You are currently viewing কোরিয় লোককথা ও চৈনিক উপকথা/  ভাষান্তর : মুজিব রাহমান 

কোরিয় লোককথা ও চৈনিক উপকথা/  ভাষান্তর : মুজিব রাহমান 

জোড়া মিথ্যা 

(একটি কোরিয় লোককথা) 

কথক : অন জং অগ

ইংরেজি ভাষান্তর : জং ইন সব

বাংলা ভাষান্তর : মুজিব রাহমান 

একদা মিথ্যা শুনতে ওস্তাদ এক মন্ত্রী ছিলেন। আকর্ষণীয় মিথ্যেকথা তাঁর খুব প্রিয় ছিল। তাই একদিন তাঁর প্রদেশ জুড়ে ঘোষণা করা হলো : “যে-ই আমাকে দুটো আকর্ষণীয় মিথ্যে শোনাতে পারবে সে-ই  আমার একমাত্র কন্যাকে বিয়ে করতে পারবে।” ঘোষণা শুনে দেশের আটটি প্রদেশের সকল নেতৃস্থানীয় মিথ্যেবাদী তার বাড়িতে এলো। কিন্তু তারা যত সব গল্পগাছা বললো কোনটিই  মন্ত্রীকে  তুষ্ট করতে পারলো না। মন্ত্রী তাদের কারো কাছেই মেয়েকে তুলে দিতে অস্বীকৃতি জানালেন।

একদিন, যা-ই হোক, এক যুবক এলো এবং বললো, “আপনি জানেন, আগামী গ্রীষ্মে প্রচণ্ড গরম পড়বে। আপনার এখনি বের হয়ে সিউলের মহাসড়কের নিচে একটা বড় গর্ত খোঁড়া উচিত। তারপর যখন আবহাওয়া তেতে ওঠবে আপনি এটি বিক্রি করে অধিকতর সমৃদ্ধিশালী হতে পারবেন।”

শুনে বরাবরের মতোই মন্ত্রী বললেন, ” এটিও তো দেখি দারুণ মিথ্যে।”

“এবং পরবর্তী জন”?

এবারের যুবক তার পকেট থেকে বের করলো একটি পুরনো মুদ্রিত নথি, প্রামাণ্য দলিল। “এটি একশত হাজার ইয়েং-এর একটি  অঙ্গীকারনামা।  আপনার মৃত বাবা তার মৃত্যুর আগে আমার কাছ থেকে এই অর্থ ধার নিয়েছিলেন। আর এটি সেই চুক্তিপত্র।  আমি এসেছি সেই পাওনা বুঝে নিতে।”

মন্ত্রী এবার বেশ মুস্কিলে পড়লেন। তিনি মনে মনে ভাবলেন, “যদি আমি এটিকে মিথ্যে বলি, তাহলে অবশ্যই তার সঙ্গে আমার মেয়েকে বিয়ে দিতে হবে। কিন্তু যদি বলি এটি মিথ্যে নয়, তাহলে এখনই আমাকে সমুদয় পাওনা পরিশোধ করতে হবে।”

শেষমেশ , তাকে অবশ্য বলতেই হলো, “এটি একটি মিথ্যে” এবং যুবকটি মন্ত্রিকন্যার পাণি গ্রহণ করলো।

২.

অঙ্কনশিল্পী

একটি চৈনিক উপকথা

ইসাবেলা সি চ্যাঙ্গ

অনুবাদ : মুজিব রাহমান 

একদা এক রাজা ছিলেন যিনি লাল ঝুঁটি মোরগের নানান রঙের পালকাবৃত দেহের লীলায়িত বাঁক-ভঙ্গিমা ভালোবাসতেন। এ জন্যে দরবারের চারুশিল্পীকে তার জন্যে একটি মোরগের ছবি আঁকতে ফরমাশ দিলেন। এক বছর ধরে  তিনি অপেক্ষা করলেন, এবং তাঁর নির্দেশ পালিত  হলো না।ত

রেগেমেগে, ভারী পা ফেলে রাজা শিল্পীর স্টুডিয়োর দিকে চললেন এবং শিল্পীকে হাজির হতে আদেশ দিলেন।

সাত তাড়াতাড়ি শিল্পী কাগজ, রঙ আর তুলি বের করে আনলেন। পাঁচ মিনিটের মাথায় তার সুনিপুণ তুলির আঁচড়ে বেরিয়ে এলো ভারি চমৎকার একটা মোরগ। রাজা তখন জ্বলে আগুন তেলে বেগুন। রাগে লাল হয়ে শিল্পীকে জিজ্ঞেস করলেন, ” যদি পাঁচ মিনিটে মোরগের একটি অনবদ্য ছবি আঁকতে পারো, তাহলে কী কারণে তুমি আমাকে এক বছরেরও অধিক সময় অপেক্ষায় রেখেছিলে?”

“আমার সঙ্গে আসুন ” বিনীতভাবে শিল্পী বললেন। শিল্পী রাজাকে তাঁর শিল্পসামগ্রীর সংরক্ষণাগারে নিয়ে গেলেন। কক্ষটির মেঝে হতে সিলিং পর্যন্ত স্তূপীকৃত ছিল কাগজ। আর প্রতি খণ্ড কাগজেই ছিল শিল্পীর আঁকা একটি  করে মোরগের ছবি।

“মহামহিম রাজা,” শিল্পী ব্যাখ্যা করে বললেন,  “পাঁচ মিনিটে কীভাবে একটি সর্বাঙ্গ সুন্দর, নিখুঁত মোরগ আঁকতে হয় তা শিখতে আমার এক বছরেরও অধিক কাল লেগেছিল।”

Ars longa, vita brevis.

Life is short, art is long.

অনন্তপারং কিল শব্দশাস্ত্রং

স্বল্পঞ্চ আয়ু

জীবন সংক্ষিপ্ত, শিল্প অনন্ত।