গুচ্ছ কবিতা/ জারিফ আলম
নাগরিকের পৌরনীতিপাঠ
উতরে গেছে তেতে ওঠা নিয়মের বাকি উন্মাদনা
খুশি করবার মতো সাজ ও সরঞ্জাম তেমন কিছু নেই
প্রেম মরে গেলে থাকে না স্মৃতির চন্দন
খোশবুহীন নস্টালজিক মিথ নিয়ে এখন
রাত আর দিনের ব্যধানের বিস্তার।
এই সুযোগ ও সময় বিলুপ্ত ঘোষণা করা হোক;
মৃদু আলোর উলম্ফন বড্ড বেশি বেমানান এখন
শহরের গণিকা ফিরেও তাকায় না আজকাল।
ধূসরতার ছাই মেখে ফিকে হয়ে গেছে সব;
ততোধিক বৃক্ষ ও বৃষ্টির প্রার্থনায়।
সুরের ফাঁক গলে ঢুকে পড়ে অসুরের ক্যারাভান
সাঁওতাল রমণীর চোখেমুখে ভয় ও ভীতির ওঠা-নামা।
নিপাতনে সন্ধি নিয়ে ঢুকে পড়ে মানুষের মিছিলে
মহরমের শোকের তাজিয়া।
কিছুটা আপোসকামী না হলে
জমে ওঠে না পৌরনীতির প্রথম ও শেষ অধ্যায়।
আধুনিক হ্যামিলন
শাসনের কাছে খুব সহজে হয়ে গেছে কণ্ঠরোধ
মানবিক বোঝপড়ায় শৃঙ্খলের বাদ্য বাজে তাই।
দিবসের ক্ষত নিয়ে রাত্রির সরোদে এখন
গেয়ে যায় শান্তির মুনিয়া।
দুনিয়ার সুখ আর অসুখের
খবর নিয়ে আসে না আর
মামুলি কোনো গদ্যের ভাষায়।
প্রতিদিনের আপ্তবাক্য নিয়ে শান্ত হয়ে গেছে
স্বাধীন কিছু পাখিদের গান আর প্রিয় সময়।
থেমে গেছে সংলাপ; ঝোড়ো বাক্যের চাতুরি
থেমে থেমে ঢেকুর তোলে আদতে এখন।
রঙের বহুমাত্রিক চ লতা নিয়ে ফিরে গেছে
নির্বাক চলচ্চিত্রে; আধুনিক হ্যামিলন।
সংক্রান্তি
চলতে চলতে যখন আর
পেছনে ফেরা যায় না; যখন গভীরে বয়ে যায় নদী
যখন উষ্ণতার পরাগে ঘটে যায় সুখের ভরাডুবি
তুমুল প্রয়োজন দিনশেষে; অধিকার কতোখানি!
চোখের ভেজা দৃষ্টিতে নির্জলা কয়েকটি মুহূর্ত নিয়ে
তানসেন কি তবে হৃদয়েই বসে আছেন
অর্বাচীন ভাবনা বদল করে নিলো কি পোশাকি রূপ?
ফাগুন মানে যদি নতুনের আবাহন
চৈত্রসংক্রান্তি তবে জীবনের বোঝাপড়া।
কয়েকটি ঝাপসা মুখের এমন কিছু প্রাচীন শব্দেরা
জানিয়ে যায়; তোমাকে বিদায় জানাবার আগে
আরেকটু ভাববার প্রয়োজন ছিলো।