গুচ্ছ কবিতা
সোহেল আরমান
ঘর
হাজারো ঘর না থাকা লোকদের ভীড়ে আমার একটা ঘর ছিলো। ঘরের
বই
টেবিল
বিছানা
আলমারি
আসবাবপত্র
বলতে ছিলো শুধু মা।
.
যে দিন মা দুনিয়া ছাড়লো, সেই দিন ঘরে ঢুকে দেখি ঘর ফাঁকা। একটা বালিশের কাভারও পড়ে নেই বিছানায়। তারপর ঘর থেকে বাইরে এসে দেখি আমার আর কোনো ঘর নেই।
অবৃত্তায়ন
অনন্তকাল ধরে যে বৃত্তের মাঝে দাঁড়িয়ে আছি
দুজন
চলো সেই বৃত্তের বাইরে গিয়ে দাঁড়িয়ে কথা বলি
মানুষের
আমাদের দৃষ্টির সীমানা বাড়িয়ে দেখি দিগন্তের
ওপারে
কতো বরফ দুঃখকে সাথে নিয়ে মরে গিয়ে মিশে
গেছে
পৃথিবীর মহাসাগরে।
তারপর চলো খুব কাছে গিয়ে দেখে আসি
আমাদেরকে
বাঁচিয়ে রাখা প্রভু কৃষক আর শ্রমিকদের।
চলো
দেখে আসি কিভাবে গাছদের মতোন করুণভাবে মরে যাচ্ছে
তারা মানুষের হাতে।
নদী, ধীরে বহো
এত কেন চঞ্চল থাকো সারাটা বিকেল, সারাটা রাত!
সময়ের অদৃশ্য প্রবল স্রোতে
কেন পাড়ি দিতে চাও অনুকূল ভাটির পথ?
মস্তিষ্কের মতোন জীবনের এত জটিল হিসাব
মিলে গেছে কি কোথাও?
কোথাও কি এমন হয়েছে —
যেখানে গাঢ় অন্ধকারে একটা চড়ুইপাখি
দিগভ্রান্ত হয়ে নিশ্চলভাবে দাঁড়িয়ে ছিলো
আর তুমি স্বপ্নের মতোন দ্রুত দৌঁড়ে গেছো
অচেনা অচেনা মানুষের কাছে!
নদী,
আরো ধীরে বহো,
কোথাও যাওয়ার নেই, তবু সাগরের দুঃখ দেখেছো?
সাগরের কাছে যাওয়ার এত তাড়া কিসের?
একা
কতটুকু সন্ধ্যা নামলে ভীষণ অস্থির হয়ে ওঠে
মন ! তুমি চলে যেতে থাকো সন্ধ্যা গিয়ে
অকারণে ফুরিয়ে গেছে যেখানে।
তারপর,পেছনে ফিরে দেখো,
তুমি পড়ে আছো
সন্ধ্যার মতোন
একা।
কতটুকু একাকী হলে
নিজেকে লুকিয়ে ফেলো তোমার ভেতর?