আজিজ কাজলের কবিতা…
থই-বর্ষার আগুন
মায়ের ছড়ানো দিঘির কাছে, জমা আছে শত-সহস্র কান্নার মটকা।
খুব খাটুনি করে, একটি দীর্ঘশ্বাস আঁকতে গিয়ে বেহুঁশ হয়ে ওঠি—
থই-বর্ষার আগুনেও ফুলে ওঠেছে তাহার শিখর-হিমাদ্রি চোখ;
মা, আবারও অস্থির ঘামে কিনে নেব তোমায়; গতরের শত জড়তা কেটে বানাইছি
নাও-পানসির ঘোল—
এই কর্কট শ্রাবণের ফুল-স্প্রিড আগুনে কিছুই দেখি না, মহাজাগতিক ধোঁয়া দেখি—
অথচ মায়ের নিড়ে ফেরার কোন গল্প শুনি না!
অলিম্পিক ব্যাটারি
অলিম্পিক ব্যাটারির মায়া-শক্তিতে কেঁপে ওঠে আধা ইঞ্চি রেডিওর কঙ্কাল শরীর।
বলপেনের ধোলাই হাতে ঘুরছে ঘরভর্তি বই, মাকড়ের নকশা। বাংলা ছায়াছবি তে
মায়ার শেকড়—
“হায়রে মানুষ রঙিন ফানুশ দম ফুরাইলে ঠুশ্,কখনো-আবার কৌতূহল বশে রেডিওর ঘাট
সরালে
চীনের চেঁ-চিঁউ চিঁং-চিঁং আওয়াজ— অদ্ভুত কিছু আনন্দ প্রবাহে হারিয়ে যাওয়া
এন্ট্রান্স পাশ করা যুবক প্রাচ্যে গিয়ে হাই হ্যালোতে কাতর, জারজ গলায় তার
ধরা আছে সুরের বর্তমান—
হায়, আমি আসকর নই, মি. অ্যাজকর!
রূপালি ছই
রূপালি ছই-নদীর বেমানান স্রোতে, বিমূর্ত ছায়া ধরার চেষ্টা করে যাচ্ছো,
অসম্পূর্ণ ভুল বানানের গান গাইছো।
চিত্রফুলে আঁকা গাঁও, বঙ্গ-পা’র জয়নুল, বড় বান্ধা ধ্রুপদি-সুলতান, কাইয়ুমের
অবিকল চিহ্নধারী তুমি
আপন মনে বয়ে দাও মায়া ফেনার ঢলু-সবুজ চোখ।
মাঝে মাঝে হয়ে যাও অধীর ছাওয়ালের নাগর-পুত; মাচাং লতার ভুল ডালে লতিয়ে ওঠো
সবুজ সুতার ডগায় দেখো শাশ্বত নোঙর— পথের পাঁচালি ভেঙে গরুগুলো যতই বাড়ির
কাছে আসছে,
ছবিতে বাঁধা সাতকাহনগুলো জলশুন্য-বাষ্প হয়ে উড়ছে।
*************************