You are currently viewing এম এ রহমান-এর একগুচ্ছ কবিতা

এম এ রহমান-এর একগুচ্ছ কবিতা

এম এ রহমান-এর একগুচ্ছ কবিতা
 

প্রশ্নবিদ্ধ এক প্রশ্ন
 
প্রশ্নবিদ্ধ এক অভিমান,মনের কার্নিশে উঁকি মারে
চেতনে-অবচেতনে পায়চারি করে অন্দরমহলে 
যাপনের রন্ধ্রে রন্ধ্রে ক্লান্তিহীন কথা বলে নিত্য
তরল আঁধারে ডুবে আমার সকাল,দুপুর, রাত্রিরা
 
প্রশ্নবিদ্ধ এক প্রশ্ন অস্তিত্বের নাভিমূলে ঝড় তুলে
মুহূর্তের বর্তমান চিত্র আঁকে বিধ্বস্ত পৃথিবী 
বিকলাঙ্গ ভবিষ্যৎ অঙ্কুরিত হয় অভিমান পেটে
এড়াতে পারি না তাকে রক্তের স্রোতে সে মিশে যায়
 
অভিমান আলপথে প্রশ্নরা উত্তর খুঁজে যায়
অদৃশ্যের পদমূলে অভিমান রাখতে পারিনি
না আকাশে,না বাতাসে-প্রশ্নবিদ্ধ প্রশ্ন হেঁটে যায়…
আগামীর ভাঁজে ভাঁজে গভীর শিকড়ে বেড়ে উঠে
 
কোথায় পালাবে আমি! অভিমানী গাছ বড় হয়,
পরজীবি বটবৃক্ষ গ্রাস করে আমার অস্তিত্ব
যে প্রশ্নের উত্তরেরা পুড়ে গেছে চৈত্রের দুপুরে
ছাই উড়া বিকেল কি পাবে তার কোনদিন দেখা?
 

একটি বোধের অতলে
 
রক্তের ভিতর আর্তনাদ-
নোনারক্তে ক্ষয়ে ক্ষয়ে যায় উষ্ণতার স্রোত
দেহঘড়ির স্পন্দনে স্পন্দনে লুটেরা নির্দয় সময়
সন্তরণে গিলে খায় তেজীয়ান সূর্য 
অন্ধকারে ডুবে গেলে ছায়াও হারায়
দৃষ্টিহীন হয়ে পড়ে জাগতিক চোখ
কর্ণকুহরে আসেনা পরিচিত কোলাহল
নৈঃশব্দের মাঠ ভরে মূক আর্তনাদে
তখন একটি বোধ,বেদনার- 
অবগাহন জলের থেকে উঠে আসে
চৈতন্য দরজা খুলে গায়ে মাখে জোছনার আলো
বুঝে নেয় জীবনের মানচিত্র 
সময়ের এই লুপে আটক মানুষ জন্ম
অতি প্রিয় কিছু দ্রুত ক্ষয়ে যায়,ধ্বসে যায়
অদৃশ্য বিশ্বাস ডেকে আনে বারবার
তার দিকে,তার পথে-সময়ের এই লুপে
ধ্যানী-জ্ঞানী ঋতুচক্রে হাঁটে নির্ভয়ে,নিরবে
যাবতীয় শারীরিক ভার অদৃশ্যের কাঁধে রেখে
ফুল,পাখি,প্রজাপতি হয়ে রৌদ্রস্নানে যায়।
 
জন্ম এক যুদ্ধ, যার প্রতিপক্ষ সে নিজেই
মুলতঃ মানুষ একা;যা ক্ষুধার কাঁটাতারে ঘেরা
মরীচিকাময় এক ধাঁধা…!!
 

নিশিগন্ধা
 
আজ নিশিগন্ধা ফুল তুমি রাত্রির উঠোনে 
স্মৃতিদের দেহ ভাঁজে মাতালের ঘ্রাণে জাগো
তারপর চোখে চোখ, হাতে হাত রাখে ভাবনারা
অন্ধকার জলে ভিজে চুমুকে চুমুকে পান করে-
তুমিময় ঝরে পড়া সুন্দর কিছু মূহুর্ত….!
 
একদিন জীবনের ঝুলন্ত উদ্যানে তুমি ছিলে-
এক জীবন্ত গোলাপ হৃদয়ের দহলিজ টবে
তোমাতে মেতে উঠতো স্বপ্নের রঙিন প্রজাপতি
সময়েরা দোল খেতো ভালবাসাময় সমীরণে।
 
বলেছিলে,সমুদ্রের নোনাজল পাড়ি দিবে তুমি
প্রেমস্রোতে ভেসে ভেসে বসতি গড়বে এই দ্বীপে 
যুগে যুগে দু’জনমে জোছনার জলে ভিজে ভিজে
সময়ের ভাঁজে ভাঁজে লিখে যাবে আমাদের প্রেম।
 
ছলনার বিষদাঁতে ছোবল দিয়েছ যত্ন করে
নোনাজল নেই,জানো! চোখে আজ শুধু মরুভূমি 
সুখে থেকো,দেখে যেও -ধ্বংসাবশেষ হৃদয় আমার
বেদনায় চাঁপা পড়া প্রত্নতত্ত্বে খুঁজে পাবে তোমাকেই।
 

বোধোদয় 
 
সাধ সাধ্যের খাঁচাকে ভেঙ্গে 
মুক্ত পাখি হলে
শান্তির বাসা বাঁধে না;
যাযাবর নিনাদে ঘুরে বেড়ায়,
কালের ঝরা পালকে লিখে যায়
মূক বেদনার দিনলিপি
এক আগ্নেয়গিরির দীর্ঘশ্বাস! 
চাইলে তুমি শীতার্ত বুকে
নরম রোদের সকালকে পেতে
এক জনমে কবোষ্ণ বুকে
তুমি গোলাপ ফুল ফুটাতে নিত্য!
দিনশেষে, একদিন যেতে হবে
কি পেয়েছ? হারিয়েছ সবি!
ভালোবাসা ছাড়া সব মিথ্যে
এ পৃথিবী ব্যর্থ মনে হবে
মানুষ জন্মকে ভুল মনে হবে।
 

বেঁচে থাকা মানে
 
বেঁচে থাকা মানে-
জীবন যুদ্ধে হার না মানা অদম্য এক সৈনিক
মৃত্যুর সাথে পাঞ্জা লড়ে বেঁচে থাকা দৈনিক।
 
বেঁচে থাকা মানে-
বুকের মাঝে স্বপ্ন আঁকা আগামীর দিন রঙিন
বেদনার এক সিঁড়ি বেয়ে সুখকে খুঁজা রাত-দিন।
 
বেঁচে থাকা মানে-
ক্ষুধার কাঁটাতারে বন্দী,জীবন হাতের মুঠে
পাপ-পূণ্যে সময় ঘোড়া মৃত্যুর দিকে ছুটে।
 
বেঁচে থাকা মানে-
জীবন্ত এক কবিতার বই অজস্র যার পৃষ্টা
প্রতিদিনই লিখি আমরা সেকি সবার চেষ্টা!
 
বেঁচে থাকা মানে-
পদে পদে উল্টে পড়ে নিতে হবে শিক্ষা 
আগামীর দিন সুন্দর করার নিব আমরা দীক্ষা।
 
**==**==**==**==**==**