গোলাম রব্বানী’র একগুচ্ছ কবিতা
অবদমনের কালে
আমার দেশের প্রতি আমার যে চিন্তার বীজ ব্যাপ্ত হয়েছে
সে চিন্তাভাবনা কি আমাদের জন্যে;
আমাদের ধারণার বৃত্তের মধ্যে?
কোনও ধোঁয়াওঠা চায়ের কাপে ঠোঁট রেখে ভাবছে ভাবুক।
আমার মাটির মানুষের নির্ভেজাল জীবন দানেই
আমার সোজা হাঁটার ইচ্ছেটা ছিল
আমাদের পরাণ গহীনে।
কেউ প্রতিত্তোরে শুধুমাত্র অট্টহাসি হাসলো।
কিন্তু প্যারালাইজড হয়েই ছুটছি আমি যেন অনন্তঘুমে।
সাথে কিছুটা অবাকই হয়েছি, বাঁচার তাগিদে
আমার দেশের প্রতি, মরণের সাথে পাঞ্জাটুকু লড়ে।
আমার দেশের মানুষ অসুস্থ এক প্রতিযোগিতার মধ্য
দৌড়ের পাল্লা দিয়ে ছুটে চলেছি
কাঁচা বয়সেই জনসিনার মতো কুস্তিগিরির পথে
আমি হয়েছি আলীর মতো শৌর্যবীর্য বীজ।
অথচ সকল শৌর্য আজ হারিয়েই ফেলেছি আমি;
কিন্তু জানো? ছাউনিবিহীন কোনও ঘর যেন তোমার
উন্মুক্ত ঘরে ঘূর্ণায়মান, অদৃশ্য বজ্রপাতে বিনষ্ট।
তবু কমতি নেই সেখানে চাটুকারের লেবাস
উচ্ছনে গেছে অবেলা, স্বদেশপ্রেমের মানে জানা নেই।
আমার আমিকে গুরুত্ব দিইনি, অন্যকেই কতটুকু!
তবে বুঝবে হৃদয়ের একটা উদ্ভট লেনাদেনা চলছে..
আত্মার সাথে আত্মার আর হৃদয়ের সাথে হৃদয়ের
দেশের সাথে মাটির: মাটির সাথে মা,মাটি ও মানুষের
কবিতা নিলামে ওঠে
মনে হয় এইতো সেদিন যখন তুমি সবে তেরো বয়সী
বিলিয়ন মিলিয়ন স্বপ্ন ধুয়ে আমি
একটিমাত্র স্বপ্ন বুনেছি।
লক্ষ-কোটি বুদ্ধিসুদ্ধি পেঁচিয়ে পেঁচিয়ে কী ভেবেছিলাম
বুঝি টালমাটাল পরিস্থিতির দোলাচালেই নেচেছিলাম
তোমার চাওয়ার স্রোতের
কোনও শুকনো পাতা হয়েই ভেসেছিলাম
তুমি কি টের পাওনাই কিছুই, আমি ডুবতে চেয়েছিলাম-
ডুবতে পারবো কিনা মোটেও জানি না, তবে জানি
ডোবানোর সমস্তটাই তোমার কাছে, যেমনটা তুমি চাও
তাই নিলামে তুললাম একটি কবিতা, দাবিদার তুমি…
তোমার অনন্ত গভীরের রহস্যময়তার নিগূঢ়তম ভাঁজে।
তোমাতেই অবকাশ খুঁজে ফিরি
স্বপ্ন আর বিস্মৃতিরা চিরদিন জেগে থাকে
মরে না, পচে না
খুলে দাও, খুলে দাও,
মন ও মননের সুক্ষ্ম সুক্ষ্ম দরজা আর জানালা
হৃদয়ভাঙ্গার ভাঙনে কতকিছুই বদলে যায়
সময়ের বিরতিতে কতকিছুই হারিয়ে যায়
বিচ্ছেদ জমিয়ে মানুষ শুধু অট্টালিকার পাহাড় গড়ে
অথচ একটিও কেনার সামর্থ্য আজও হলো না
আজব! হয়তো আজ আমি পানিহীন
মহাতরঙ্গের কোনও জলসাগরের কথা ভাবছি,
ধীরে ধীরে তোমাকেই ভালোবাসছি; বদলে যেতে যেতে
হারিয়ে ফেলার হারানোর ফুরসতে
শুধুমাত্র তোমাতেই আমি অবকাশ খুঁজে ফিরি।
********************************