You are currently viewing ঈর্ষার ঘর-সংসার/ জুঁই মনি দাশ

ঈর্ষার ঘর-সংসার/ জুঁই মনি দাশ

ঈর্ষার ঘর সংসার

জুঁই মনি দাশ

 উমার ‍একুশ বছরের মনটা শুধু রান্নাঘরে বন্দী থাকতে চায় না, হাঁসফাঁস করে একটু মুক্ত বাতাসের জন্য। রান্নাঘর, বসতঘর, গোয়ালঘর, কলতলা, পুকুরপাড় রেখে বাড়ির পেছনের ঘন বাঁশঝাড়, ঝোপঝাড় আর তারপর যে পানের বরজ সেখানে ঘুরে বেড়াতে চায় উমার উদ্দাম, উন্মাতাল, টলোমলো মন। মনটা টলোমলো হলেও শরীরে সে ভার-বাড়ন্ত। এই শরীরটাই উমার আজন্মের শত্রু।

মাত্র এগারো বছর বয়সেই উমা কচি লাউয়ের ডগার মতো বেড়ে উঠেছিলো। প্রথম ঋতুস্রাবের ধাক্কায় ওর শরীরটা সাবালক হয়ে উঠেছিল কিন্তু মনটা তখনো গুটি পোকার মতো শৈশবেই আটকে ছিলো।এ যে কি যন্ত্রনা! তা শুধু ভুক্তভোগীই জানে। চিল-শকুনের অত্যাচারে উমার শৈশবটা আটকে গেল স্কুল আর বাড়িতে।প্রতিদিন একটু একটু করে ছোট হতে লাগল বিচরনের আকাশ।পাঁচ ফিট সাত ইঞ্চির ভরা শরীরে খাঁজকাটা প্রতিমার মুখ সবার চোখে ঘোর লাগিয়ে দিত।

স্ট্রোক করে বাবা যখন বিছানা বন্দী হলো উমা তখন ক্লাস নাইনের ছাত্রী।বিছানা বন্দী হওয়ায় উমার বাবার কাপড়ের ব্যবসায়ও ধ্বস নামলো।বেকার বড়দার উপর ভার পড়ল গোটা সংসারের।তিন ভাই দু বোনের মধ্যে উমা সবার ছোট। বড়বোনের বিয়ে হয়েছে বছর পাঁচেক আগে। বড়ভাইয়ের পড়া শেষ হলেও বাকি দুইভাই তখনও আনন্দমোহন কলেজে পড়াশুনা করে। ক্লাস টেনে উঠতেই উমার জন্য বিয়ের প্রস্তাব আসতে শুরু হলো। প্রথম প্রথম সবাই না করলেও ধীরে ধীরে ওর বড়দা রাজী হয়ে যায়।বড়দা মা-বাবাকে বুঝায় সংসারের যে অবস্থা তাতে কন্যাদায় থেকে যত দ্রুত মুক্তি পাওয়া যায় ততই ভাল।মা-বাবা মিনমিন করে না করলেও বড় ছেলের সিদ্ধান্তের বাইরে যাওয়ার সাহস পেলেন না।

এসএসসি পরীক্ষা শেষ হতেই ফাল্গুনের পূণ্য লগ্নে ষোল বছরের উমার বিয়ে হয়ে যায়  ত্রিশ বছরের শংকরের সাথে।শংকর ছয় ফিট লম্বা, সুর্দশণ।পুলিশের এসআই তাই শরীরও পেটানো কিন্তু গায়ের রং রোদে পোড়া তামাটে। উমার গায়ের রং পাকা সবরি কলার মতো হলুদ, চারপাশে সোনালী আভা ছড়ায়। বর-কনে যখন ছাদনা তলায় এসে দাঁড়ালো সবাই বলতে লাগল একবারে হরগৌরীর জুটি। বড়মামা বয়সের পার্থক্যের কথা তুললেও তা হালে পানি পেল না। ঠাকুরমা বললেন সোনার আংটি বাঁকা হলেও তা সোনা।তার উপর পাত্রপক্ষের কোনো লেনাদেনা বা চাহিদা নাই।

বিয়ের পর শাশুড়ি আকারে ইঙ্গিতে সন্দেহ প্রকাশ করে বলতেন বেয়াই-বিয়াইন তো বলে  দিল ষোল বছরের কচি কিশোরী, আমি তো দেখি পঁচিশ বছরের ভরা যুবতি। উমা তর্কে যায়নি। শ্বশুরঘরে তর্ক করে কোনো কিছু প্রতিষ্ঠা করা যায় না সে বুঝ উমার ছিলো্। মেয়েমানুষের জীবনে একটাই সার কথা, বোবার কোনো শত্রু নাই।মনটা মাঝে মাঝে বিদ্রোহ করে উঠলেও সে তা মুখে কখনও উগরে দেয়নি। বিয়ের দেড় বছরের মাথায় কোল আলো করে এল বিণায়ক। শ্বশুর-শাশুড়ির ছোট ছোট অভিযোগগুলো বিণায়কের হাসিতে ধুয়ে যেতে লাগল।  উমার চলাচলের পরিসরটাও একটু বড় হলো। শাড়ি ছেড়ে মেক্সি কিংবা রান্নঘরের সিদ্ধান্ত নেয়ার ক্ষমতা তৈরি হলেও নিজের জীবন নিয়ে সিদ্ধান্ত নেয়ার ক্ষমতা তৈরি হয়নি।

বয়সের পার্থক্য থাকলেও শংকর কতৃত্ব করতে চায়নি। সহজ সততায় শংকর উমার জীবনে বন্ধুর জায়গা নিয়ে নেয়।স্বামী সন্তান নিয়ে একত্রে থাকতে পারছে না, সে একটা দুঃখের কথা। কিন্তু শংকর নিয়ম করে প্রতি মাসে বাড়ি আসে।দূরত্বের দুঃখকে ভুলিয়ে দিতে নিয়ে আসে শাড়ি, গয়না, কসমেটিক, সেন্ট, আর শরীর থই থই করা আদর। শংকরের পোস্টিং এখন খাগড়াছড়ি, চাইলেও ছোট্ট বিণায়ককে নিয়ে সেখানে একা থাকাটা বুদ্ধিমানের কাজ হবে না।

মেয়েমানুষের জীবনে সুখের যে সংজ্ঞা সে সুখ উমার আছে। স্বচ্ছল, সুখী সংসার, বন্ধুর মতো স্বামী, ফুটফুটে শিশু, নিশ্চিন্ত-নিরুদ্বেগ ভবিষ্যৎ তবুও কি এক শূণ্যতা ‍উমাকে চারপাশে ঘিরে রাখে।এই নিশ্চিন্ত-নিরুদ্বেগ ভবিষ্যৎ ওকে কৈশোরের দাম দিয়ে কিনতে হয়েছে।কৈশোরের হাসি, আনন্দ, রাগ, অভিমান, খুনসুটির বিনিময়ে তৈরি হয়েছে চার দেয়ালের সংসার।প্রতিমার মতো মুখ ওকে খাঁ খাঁ রোদ্দুরে টো টো করে ঘাসফড়িঙয়ের পেছনে ছুটতে দেয়নি, শুনতে দেয়নি মাঠ-ঘাট-ঝোপ-ঝাড়ের ঝিঁ ঝিঁ পোকার ডাক, প্রজাপতির রঙিন ডানায় করে ভাসতে দেয়নি দিগন্ত জোড়া সবুজ মাঠে, গোধূলী বিকেলের সূর্যের আলো নদীর বুকে ডুবতে দেখতে দেয়নি। ক্রমে বিছিন্ন, গুটিয়ে থাকা মনটা কল্পনার ফানুস উড়িয়েছে পাহাড়ে, সমুদ্রে, র্নিজন বনে কিংবা মরুভূমিতে। কিন্তু বাস্তবতার নাটাইটা ধাম করে তাকে নিষ্ঠুর পৃথিবীতে নামিয়ে এনেছে।বাবার বাড়ির অনিশ্চিত ভবিষ্যতের আশংকার রং পাল্টেছে কেবল। নিশ্চিত মনে হলেও ভবিষ্যৎ আসলে না পড়া রহস্য উপন্যাসের মতো অনিশ্চিত আর রোমাঞ্চকর।

সৌর্ন্দয্যের বাইরে গৃহিনী উমার বিশেষ কোন যোগ্যতা নেই। ঘরকন্যায় তার মন বসে না।রান্নাঘরে সে এখনও শাশুড়ি মায়ের সহযোগী। বিণায়ক মানে বিনুর অধিকাংশ দ্বায়িত্বও শাশুড়ি মা পালন করেন। একবছর বয়স হতেই বিনু দাদু ঠাকুমার ঘরে শোয়।প্রথম প্রথম উমার কিছুটা মন খারাপ হলেও ধীরে ধীরে সে মেনে নেয়। শাশুড়ি সবাইকে বলেন, সংসারে মন নাই, কী যেন একটা উড়ু উড়ু ভাব। মুখে মুখে র্তক করে না বটে কিন্তু ভেতরে ভেতরে ঠাট আছে।সময়ে অসময়ে তিনি উমার বাবার বাড়ির অবস্থার কথাও মনে করিয়ে দেন।হুম, উমার বিয়ের পরেও তার বাবার বাড়ির অবস্থার কোনো পরির্বতন হয়নি বরং আরও খারাপ হয়েছে। তাই ঘন ঘন বাবার বাড়ি যাওয়া উনি পছন্দ করেন না। উনার ধারনা, শংকর লুকিয়ে ছাপিয়ে গোপনে শ্বশুর বাড়ি টাকা পাঠায়।

গতকাল বিকেল থেকে তুমুল বৃষ্টি শুরু হয়েছে। সারারাত ঝুম বৃষ্টি টিনের চালে ‍উদ্দাম ঝাপটাসহ নটরাজের প্রলয়ংকরী তান্ডব নাচ নেচেছে। আর বাইরে থেকে ভেসে আসা কদম, ছাতিম ও হাসনা হেনার গন্ধ উমা বারান্দার গ্রিলে দাঁড়িয়ে শুষে নিয়েছে যেমন চাতক শুষে নেয় প্রথম বর্ষার আঘ্রান।ঝরো বৃষ্টির এসব রাতগুলো উমার বড্ড ছুঁয়ে দেখতে ইচ্ছে করে।গ্রিলের বাইরে হাত বাড়িয়ে  বৃষ্টিতে আর কতটা ভেজা যায়, সারা শরীর মন এই  তান্ডবে ডুবিয়ে দিলে না কিছুটা তৃষ্ণা মিটত। একবার ভেবেছিল শাশুড়ি মায়ের কাছ থেকে চাবিটা চেয়ে নেবে, পরে মনে হলো এত রাতে বয়স্ক মানুষকে বিরক্ত করে লাভ নাই। রাত তিনটার দিকে শংকরকে কল দিয়েছিল, শংকর প্রথমে ভড়কে গেলেও পরে ওর পাগলামিতে প্রশ্রয়ের হাসি হেসেছিল। ভোরের দিকে বৃষ্টি কিছুটা ধরে এলে, উমা বিছানায় গিয়েছিলো। তাই সকাল আটটায় ওর ঘুম ভেঙ্গেছে শাশুড়ির ডাকে।

শাশুড়ি কড়া কথা না বললেও থমথমে মুখ দেখে উমা কিছুটা দমে গেল। তাই কথা না বাড়িয়ে তাড়াতাড়ি স্নান করতে চলে গেল।স্নান সেরে ঠাকুর ঘরে পূজা সাজিয়ে যখন বের হবে তখনই ননদ আর নন্দাই এসে হাজির।উমার একমাত্র ননদ শুক্লা হাসিখুশি হৈ হৈ আনন্দ ভরা মুখ। শুক্লা আর ওর বর অতীশ চলে আসায় সকালের গুমোট পরিবেশটা সহজ হয়ে এল।

শুক্লা মা আর বৌদি কে দেখে হেসে বলল, কেমন সারপ্রাইজ দিলাম বলো।

মা বিরক্ত হয়ে বললেন, এইটা কি ঢাকা শহর, একটু খবর না দিয়া আইলে আমরা কী দিয়া আদর যত্ন করি।

শুক্লা হেসে বলল, এত চিন্তার কিছু নাই, ঘরে যা আছে তাই রান্দ, তুমার হাতের রান্নার কতা মনে হইলেই জিব্বাত জল আইতাছে। রান্না-বান্না, খাওয়া-দাওয়া, হাসি-আনন্দে দুপুরটা কেটে গেল।

অতীশ জনতা ব্যাংকের সিনিয়র অফিসার, একটু গার্ম্ভীয থাকলেও অহংকার নেই। শুক্লা ঢাকার একটা প্রাইভেট কলেজে পড়ায়। ঢাকায় মোহাম্মদপুরে ওদের বাসা। বিয়ের মাস ছয়েক পর শংকর উমাকে নিয়ে বোনের বাসায় বেড়াতে গিয়েছিল। উমার সে কী উত্তেজনা, প্রথমবার ঢাকায় যাওয়া। শংকর একদিন থেকে চলে আসলেও উমা দিন পনের ছিল ননদের বাসায়।তিন রুমের সাজানো-গোছানো ফ্ল্যাট, নিরিবিলি একান্ত জগৎ ‍উমার ভালো লাগলেও দ্রুতই হাপিঁয়ে উঠেছিল।

অতীশ জানতে চেয়েছিল, বৌদি কলেজে ভর্তি হবেন কবে? শংকর তাড়াতাড়ি উত্তর দিয়েছিল, নতুন সংসার, নতুন পরিবেশ, মানায়া গুছায়া নেউক আগে পরে দেখা যাইব নে।অতীশ বলেছিল, তা ঠিক আছে কিন্তু পড়াশুনাটা তো চালু রাখতে হবে।শংকর বা শুক্লা কেউ আর কথা বাড়ায়নি। বিয়ের সময় কথাছিল, বিয়ের পর পড়াশুনা চলবে।সে কথা কেউ মনে রাখেনি, শংকরও না।উমা কয়েকবার শ্বশুরকে বলেছে, বাবা আমারে উন্মুক্ত থাইক্যা পড়ার ব্যবস্থা করে দেন। হেসে বলেছেন, হবে বউমা, বিনুটা আর একটু বড় হউক।।উমার মা প্রথম প্রথম মন খারাপ করতেন, এখন বলেন, এত সুন্দর সংসার তর পড়াশুনা দিয়া কী করবি। তুই তো আর চাকরি-বাকরি করবি না।তর ভায়েরাই পড়াশুনা কইর‌্যা একেকজন কী দিকগজ হইসে।

সবই ঠিক কিন্তু উমার শুক্লার স্বাধীন, স্বাবলম্বী জীবন ভালো লাগে। ভেতরে ভেতরে ঈর্ষা জাগে।এমনিতে শুক্লা দেখতে সাদামাটা কিন্তু চেহারায় একটা মার্জিত রুচি আর তীক্ষ্ণ বুদ্ধির ছাপ আছে। এছাড়া সবার সাথে মিশলেও কোথায় যেন একটা আড়াল থাকে। চাইলেও মনের দরজা শুক্লার সামনে খোলা যায় না। এত সুন্দর গুছিয়ে কথা বলে যে সবাই ওর গুনমুগ্ধ শ্রোতা।উমাও ব্যাতিক্রম না। উমা বুঝে শুক্লার জগতটা বুদ্ধি নিয়ন্ত্রিত ওর মতো আবেগসর্বস্ব না।

এরপর রাতটা কেটে গেল বিণায়ক আর সৌম্য মানে শুক্লার ছেলের খুনসুটি, ঝগড়া, আনন্দ ও মারামারিতে। ওরা বয়সে চারমাসের ছোট-বড়। সৌম্য বয়সে বড় হলেও বিণায়কের সাথে গায়ের জোরে পেরে ‍উঠছে না। তবু সবাই সৌম্যকে জিতিয়ে দিচ্ছে মামার বাড়ি বলে। কিন্তু বিণায়ক কিছুতেই তার জায়গা ছাড়তে রাজী নয়। দাদু-ঠাকুমা সবাই বুঝাচ্ছে সৌম্য তো কুটুম, কদিনের জন্য বেড়াতে এসেছে। কুটুমদের অসম্মান করতে হয় না। কিন্তু বিণায়ক একগুঁয়ের মতো বলতে লাগল, এটা চোট্টামি, অরে তুমরা ইচ্ছা কইরা জিতায়া দিতাছ, আমি মানি না। হঠাৎ উমা বিণায়ককে জোরে থাপ্পর দিয়ে বলল, বেয়াদব ছেলে, সবার লগে জিততে চাও, জাননা কেউ কেউ জন্মই লয় হারার লাইগ্যা। আনন্দময় পরিবেশটা থমথমে হয়ে উঠল। অতীশ পরিবেশটাকে সহজ করে দিয়ে বলে, বৌদি যান, বিনুকে নিয়ে ঘরে যান অনেক রাত হলো আমরাও ক্লান্ত। সাময়িক উত্তেজনার পারদ নেমে যাওয়ায় উমাও লজ্জিত হয়ে পড়ে। কথা না বাড়িয়ে সে তার ঘরে চলে যায়।

পরদিন সকালে চা নিয়ে শুক্লার ঘরের সামনে যেতেই উমা শুনতে পায় ওরা দুজন চাপা গলায় তর্ক করছে। উমা কান পাততেই শুনে অতীশ হিসহিসে গলায় বলছে, তুমি বলবা না সরাসরি আমি বলব।শুক্লা চুপ, অতীশ বিরক্তি নিয়ে বলে টাকাটা আমার দরকার আর তুমার বাবার পেনশনের টাকাটা তো পড়েই আছে, বিয়ের সময় তো আমরা কিছু দাবী করিনি।  শুক্লা এবার রেগে গিয়ে বলে, ছোটলোক সেটার উসুল কি এখন তুলতে হবে, গত ছয় বছর ধরে এসব শুনতে শুনতে আমি ক্লান্ত হয়ে গেছি। যা ইচ্ছা তাই কর, আমি বাবার কাছে টাকা চাইতে পারব না।

তা পারবেন কেন, প্রাইমারি ইস্কুলের মাস্টরের মেয়ের অত ভাব মানায় না। আগামী মাসের ফ্ল্যাটের ইনস্টলমেন্টের আগে আমার টাকা চাই, বাপ-ভাই যার কাছ থেকে পারেন যোগাড় করেন।আমার সময় নাই। আমার বন্ধু-বান্ধবরা সব ফ্ল্যাট বা প্লটসহ বিয়া করছে, আর আমি পাইছি নীতিবাগীশ ফকিন্নীর মেয়ে, একটানা কথাগুলো বলে থামে অতীশ।

শুক্লা শীতল কন্ঠে জানতে চায় যদি টাকার ব্যবস্থা না হয় তাইলে কী হবে?  অতীশ নির্বিকার দৃঢ়তায় উত্তর দেয়, তাহলে নিজের পথ নিজে বেছে নাও।

উমা আর দাঁড়াতে পারে না, সে রান্নাঘরের দিকে হাঁটা দেয়। চোখের সামনে ভাসতে খাকে শুক্লার করুন মুখ আর দুধ সাদা ধবধবে টাইলসে মোড়ানো চৌদ্দশ স্কয়ার ফিটের ফ্ল্যাট। সাজানো ড্রয়িং রুম আর কোমল কার্পেটের নিচেও আরামে ঘুমিয়ে থাকে ফনা তুলা সাপ।যেমন উমার সুখের সংসারের ভেতর হোলি খেলে ঈর্ষার দীর্ঘশ্বাস।