জেবুন্নেছা জোৎস্না’র কবিতা
কাঠ গোলাপী আকাশ—
কিছু অপূর্ণতার প্রয়োজন আছে, পূর্ণতার আস্বাদনে-
নিঃশ্বাসের তরঙ্গ যখন বিশ্বাসে কাছে টানে—
অবিশ্বাসের সুক্ষ্ম দহন, ওত পাতে মনের কোণে।
হেম বলেছিল, ‘মেঘ ছুঁতে যাবে’।
আজও তাই পাতাল রেলের অন্ধকারে
এক চিলতে কাঠ গোলাপী আকাশ খুঁজি—
দু-বাহু’র পেশীর ঘনত্বে যে অষ্টাদশী মেঘ
নেয় না জমিনের উষ্ণ উত্তাপ —
যে অংকুর স্ফূরণের বিস্ফোরণেই নিরুত্তাপ-
কোন এক চেরী ফোঁটা ওমে, সে যায় ঝরে—
ঝরা সময়ের বিশ্লেষণে বিস্মৃত হই হেমে-
আসলেই কি গিয়েছি সব ভুলে?
তবে চা’য়ের কাপের চুমুকে কেন
আজও তার ভঙ্গিকে লালন করা ?
তার তামাটে বর্ণের ঋজু চলনে
কেন আমার একা চলা?
কতো প্রেম এলো গেল, ভালবাসা’তো হয়নি !
যে হেম মেঘে ভালবাসা, তার সাথে প্রেম বাঁধিনি !
ধাঁ-ধাঁ
কারা যেন যায় চলে-
পদচিহ্ন মিলায়ে সমুদ্র স্রোতের ধ্বনিতে—
আর কতক শুয়োপোকার খোলে
অদৃষ্ট গুনে প্রকৃতির অভিশাপে।
জীবনের মুঠি’তে যে সঞ্চয়’টুকু,
আয়োজন শেষে —অহেতুক মায়া পিছু!
পেন্ডুলামের দোলায় সাধের জীবন-
যুদ্ধাংদেহী বেশে করোনার আগমন।
চেরীর পরাগ ছুঁইয়ে, যদি জিতে যাই এ যুদ্ধে—
আদি সভ্যতার ট্যাবলয়েটের শ্লেটে-
চর্যাপদের পুঁথির শ্লোকে,
সে হবে পৃথিবীতে আমাদের দ্বিতীয় জীবন।
আর যদি হেরে যাই—
জানালার পাশে প্রিয় গন্ধরাজের মায়া ভুলে-
নিঃস্তব্ধ নগরীর পথে অদৃশ্য শত্রুর মিলনে-
এ্যামবুলেন্সের ক্রন্দনে সওয়ারী সহসা,
সারি সারি লাশের মিছিলে—
ভয় কি? এ কোলাহল ছেড়ে, জানি
নিশ্চিত কোন এক ধাঁধাঁয় অতিক্রম!