাবে বললে, এর নৈতিকতা কীভাবে নন্দনকে প্রকাশ করে?
ডায়ান সিউস : বইটির একটি কবিতা সনেট ফর্মকে সম্বোধন করে শুরু, “সনেট হচ্ছে, দারিদ্র্যের মতো, তোমাকে শেখায়, কী তুমি করতে পারো/ নিঃস্ব হয়েও। আমার মা যেমন বলতেন, এক হাতে ইচ্ছা আরেক হাতে/ বিষ্ঠা।” এটাই সম্ভবত ফ্রাঙ্কের নান্দনিকতা আর নৈতিকতার যোগসূত্রের ফল। আমার আগের বইয়েও (স্টিল লাইফ উইথ টু ডেড পিকক অ্যান্ড আ গার্ল) এই ব্যাপারটা রয়েছে। আমি “উচ্চ শিল্প”এর মার্কারগুলো টানতে আর “নিম্ন সংস্কৃতি”র সাথে ছেদগুলো উন্মুক্ত করতে পছন্দ করি। সনেটের ইকোনোমিকে আঁটসাঁট বিবেচনা করা যেতে পারে, এর বংশ পুরুষতান্ত্রিক। ফ্রাঙ্কে, আর যাই হোক, “দারিদ্র্য, ঠিক সনেটের মতো, ভালো একজন শিক্ষক…দি ছাড়া আর অ্যান্ড ছাড়াই কাজ করে। কাজ করে হট/ ডগ বিহীন তোমার সেদ্ধ শিমে। একএকটি সনেট একএকজন মা। প্রতিটি শব্দ/ একএকটি রৌপ্যমুদ্রা।” অভাবের অর্থনীতি খুব খারাপ ব্যাপার। আসলে বংশ প্রকৃতপক্ষে মাতৃতান্ত্রিক।
লিসা অউলস্টাইন : কবিতাগুলোর শ্রুতি-জীবন সম্পর্কে আপনার বক্তব্য কী? আওয়াজ বা সঙ্গীত কেমন ভূমিকা পালন করেছে আপনার এই কবিতাগুলোর রচনাকালে কিংবা এগুলোর সংশোধনে?
ডায়ান সিউস : ছন্দ আর মাত্রার অন্বীক্ষায় অনেক সনেটই এই প্রক্রিয়ায় খুব গুরুত্বপূর্ণ। কবিতাগুলোকে আমি সমসাময়িক করতে চেয়েছি (লক্ষ করলে দেখবে, টেম্পলেট অনুসারে নিখুঁতভাবে তৈরি নয় এগুলো)। চেয়েছি সনেটের সীমাবদ্ধতাগুলো ভেঙে, টেনে লম্বা করতে। কখনও কখনও, কিছু কবিতা হয়ে গেছে ১৪ লাইনের গদ্যখণ্ডের মতো। তবে বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই, কবিতাগুলোর রয়েছে ছন্দ আর মাত্রার মিল। প্রায়শই আছে কবিতার ভাঁজ। সাধারণত একপ্রকার ছন্দ-মিলে রচিত হয়েছে দ্বিতয়,— হয় শেষে অথবা অভ্যন্তরে কোথাও রয়েছে এই অন্ত্যমিল। সবকিছু নির্ভর করছে, উচ্চারণ করতে গিয়ে যখন আমার কর্ণকুহরে ঢুকছে তখন কীভাবে শুনছি, কীভাবে একে গ্রহণ করছি, তার উপর। রচনা প্রক্রিয়াকে তীব্র করে তোলার জন্য যতটা সংশোধন প্রয়োজন তা করার প্রবণতা আমার আছে। যদি আমি ইচ্ছাকৃতভাবে ধ্বনি নিয়ে কাজ করি, বিশেষ করে ছন্দ-মিলের ধ্বনি, নিজেকে খুঁজে পাই তখন উত্তেজনাপূর্ণ হয়েওঠার পৌঁছানোর অভিমুখে। বিশেষত যখন কোনও চাকা অকেজো হয় আর ক্লাঙ্ক করে ওঠে। আওয়াজ জন্ম দেয় অভিপ্রায় জন্ম দেয় আওয়াজ, যতটা সম্ভব বাইবেলের মতো।
লিসা অউলস্টাইন : জানি যে, মাধ্যম হিসেবে, শাশ্বত আর সময়-ভিত্তিক, এই দুইয়ের মধ্যবর্তী কোথাও, কবিতা এক আকর্ষণীয় পরিসরে সাময়িকতাকে জড়িয়ে নেয়। তাই আপনার কবিতাগুলো সৃষ্টির অভিজ্ঞতা জুড়ে, আপনার এই রচনায়, সময় কীভাবে কাজ করে?
ডায়ান সিউস : সনেটের গঠনে, জীবন্ত কিছু রচনা করার জন্য এর সম অংশগুলো একত্রিত হয় আর এমনভাবে কাজ করে যেন আমার জন্য তা সময়কে করে তোলে এক সমতল ভিত্তি আর একে ছিনিয়ে আনে সমস্ত উচ্চতা আর নীচতা থেকে। নাটকীয়তা থেকে। এইভাবে, চিত্রকলার বিমূর্ত অভিব্যক্তিবাদ মনে করিয়ে দেয়। যেখানে কোনও একক কেন্দ্রবিন্দু নেই। যদিও, একটু আগেই বলেছি, আমার প্রতিটি সনেট হচ্ছে মুহূর্তের স্মৃতিফলক আর মুহূর্ত হচ্ছে সময়ের একক, কিন্তু এই ১২০ এর মতো সনেটগুলো আসলে কোনও একত্রিত রৈখিক কালানুক্রমের প্রয়াস নয়। আমাদের স্মৃতিগুলো আসে বিক্ষিপ্তভাবে, এলোমেলো তারাদের মতো, অথবা ওরা দাগ কেটে যায়, উঁকি দিয়ে যায়, রথকোউ-স্টাইলে। সংকলনটিকে আমি আগের দিনের ফিল্ম সম্পাদনার মতো দেখি, ফিল্মটির শারীরিক, হাতে-কলমে সম্পাদনা: “একটি সনেট মানে সেলুলয়েডের এক ফালা দীর্ঘ/ একটি ফ্রেম, যার অধিকাংশ বাদ পড়ে যাবে কাটিং-/ রুমের মেঝেয় পেছনে ঠিক যেমন কাটিংরুম হোতো যখন/ কেভ যিনি বহু আগে মারা গেছেন, কাজ করছিলেন স্টিনবেকের/ রাডার অ্যাঞ্জেলের উপর।” ব্যাপারটা অদ্ভুত, কীভাবেই-বা একটুকরো ফিল্ম কেটে ছিন্ন করা যায় যা একটি মুহূর্তকে ধারণ ক’রে অন্য মুহূর্তগুলোর সাথে জুড়ে থাকে, আবার প্রায় ২০ বছর ব্যবধানের অন্য মুহূর্তের সাথে সংযুক্ত করে দেয়া যায়। আর এই নতুন কালানুক্রম কোনওভাবে জীবনকে এমন এক উপায়ে বর্ণনা করতে পারে যা সময়ের একরৈখিক বর্ণনায় সম্ভব নয়। আর এইজন্যই এই বইটির কোনও কোনও অংশ সময়রেখার বাইরেরও। কারণ, যেসব কবিতায় “আমরা” আছে, সেগুলো আরও অতীতের আমার শৈশবের ঘটনায় জড়িত, যেখানে আমি বেড়ে উঠেছি। কোনও এক দৃষ্টিকোণ থেকে, আমার কাছে ওই কবিতাগুলো এক ধরনের অরিজিনাল মিথ। ঘটে গেছে এবং সবসময়ই ঘটছে। বইয়ের শেষ কবিতায় চুম্বনের ভেতর দিয়ে ফুটে উঠেছে আরেকরকম রৈখিকতা: “একজনকে চিনি যে বলেছিল/ সে যে ঠোঁটে চুমু খেয়েছে সেই ঠোঁট যে ঠোঁটে খেয়েছে সেই ঠোঁট যে ঠোঁটে খেয়েছে সেই ঠোঁট যে ঠোঁটে খেয়েছে সেই ঠোঁট খেয়েছে হুইটম্যানের/ ঠোঁটে যে আমায় নিয়ে বলবে আমি তাকে চুমু খেয়েছি কারণ সে যাকে চুমু খেয়েছে আমি তাকে চুমু/ খেয়েছি…” এইভাবে ওই সমস্ত চুম্বনই একে অপরের সাথে জুড়ে গিয়ে অজানা ভবিষ্যতের দিকে প্রসারিত হয়ে আছে, যেখানে আমি এক দীর্ঘ অতীত।
লিসা অউলস্টাইন : আপনার কাছে বইয়ের এই গঠনটি কীভাবে নিজেকে উন্মোচিত করেছিল? এমন স্থাপত্যের আকার দিতে কী আবির্ভূত হয়েছিল আপনার মাথায়?
ডায়ান সিউস : এখানেসেখানে কিছু পরিবর্তন সহ, বইটি প্রাথমিকভাবে এর রচনার ক্রম অনুসারেই সাজানো হয়েছে। আমার অন্য সব বইয়ের চেয়ে, এক অর্থে, এটিই ছিল সবচেয়ে পরিষ্কার আর সুস্পষ্ট স্থাপত্যাকৃতি। পুরনো সেই কার্টুনগুলোর মতো, লম্বা হলওয়ের দু’পাশে অসংখ্য দরোজা। আরও ভালো পরিভাষা খুঁজতে গিয়ে এর আগের বইগুলোতে আমি অনেকটাই থিসিস লিখার মতো নিয়োজিত ছিলাম। তবে এই বইটি যেন দ্বিতীয়-শ্রেণির জাদুকরের হাতে তাসের ডেকের মতো উন্মোচিত হয়েছিল। প্রথম দিকে পাণ্ডুলিপিতে দুটি বড় ভুল ছিল। কতগুলো বিভাগে বিভক্ত করেছিলাম একে। পুরো প্রক্রিয়ার একেবারে উল্টো, ভাষাহীন আর বিপত্তিপূর্ণ। দ্বিতীয় ভুল ছিল, ওই বিভাগগুলোর নামকরণ, সেও নির্বোধের মতো, ওই বিভাগগুলোরই একএকটি কবিতার একএকটি লাইন নিয়ে, ভাষাহীন, পেঁচানো। ভাবতে পারো? ভাগ্যক্রমে, গ্রে উল্ফ প্রেসের সম্পাদক জেফ শটস বলেছিলেন, “মনে হয় আমরা এই বিভাগগুলোকে বাদ দিতে পারি।” তিনি এমন কি পেঁচানো ব্যাপারটাও বলেননি। এর থেকেই তাঁর কৌশলী ক্ষমতা সম্পর্কে ধরনা করা যায়।
লিসা অউলস্টাইন : কবিতাগুলো রচনার সময় কে বা কী আপনাকে সবচেয়ে বেশি সঙ্গ দিয়েছিল? কোনও বই, গান, শিল্পকর্ম, দার্শনিক গ্রন্থ, কোনও জলখাবার, হাঁটাহাঁটি কিংবা বইয়ের সৃজনশীল জগতের অদ্ভুত কোনও ভক্তিই কি অবদান রেখেছে এক্ষেত্রে?
ডায়ান সিউস : আমি তখন রোল্যান্ড বার্থেস পড়েছি। তাঁর আ লাভারস ডিসকোর্স: ফ্রাগমেন্টস আর আ মরনিংস ডায়রি বই দুটি সম্পূর্ণ পড়েছি। সেই সময়, খুব একটা নিশ্চিত ছিলাম না, কেন, কিন্তু এখন পেছনের কথা ভাবতে গিয়ে মনে হচ্ছে, দুটো বইয়েই মানুষের ব্যাক্তিগত ইতিহাসের তত্ত্বকে নিবদ্ধ করা হয়েছে। দুটো বইই টুকরো টুকরো ঘটনার সন্নিবেশে লিখা, যা ওদের একপ্রকার অনিশ্চিত সম্পূর্ণতা প্রদান করেছে। আমি জয়েসের ডাব্লেনারস পড়েছি, আর বারবার ওই পাঠের কথা স্মরণ করেছি, তাই আমার কিছু কবিতায় ওই বইয়ের কথা পাওয়া যাবে। চেকভ আর হপকিন্স পাঠের কথা স্মরণ করেছি। ফ্রাঙ্ক ও’হারা পড়েছি। নিজেকে সতর্ক করেছি যেন পুনরায় ওটাই না লিখে ফেলি। অ্যামি ওয়াইনহাউস শুনেছি। জনি মিচেলের ব্লু শুনেছি, যা আমার এক কবিতায় এসেছে। ও’হারার নগ্ন প্রতিকৃতি ল্যারি রিভার্সের দিকে অপলক চেয়ে থেকেছি। যেহেতু এটা স্মৃতিচারণমূলক বই, তাই যে কোনও ধরনের সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য শিল্পকর্মকে দ্যাখা, শোনা আর পাঠের স্মৃতিও চলে এসেছে বইয়ে। শুধুমাত্র পাঠের চাইতে(যা লিখার বর্তমান কালকেই সঙ্গ দেয়) পাঠের স্মৃতি আমার কাছে অনেক গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছিল। নির্দিষ্ট কিছু সঙ্গীত আমাকে প্রায় ভেঙে দেয়। সেইসব সঙ্গীত শোনার ব্যাপারে আমাকে আরও সতর্ক হতে হবে। সিনেমা দেখার বর্তমান কাল আমার কাছে গুরুত্ব বহন করে না, বরং ওই দেখার স্মৃতি আমার কাছে মূল্যবান, এবং আরও গুরুত্বপূর্ণ হলো ওই ফিল্ম তৈরি, অন্য এক জগৎ যার পাড় আমি প্লাবিত করেছি কিছুটা যখন নিউইয়র্ক ক্লাবে ছিলাম সেই ৭০ এর দশকে, ওটাই ছিল গুরুত্বপূর্ণ। আমি এও স্মরণ করেছি, একেবারে প্রথম সারিতে কীভাবে এক পাঙ্ক ব্যান্ড আমাকে লাঞ্ছিত করেছিল সিবিজিবি ফেল্টে, আমার পিরিয়ড শুরু হয়ে গিয়েছিল আর রক্তে চেয়ার ভেসে গিয়েছিল, বাউয়েরির গিন্সবার্গে দৌড়ে পালাচ্ছিলাম আর সবাই আমার দিকে এমনভাবে দেখছিল যেন আমি একটা প্লেক্সিগ্লাসের চেয়েও ক্ষুদ্র আর তুচ্ছ। স্ন্যাক ফুডস? ভূতেরা খায়না।
লিসা অউলস্টাইন : এই বইটির সৃষ্টিশীলতা কেমন? আর এখন আপনি কী নিয়ে কাজ করছেন?
ডায়ান সিউস : এই বইয়ের কবিতাগুলো লিখতে খুব ভালো লেগেছে আমার। সনেটের সাথে আমার সম্পর্ক প্রায় যেন বৈবাহিক পর্যায়ে চলেগিয়েছিল আর এই বিবাহের বিচ্ছেদ একদমই সুন্দর ছিল না। অতএব, ফ্রাঙ্ক-পরবর্তী দু-একটা ধাক্কা আর প্যান্ডামিক, এবং এর সাথে আরও কিছু বিক্ষিপ্ত বিপর্যয়ে আমার পরবর্তী অবস্থার কথা কল্পনা করা অত্যন্ত কঠিন হয়ে উঠেছে। আমার লেখার জায়গা থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছি। এই কোয়ারেনটাইনের কারণে। তাই আমার পরিকল্পনা এখন রূপান্তরের। আমার এখনকার লিখা ফ্রাঙ্কের বিপরীত। মানে হচ্ছে, আমি আর কবিতার ফর্ম নিয়ে কাজ করছি না। সাহিত্য বিষয়ে আমার অদ্ভুত রকমের প্রাথমিক অভিজ্ঞতা নিয়ে লিখছি। প্রাচীন রোমান কবি ক্যাতুলুসের শরণাপন্ন হচ্ছি। আমার জন্মের শহরের চাইল্ড এবিউজ নিয়ে লিখতে তাঁর সাহায্য চাই। ভাবছি বইটা করবো পদ্য ও গদ্যের সমন্বয়ে। আইডিয়াগুলো মাথায় এখনও ঘুরপাক খাচ্ছে। কারণ, পরবর্তী মহাবিশ্ব এখনও সুসংহত হয়ে ওঠেনি। দোয়া কোরো।
[সংগ্রহসূত্র – https://www.tupeloquarterly.com/editors-feature/i-had-a-kinetic-feeling-a-micro-interview-with-diane-seuss-curated-by-lisa-olstein/ ]