You are currently viewing এক আকাশ কবিতা

এক আকাশ কবিতা

 

এরকম অসুখের রাতে
ওমর কায়সার

গোধূলির অন্ধ হাওয়ার মতো
কখন ভেতরে ঢুকে গেছে
এমন অসুখ বুঝতে পারিনি।
ওরা সব বাতি নিভিয়ে গোপনে
চুপচাপ সরে পড়ে
কর্পুরের গন্ধ মাখা আমার নীরব শয্যা থেকে।
যাতে আমি ডুবে থাকি ঘুমের অতলে।
অন্ধকারের নিজস্ব স্রোতে ভাসতে ভাসতে
দেখি দূরে কোথাও দ্বীপের মতো বাতি জ্বলে।
আমার ঘুম আসবে না।
সমস্ত পৃথিবী জুড়ে ফুটে আছে অনিদ্রা কুসুম।
এরকম অসুখের রাতে আমি ভাবি
পৃথিবীর কোথাও না কোথাও এখন
সূর্যোদয় হবে।

 

 দ্রোহের ঘুঙুর

 সাদাত সায়েম

হঠাৎ দেখি সুকান্ত
শহরের রাস্তায়
পরিপাটি চুল
দুই পায়ে তাঁর
দ্রোহের ঘুঙুর
দেখি কিশোরের চোখে
নাচে এক নতুন দিন
কিশোরীর হাতে
প্রাণের পতাকা
তার সমস্ত মহিমা নিয়ে
আজ উড্ডীন

 

অতএব তাহাকে গ্রহণ করো

ইউসুফ মুহম্মদ

বন্দরে নোঙর করে

মদের মঞ্জিলে সে নিজেকে পরিপূর্ণ অর্পণ করেছে

অতএব তাহাকে গ্রহণ করো

ঠুমরি বাজে বংশি বাজে

বাজছে ছুতার মিস্ত্রি

হঠাৎ জাগেকামের রাগে

লগ্ন পরের স্ত্রী।

অমাবশ্যা রাতে ঠোঁটে লিপ্জেল লাগিয়ে

যারা ইয়ার্কিতে মত্ত

তারা ছুঁতে পারে না প্রদীপ,

নয়নে মাখতে পারে না দীপাবলীর আলো

তাদের পায়ের তলে অন্ধকারের দুর্গন্ধ।

সব এড়িয়ে সে রোদন দহনে পুড়েই

জ্যোৎস্না সাজায় কার যেনো চরণামৃত মাখানো পদ্মে

অতএব তাহাকে গ্রহণ করো।

কৃষ্ণ নাচে রামও নাচে

দীপাধারে মন দে

নাচতে নাচতে নূপুর ছিঁড়ে

হ্লাদে নামে সন্ধে।

অতএব তাহাকে গ্রহণ করো

তারা উজ্জ্বল হলেই অমাবশ্যা ঘনায়

সন্ধ্যে তারায় রোদ নিভে যায়

পরদিন ভোর হবে বলে

অতএব তাহাকে গ্রহণ করো।

সিলেবাস
আজিজুল রমিজ

এই অন্ধের দেশে,বেশ আছি অন্ধের বেশে
আছে আদর্শ বাল্যশিক্ষা
হও চৌকস, অন্ধতষ্কর;
কাঁধ ঝুলে পড়া বাবারা যেমন
সামাজিক প্রাণী।

মানুষের মতো ছুঁতে চেয়ো না জীবন
এখানে ঋজু মেরুদণ্ড ভেঙে পড়ে
নুয়ে পড়ে, গুঁড়িয়ে যায়;
নির্ভীকের পায়ে পায়ে বসানো হয় পাথর
বইতে পারবে না একা তুমি
এতোখানি আগুন নিশ্বাস।

বলো কখনো বলবে না  –
ভুল ছিল আমাদের ইতিহাস,ভূগোলের পাঠ
আমাদের মহামান্য রাজারা চাটুকার
লুটেরাদের হাতে খেলনা।

কখনো যাবে না তুমি দিন বদলের মিছিলে
ফুলের পাশে ফুল হয়ে ফুটবে না
রোদকে ভাববে প্রতিপক্ষ
প্রতিজ্ঞা করো প্রিয়তম
দুপায়ে পিষে মারবে যাবতীয়
মানবিকবোধ

মেনে নাও তোমার ধর্ম,তোমার সমাজ
তোমার কৌম অহংকারই শ্রেষ্ঠ ;
মহামান্য শব্দটির সাথে আপোষ করতে শেখো
প্রভুভক্ত কুকুর হতে পারা
বড়ই সৌভাগ্যের আজ!

বিচ্ছিন্নতা

তীর্থঙ্কর সুমিত

না বলা কথা
সন্ধ্যার অস্তরাগে
নামিয়ে আনে একমুঠো বিষাদ
ফেলে আসা আত্মকথা
আমায় টেনে নিয়ে যায়
অনন্ত পৃথিবীর বুকে
অজগরের তাড়ায়
বেড়ে উঠছি প্রতিদিনের আমি
জল বাতাস
একের বিচ্ছিন্নতা
নিয়ে আসে সাজানোআমিতে

উপভোগের আর এক নাম বিচ্ছিন্নতা।

অন্ধ মানুষের ঘুম
জাফর ওবায়েদ

এসো আরেকটু ছায়া হই, নিজের মাপের
ছায়াবাজ, স্বপ্নবাজ পুতুলের তার বেশি কীইবা করার থাকে?
আলুসিদ্ধ হচ্ছে অপার ত্যাগের তন্তুবোনা প্রিয় মানচিত্র
কারও কারও মুখে লেগেছে পোড়াআলুর স্বস্তিকর স্বাদ
কারও কারও কণ্ঠে আবার অসহ্য আহাজারি
কোনও পড়পড় অগ্নিদগ্ধ ঘরে যেমনটি হয়।
এরই মধ্যে প্রলুব্ধ হাতে ওরা টেনেহিঁচড়ে
নিকষ অন্ধকার আমাজনমুখে নিয়ে যাচ্ছে আমাদের সম্ভাবনা।
আকাঙ্ক্ষার সূর্যোদয় প্রত্যাশী মানুষ
দিগ্বিদিক ছুটে
পায় না কিনার, তরঙ্গাকুল জীবন সমুদ্রের
ঘরগেরস্থালির শরীরে তাই অনাত্মীয় ভূষণ, অলীক বসন।
গোধূলির রং চুয়ে পড়ে ফুটন্ত রাতের কুসুমিত বারান্দায়
ওরা দেখে না, আড়ালেআবডালে থেকে যায় আলোকের আহবান
অন্ধ মানুষের ঘুম আর জেগে থাকা সমান সমার্থক।

কাঁটাতারে কিছু কথা 

মেহনাজ মুস্তারিন 

 

মনে হতে পারে শুধু আমিই চলে গেছি

তুমি রয়ে গেছ

যেভাবে বৃক্ষ দাঁড়িয়ে থাকে!

এমনও কি হতে পারে?

আমাদের দিনগুলো ক্রমেই জলাবর্তে 

আটকে পড়ছে 

কিছু অনর্থক কথা অর্ধছিন্ন ভোরের আলোয় অথবা

আমরা নিঃশব্দ কোন জেদের ঘরে করছি বসবাস!

বস্তুত: অহংকারের নেশা আমাদের 

কাঁটাতারে জড়িয়ে রাখে 

এরপর যে যার গন্তব্যে ফিরে যাই 

হয়তো একে অন্যের গভীরে অনুপ্রবেশ করি 

খুঁজি, আলো ছায়া রোদ বৃষ্টি ঝড় 

অথবা ঝর্নার ঝিরঝির নির্লিপ্ত ধারা…. 

আনমনে হয়তো ডুবে থাকি অথবা 

এক দীর্ঘ হয়ে ওঠার খেলায় মত্ত হই 

সেটাই জানি না।

মহাত্মন 
নুসরাত সুলতানা 

আপনি যদি আমাকে সত্যিই শাসন করতে চান
আপনাকে বুঝতে হবে তেরোশত নদীর স্রোতের স্বরলিপি।
অবশ্যই জানতে দূর্যোধন কেন দ্রৌপদীর বস্ত্র হরণে ব্যর্থ হল।
মমতার চোখে তাকিয়ে দেখতে হবে কৃষকের দেহের ঘাম,
শুনতে হবে আমার শ্রমিকের হেইও..
আপনাকে ভালোবাসতে হবেবাঙালি রমণীর পহেলা বৈশাখের
হাত ভর্তি লাল চুড়ি, কপালের টিপ।
যদি সত্যিই আপনি সুশাসন আনতেই চান
আপনাকে ভালোবাসতে হবেমসজিদ থেকে ভেসে আসা
আযানের সুর, মন্দিরের উলুলুলু, গীর্যার ঘন্টাধ্বনি।
আপনাকে চিনতে হবে বারো ভুঁইয়া, প্রীতিলতা, সূর্যসেন
সালাউদ্দিন, রুমি, নূরু হোসেন, সাঈদ..  সকলকেই।
আপনাকে বুঝতে হবে রবীন্দ্রনাথের কপালের ভাঁজ
নজরুলের গভীর সরল বিদ্রোহী   চোখ, আবু সাঈদের চওড়া সাহসী বুক
আমি এক নাতিদীর্ঘ শরীরের ক্ষনজীবী বাঙালি।
পাট শাক আর ডাল দিয়ে ভাত খাই,
ইলিশ পেলে খুব খুশি হয়ে যাই, পুঁটি হলেও চলে যায়।
কিন্তু ৫২, ৬৯, ৭১, ৯০ এবং ২৪ সাক্ষী আছে
আমার  সৎ সাহস  আর ভালোবাসার শক্তি
মোটেও ক্ষীনকায় নয়।
তাই শাসন যখন করবেন মহাত্মন..
বাঙালির ইতিহাস, ঐতিহ্য আর সাহসকে
ভালোবেসেই করবেন
নইলে….

 

 

তোমার চাওয়া, তোমার পাওয়া 

দিলীপ কুমার মধু,

 

গাছের যে ডাল সবচেয়ে উঁচু 

সেই ডালটিই ধরো 

সেই ডালেরই ফলফুলকে 

তুমি পুজো করো  

 

গাছের এক ডাল নীচে আছে 

খেয়াল রাখো সেটা !

নাকি তুমি মনে ভাবো 

সামান্য ডাল এটা। 

 

কিন্তু দুডাল গাছেরই তো 

ফারাক কেন হবে ?

তোমার সংবিধানে বুঝি 

এই নিয়মটা রবে !.

 

শোক সংবাদ
আলী সিদ্দিকী

আমাদের প্রথম সাক্ষাতের খোলা মাঠে
আজ গিয়ে দেখি
সেখানে কোনো মাঠ কিংবা সবুজ নেই
সেই ফুল ভারানত গাছগুলোও নেই
মাথা উঁচিয়ে দাঁড়িয়ে থাকা
রোদের পাহারাদার ঝাকড়া গাছেরা উধাও
পুকুরের যে পাটাতনে বসে
তুমি জলে পা ডুবিয়ে উচ্ছ্বল হতে সবসময়
সেই পুকুরের কোনো চিহ্ন নেই
তোমার প্রিয় সেই কৃষ্ণচূড়া গাছটিও নেই
তোমার আরো প্রিয় ছিলো
পাখিদের কলরব
এখানে একটা চড়ুইর দেখাও পেলাম না
যেখানে যেখানে
তুমি উচ্চকিত ছিলে প্রাণময়তায়
সেসব জায়গায় জমাট বাঁধা নীরবতা
খটখটে শূন্যতার বসতি
ঠিক আমাদের ভালোবাসার মতো মৃত।

 

 

সেইসব রাস্তাগুলি

আশীক রহমান

 

একদা আমাদের রাস্তাগুলি ছিল নদীরই মত,
এঁকেবেঁকে চলা, তাড়াহুড়া নাই! কোথাও দ্রুতলয়,
কোথাও মন্থর, কোথাও অন্য রাস্তার সাথে
খানিক মোলাকাততারপর আবার চলা!
*
রাস্তাগুলির কোথাও কোথাওবা ছিল বটের
ছায়াঘন মায়াময় বাঁকের জাদু,
এড়ানোকঠিন একটু জিরায়ে নেওয়ার আহ্বান!
রাস্তাগুলি শুধুই গন্তব্যে পৌঁছানোর উপায়মাত্র ছিল না,
ছিল আরও কিছু, ছিল পথ চলার আনন্দ!
*
একদিন রাস্তাগুলি একঘেঁয়ে আনন্দহীন
সড়ক হয়ে গেল। পাশাপাশি সমান্তরাল সড়কগুলি
সোজা চলে গেল ডেরায়, কোনও জড়াজড়ি নাই,
কোনও মনকেমন করা বাঁক নাই!
আমার মন কেমন করে সেইসব
হারায়ে যাওয়া রাস্তার তরে!

গণতন্ত্র আমার সন্তান 

তূয়া নূর

জগতের সবচেয়ে ভারী বস্তু কী জানো?
পিতার চওড়া কাঁধে সন্তানের মৃত দেহ।
এই ভূখণ্ডের স্বাধীনতা আমার বাবা, মা, ভাইবোন
অসংখ্য মানুষের সন্তান,
আর গণতন্ত্র?
স্বৈরাচারের পুলিশ ট্রাকের চাকায় জীবন কেড়ে নেয়া
জাফর, জয়নাল, মোজাম্মেল, আইয়ুব, কাঞ্চন দীপালী সাহার সন্তান।
এই গণতন্ত্র রাউফুন বাসুনিয়ার সন্তান
বুকে পিঠে পোষ্টার আঁকা নূর হোসেনের সন্তান।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়র চত্বরে গুলিতে নিহত ডাঃ শামসুল আলমের সন্তান।
স্বাধীনতা আসেনি বিনামূল্য
তেমনি গণতন্ত্র,
সেই গণতন্ত্র আঁতুড় ঘরেই হয়েছে বার বার খুন।
এই গণতন্ত্র আমারো সন্তান,
শত বছর ধরে চাওয়া
তেমনি তোমারো।
তোমাদেরও স্বজন।
লাশের কফিন আমার কাঁধে,
বয়ে নিয়ে চলা
আমার নিশ্বাস ভারী হয়ে আসে,
বন্ধ হয়ে আসে।

বাঁশ বাগানের মাথায় প্যাঁচার ভ্যাঙানি
রানা জামান


বাঁশ বাগানের মাথার উপরে
প্যাঁচার ভ্যাঙানি ম্লান করে দেয়
জোস্নার স্নিগ্ধতা নিবিড় মূহুর্তে
শুয়াপোকা খেতে থাকে প্লাস্টিড

গিটারের তার ছিঁড়ে রবীন্দ্র সঙ্গীতে
ছন্দ পতনের ঘুণ কেটে চলে
গালিবের মহাকাব্য সেই ক্ষণে
ছনা পড়া দুধে আসে না রুচি যে!

চাঁদের কী আসে যায় ছায়া লেগে
জোস্না ব্যর্থ হলে কোনো শুভক্ষণে
ধার করা আলো পেয়ে উদ্ভাসিত
মর্ম মর্মে এলে প্রশান্তি নিউরনে।

“September On Jessore Road” but July!

শিলু সুহাসিনী 

 

লাশের স্তুপের নিচে চাপা পড়ে গেছে

আমাদের বিবেক মানবতা দেশমাতৃকা

আর এত এত লাশের ওপারে

আড়ালে ঢাকা পড়ে গেল তোমার মুখ

আর আমাদের খণ্ডকালীন সুখ

সুখগুলো এখন হাহাকারের কবিতা!

আর আমরা

পরিণত হলাম গিনিপিগে

বুলেটের তেজ ঠিকঠাক আছে কিনা

তা ঝালাই করে নেওয়ার ক্রমাগত

পরীক্ষানিরীক্ষা অনায়াসেই

চালিয়ে নেওয়া যায়

আমাদের ওপর

আমরা যে সাধারণ!

আমরা

সাধারণ ছাত্র

সাধারণ নাগরিক

সাধারণ কবি

সাধারণ শিল্পী

আমরা আলুপটল বেচি

মোড়ের হোটেলে পরোটা ভাজি

ছাপোষা অফিস করি  টা বা আরও বেশি।

আমাদের

বুলেটের ঝঞ্ঝাট এড়িয়ে চলার

কোনো লোগো জানা নাই!

অথবা

লোগোহীন পাচাটার দল কী উপায়ে

আগাছার ন্যায় পাতাগুল্ম ছড়িয়ে

তরতর করে গজিয়ে ওঠে

সেই ব্রম্মশ্লোক জানা নেই

তোমারআমার।

আমরা সবাই

বুলেটের সম্মুখে বুক চিতিয়ে দাঁড়ানো

অকুতোভয় আশ্বাসী আবু সাইদ!

আমরা বোকাচোদার দল এখনো বিশ্বাস করি

তেপ্পান্নটি বছর….  আমরা পুরোপুরি স্বাধীন!

দেশমাতৃকার জঠরে ঠাঁই নেওয়া

আমরা একই মায়ের সন্তান

ভাই কী ভাইয়ের বুকে

বুলেট ছুঁড়তে পারে!

আমার বিশ্বাসে নাহয় ভুল ছিল

কিন্তু

আমার জানালার এপারে

ছোট্ট শিশুটির কী দোষ ছিল?

ছাদে খেলতে গিয়েছিল যে

আমার অবুঝ শিশুটি

তার?

বাবামায়ের সাথে বারান্দায় থাকা

আমার শিশুটি কেন মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়লো?

বিশচব্বিশে এসে আমাদের আহাম্মকি

ভুলগুলো ঝালমুড়ির ঠোঙ্গা উপচে

খিলখিলিয়ে হাসে!

অ্যালেন গিন্সবার্গ

একাত্তরেরর সেপ্টেম্বরকে

যশোর রোড দিয়ে

হাঁটিয়ে কলকাতা নিয়ে গেছেন

কবি!

চব্বিশের জুলাইকে

আমরা

কোন রোড ধরে

হাঁটিয়ে কোথায় নিয়ে যাবো?!

নষ্ট প্রেমিক

অন্তর চন্দ্র 

 

 

সব প্রেমিকা খাদ্য হয়ে যায়

                       নষ্ট ম‌ওসুম জুড়ে 

                                 

রাজকীয় বংশাল কামুক 

দাঁতাল মাংসের গুমোট ছিঁড়ে 

                         অনাদায়ী সুদে 

                              পরজীবী সুখ

 

ঘাটেমাঠে দানবতন্ত্রের ভেতর 

পরিমিত আহার 

ভোগ্য নারী;

 

রতিশাস্ত্রের নিয়মিত চর্চা 

দানবতন্ত্রে মশগুল

ঘরেবাইরে দুঃশাসন

রাস্তায় রাস্তায় ব্যারিকেড লেন 

                  গন্ধ শুঁকে শকুনিরা       

 সব প্রেমিকা খাদ্য হয়ে যায়                        

              দাঁতাল শুয়োর পুষে

একজন কেউ ছিল
আকিব শিকদার

ক্ষীণ দুর্বল কণ্ঠ; শুধায় না কেউ– ‘ক্লান্তি লাগল নাকি?’
রক্তবর্ণ চক্ষু; বলে না কেউ– ‘অসুখ বাধল কি গো!’
ফ্যাকাশে মুখ; চায় না জানতে কেউ– ‘পকেট বুঝি খালি?’
হারিয়ে গেল, ছায়ার মতো যে জন ছিল সাথে
মিছিল শেষে ঘরে ফেরা অজুত জনতার স্রোতে।
কাঠ চৌচির জ্বর; আসে না কেউ জল ন্যাকড়া হাতে
মাথাব্যথায় মরি; বলে না কেউ– ‘কপাল চাপড়ে দেবো?’
কঠিন পীড়ায় প্রলাপ বকি; বসে না কেউ শয্যাকোণে
হারিয়ে গেল, ছায়ার মতো যে জন ছিল পাশে
দূর আকাশের রামধনু আকাশেই গেল মিশে।
নিঝুম রাতে নিঘুর্ম; দেয় না তো কেউ হাত বুলিয়ে চুলে
আঙুল কাটে যদি; ছেঁড়ে না কেউ নিজের অঁাচলখানি
পিছু ডাকি যবে; তাকায় না কেউ ভালোবাসার চোখে
হারিয়ে গেল, ছায়ার মতো যে জন ছিল নিভুর্ল
ধুলার ধসে ধূসর হলো রঙিন রঙ্গা সব ফুল।

ডিভোর্সের পরে

অনন্ত পৃথ্বীরাজ

 

 

ঘর থেকে পালিয়ে বেড়ানো খরগোসের ঢেরায়

শেয়ালেরা বাসা বাধে

অনুশোচনায় পাথর গলে না ঠিকই, তবে মনের পারদ মলিন হয়!

নিঃশব্দে নিজেকে নিঃশেষ করে দেওয়া কোনো স্থায়ী সমাধান নয়

তারচেয়ে বরং দেয়ালে পিঠ ঠেকে গেলে ঘুরে দাঁড়াও।

Add Your Heading Text Here