আনিসুর রহমান অপু
একগুচ্ছ কবিতা
আজ আমি অন্য কেউ
কালও তোমার কাছের মানুষ ছিলাম আ
একাদশী-দ্বাদশীর চোখ ফাঁকি দিয়ে
ডুবে ডুবে জল খাওয়া নয় ,
দিনের আলোয় আর রাতের বৃষ্টিতে দ্বি
না-ঘুমানো নগরীর অলিগলি আর শরী
জানে হাডসন আর পূর্বা নদী , কর্ণফুলি আর কীর্তনখোলার স্রোতধারা
এ্যালিভেটর , সিঁড়িতে, ছাদে –
স্বাধীন দেশের পতাকার মতো আমাদে
দোর্দণ্ড প্রতাপে কী-এক, জানান
সেই আমি আজ অন্য কেউ –
সহজেই যাকে পাশ কাটিয়ে চলে যা
চোখ থেকে চোখ সরিয়ে নেওয়া যায়
কাছে আমিই ডাকিনি কেবল, মৌ ।
সায় ছিল তোমারও ষোলোআনাই ;
হৃদয়ের আঁচে শীতার্তকে দিয়েছি
রাধার প্রশ্রয় ছাড়া বাঁশিরই বা
অথচ নির্মম আজ তমালবনের সেই তু
ব্রজের রাখাল পুড়ে যায় খরা ও বি
এমনভাবে এড়িয়ে যাচ্ছ তাকে যেন
কী অদ্ভুত দেখো এই তুমি কালও কী
সে-ই অপাংক্তেয় আজ গাঢ় উপেক্ষার !
এতো দ্রুত সবকিছু ভুলে যেতে নেই
যতো বাধা , যতো প্রতিকূলতাই থাক
বিমুগ্ধ বিস্ময়ে টেনেছিলে কাছে যাকে
সেই তাকে এমন বিপন্নতায় ফেলে গে
॥॥॥॥॥॥॥॥॥॥॥
অক্ষরের ভাঁজে
চাই বা না চাই শেষাবধি অন্যের হা
চলে যায় ইচ্ছের লাগাম,
আগাম খবর দিয়েও আসেনি মেঘ!
অবুঝ আবেগ কখনো ভেতরে রাখে চোখ,
কখনো উদাস মুখে বাইরে তাকায়–
কার আসার আশায়,কোন পূর্বাভাসে,
কেন চোখ জলে ভাসে!
প্রতিটি পাণ্ডুর দিন দুয়ারে দাঁ
নদী বা স্রোতের মতো সময়েরা স্বতস্ফূর্ত নয় চিরকাল,
খুশিয়াল ঢেউ কখনো নিমেষে পার হয়
কখনো পাথর,নিস্তব্ধ অনড় —
স্মৃতি শুধু দূরগামী —
ফেলে আসা পালক কুড়িয়ে গুজে রা
নির্জন স্টেশনে সেই শেষ চোখাচো
দেখাদেখি তারপর ভুলেছে পথেরা ,
যে গানের অন্তরা লেখেনি কেউ,ভু
ডাকনাম–তার স্বরলিপি
বুকের তোরঙ্গে তবু কেন তোলা থা
॥॥॥॥॥॥॥॥॥॥॥
আরেকবার নিঃস্ব-হওয়ার প্রতীজ্ঞা
দেখা হবে- সমুদয় জরা-জট শেষে এ
একদিন দেখা হবে সুদিনের চৌরাস্
দিনগুলো হেমন্তের কৃষকদের ধৈর্য
রোমাঞ্চকর
অতঃপর দেখা হলো বহুস্তর খরা-ক্
স্যাঁতসেতে বিষণ্ণতায় সাঁতার
দেখা হলো কিন্তু পথেরা পথের জা
তীব্র অপেক্ষার দিনগুলোকে অথচ বু
হাডসনের হলুদ ঢেউ কখন যে বদলে দি
এমনকি এতোদিন বাদে দেখা হওয়া ‘হা
বেকার ছে
অযত্ন ও অবহেলার প্রাবল্য
তবুও নীরব , প্রতিবাদহীন – কোন
ভিখারির মতো অনুগ্রহ কুড়িয়ে কা
কিছুটা
দাঁড়িয়ে থাকো যা
দূর দূর করে তাড়িয়ে দিলেও ফিরে
একা একা কাঁদো-হাসো কিংবা নিজেই
তুমি ছাড়া এ গ্রহের কেউ জানে না কেন যে
কাঙালের মতো এই পড়ে থাকা —
পড়ে থাকো অন্তত আরেকবার ,
আরেকবার নিঃস্ব-হওয়ার প্রতীজ্ঞা
॥॥॥॥॥॥॥॥॥॥॥
ভেতরকথার গুমরানো গান
কী বলবো ঠিক পাচ্ছি না থৈ ,
শব্দ খুঁজছি–গভীর ব্যথা সংবে
ভেতরকথার গুমরানো গান–
কারে বোঝাই, বুঝবে কে আর !
এমনতর স্বপ্নগাথার চিত্রকল্পে ব্যা
বিষ গেঁথে দেয় কাছের মানুষ !
শেকড় ছেঁড়ার অপখেলায় ঘরের ইঁ
দুধকলাতে পুষছি যাদের বুকে ধরে-
কেমন করে তুলে আনি, সে সব ব্যথা
অবশ-বিবশ অনুভবের বদ্ধদুয়ার
গুমোট ছাড়া ছড়ায় কিছু! বুঝবে
অযত্ন আর অবহেলায় গভীর বোধের কব
ধুলোর বসন পরেই শেকড় জুবুথুবু
কাঁদছে ভীষণ, কাঁদছে করুণ অন্তঃ
গরু মেরে কলজে খাওয়া স্বমানুষের
কোন কলমে আঁকবে কবি ?
ফুটবে ছবি কোন তুলিতে, কোন রঙে
উজাড় করে মুঠোর জীবন আলো কেনা
সেই আলোও ফানুস এমন!
দেখে সবাই যখন নামে অশ্রু অঝোর
কিংবা হাসির রোদ খেলে যায় প্রিয়
ক’জন দেখে বুকের ক্ষরণ, বিরল ব্
খুব নীরবে গুমরে মরে নিজের ভেতর
আপন আঁধার আকাশপানে ছুঁড়তে বা
না হয় থু থু নেমে আসে নিজের মু
॥॥॥॥॥॥॥॥॥॥॥
আনিসুর রহমান অপু
নিভৃতচারী এক কবি। তিনি বাস করেন
জীবনানন্দ দাশের বিচরণক্ষেত্রে
কবিতার
সুহৃদ শকুন এবং ভালোবাসা
অন্তরে নদী নিরবধি
দু’চাকার দুপুর
মৌমিতা এবং প্রিয় নদীগুচ্ছ
অবধারিতের অপেক্ষায়
সিদ্ধান্তহীন শিরদাঁড়া~ (সনেট সংকলন)
প্রার্থনারঙের প্রেম~ (সনেট সংকলন)
নৈঋতের নহবত
ভুল রঙ, তুলির তামাশা
রুবাইয়াত-ই রূপনগর
নৈঃশব্দ্যের নহবত
পাতাঝরার প্রান্তকথা
উপন্যাস :
কণাবউ
কাগজের বউ
ভালোবাসার এপিঠ ওপিঠ ।