You are currently viewing অলৌকিক সরীসৃপ – রওশান ঋমু

অলৌকিক সরীসৃপ – রওশান ঋমু

ফরিদ দুপুর বেলা বাড়ির পাশের ক্ষেত থেকে বড়সড় দুইটা মুলা তুলেছে। বসন্ত বাতাসে  মুলার সবুজ লম্বা পাতা দুলছে, সেইসাথে দুলছে ফরিদের হৃদয়। গতরাতে রাণীকে পেয়েছে খরতর স্রোতের মতো।  রাণীদের বাড়ির দক্ষিণে  গোয়ালঘর; তার পাশেই ঝাঁকড়া কুলগাছ। বাড়ির দক্ষিণকোণে জোস্নায় কুলগাছের ছায়া  আলোআঁধারিতে এক মায়াপুরী করে রেখেছে। সন্ধ্যায় গরু গোয়ালে ঢুকে গেলে  এ দিকটায় কেউ তেমন একটা আসেনা। সেই হিরন্ময়ক্ষণে জ্যোৎস্না  মাটিতে নারকেল পাতার নকশা বুনে রাখে। তার উপর দাঁড়িয়ে  ফরিদ  রাণীর বেনী বাঁধা  চুলে গন্ধতেলের ঘ্রাণ নেয় প্রাণ ভরে।  ফরিদের উত্তপ্ত ঠোঁট রাণীর চিবুক ছুঁয়ে দেয়।  রাণীর হাত সাপের মতো ফরিদের কোমর  পেঁচিয়ে  ধরে।    রাণীর শরীর যেন  হাওয়াই মিঠা এখনি গলে গলে পড়বে ফরিদের লোমশ বুকের উপর। রাণীর শরীর  সাগরপাড়ের উষ্ণ আদ্র বালির মতো ঝুরঝুরে নরম। ফরিদ ভাবে রক্তের ভেতর এ কিসের চাষবাস!

হলুদ শাড়ি পরা ফরিদের বউ ফাতেমা,  চিৎকার করা ছাড়া কথা বলতে পারে না। পান চিবাতে চিবাতে দাঁত কালো করে ফেলেছে। রুক্ষ চুলে উকুনের অভয়ারণ্য। সকালে ‘ওঁচা ‘দিয়ে উত্তরের পুকুরের মাছ ধরেছে, চারটা টাকি পেয়েছে সে।  মাছগুলি কেটে বসেছিলো ফরিদের অপেক্ষায়, সে ক্ষেত থেকে ফিরলেই রান্না বসাবে। কিন্তু ফরিদের দেরি দেখে বাপ বাপান্ত করে গাল দিতে দিতে হনহন করে হেঁটে যায় মুলা ক্ষেতের দিকে।

” এইহানে খাড়াইয়া খাড়াইয়া কার বাল ছেঁড়তে আছো ? ক্ষেতে আইছো হেই কোন সমায়, আওয়ার নাম গোন্ধ নাই, আইজ মোর রান্দা লাগবে না? জোলা বরবা আনে কিদ্দা? ”

“ক্যান অইছে কি? একটা কাম হরতে সমায় লাগে, বইয়া রই নাই। নে তোর আনাজ, রান যাইয়া। ”

মধুর চিন্তার ফাটল থেকে ফরিদ নিজেকে তুলে আনে, বিরক্তিতে তার ভ্রু কুঁচকে ওঠে। মনে মনে গাল দেয়,’ মাগী ‘।

পাঁচ বছরের বর্ষা -বসন্তের সংসার ফরিদ -ফাতেমার। আড়াই বছরের মেয়ে রোশনি ফরিদের জান প্রাণ অথচ এই বন্ধন তাকে বাঁধতে পারে না। সারাক্ষণ পালাই পালাই করে মন। পলাশ কিংবা মধু ফুল কুড়িয়ে এনে ফাতেমার হাতে দিতে গেলে তার ককর্শ চিৎকারে হতচকিত হয়ে পড়ে সে। ফাতেমা চেনে  খাওয়া,  পরা। এর বাইরে তার জীবন শূন্য। ভরা জ্যোৎস্না কিংবা বর্ষায় ফরিদের মন নেচে ওঠে আনন্দে। কী যেন কিসের জন্য সে হয়ে ওঠে উতলা, সে চায় ফাতেমা হয়ে উঠুক রানীর মতো। সেও বুক ভরে ফাতেমাকে ভালোবাসুক কিন্তু বাস্তব চিত্র একদম ভিন্ন। গত বর্ষায় উঠানের উপর কদম গাছ ফুলে ফুলে ভরে উঠেছিল, দমকা হাওয়া দুলিয়ে দিয়ে যাচ্ছিলো কলার সবুজ পাতা।  কালো -হলুদ কোড়া পাখি ধান ক্ষেতের আড়ালে থেকে  একটানা ডেকে যাচ্ছে, ফরিদের মন উদাস হয়ে গেলো ,  দাওয়ায় বসে চোখ বন্ধ করে গেয়ে উঠেছিলো গান, না পাওয়ার হাহাকারের।  হঠাৎ  কপালে আঘাত পেয়ে  ‘ওরে আল্লাহ ‘বলে চমকে  চোখ খুলে দেখে কপাল কেটে রক্ত পড়ছে । ফাতেমা রান্না ঘর থেকে ছুঁড়ে মেরেছে পিঁড়ি।

” আকাইম্মা বেডার সুখ দেহো, মুই বলে রানতে পারতেয়াছি না, দাউর সব ভিইজ্জা রইছে, কত কইরা কইছি ওস্সা ঘরের চাল ছাইয়্যা দেতে , হেয়া দেবে না, খালি গেলবে আর চিক্কুইর দিয়া গান হরবে। ”

উষ্ণ রক্ত কপাল বেয়ে ডান চোখ ঝাপসা করে দিলো মুহুর্তে। তার উদাস ভাব রূপ নেয় জ্বলন্ত ক্রোধে।  ফাতেমাকে দুপায়ে পিষে ফেললে হয়তো এই রাগ পড়বে তার।  কিন্তু তাকে এ নিয়ে কিছু বলতে তার ঘৃনা হয়। নিজেকে সংযত করে   দাঁতে দাঁত চেপে বলে  ‘মাগী’।

দাওয়া থেকে আস্তে উঠে পুকুরের দিকে হাঁটা দেয়। রক্ত ধুয়ে ফেলতে হবে পুকুরের পানিতে। আর ফাতেমা ভয়ে আতঙ্কে চুপচাপ দাঁড়িয়ে থাকে রান্নাঘরের খুঁটিতে হেলান দিয়ে।

পুকুরের পাড় বৃষ্টিতে পিচ্ছিল। পা টিপে টিপে রানী ঘাটে এসে নামে গোসল করতে। শাড়ির আঁচলে সাবান মেখে হাতমুখ ঘষে ঘষে পরিষ্কার করে ডুব দিয়ে কেবল উঠেছে।  তখন সে পুকুরঘাটে দেখতে পায় ফরিদের রক্ত মাখা মুখ। ফরিদ উবু হয়ে বসে আছে ঘাটে। জোরে চিৎকার করতে গিয়েও নিজেকে সামলে নিয়ে তাড়াতাড়ি পানি থেকে উঠে তার প্রিয় মানুষের সামনে বসে। শ্রাবণ মাসের দুপুরে ঝুম বৃষ্টি। আশেপাশে লোকজন নেই, নিরিবিলি। যে যার মতো ঘরের ভেতর ব্যস্ত, কেউ জাল বুনছে, কেউ সাতকড়ি খেলছে, আবার মেয়েরা গল্প করতে করতে কাঁথায় ফোঁড় দিচ্ছে। লোকজনে দেখবে না এটা নিশ্চিত হয়ে রানী ঘাটের উপর উঠে আসে।  ঘাটের পাশে গজানো দূর্বাঘাস তুলে চিবিয়ে কপালের কাটা জায়গায় চেপে ধরে গামছা ছিঁড়ে বেঁধে দেয় ফরিদের কপালে। উদ্বিগ্ন হয়ে জানতে চায় কে এমন করেছে। ফরিদ জলভেজা চোখতুলে রাণীর চোখের দিকে তাকায়,  মরচে ধরা গলায় বলে   ‘ কপাল  ফাটছে মোর কপালের দোষে। ‘

চৈত্র মাস,  এক কুড়া জমিতে কাঁকরোল  চাষ করেছে ফরিদ। ঝুরঝুরে মাটিতে চারাগুলি একটু বড় হয়ে উঠেছে ; ভোর থেকে তাতে বাউনি দিচ্ছে সে। একটু পর পর আকাশের দিকে তাকায়, উত্তরে আকাশ কালো হয়ে আসছে ; যে কোনো সময় ঝড় উঠতে পারে। দ্রুত হাতে কাজ করছে, ঝড়ের আগে বাড়ি যেতে চায়। এই সময়ের ঝড় অবশ্য বেশিক্ষণ থাকে না, ঝড় থামলে একেবারে দুপুরের ভাত খেয়ে আবার মাঠে আসার কথা ভাবতে ভাবতে শোঁ শোঁ শব্দে বাতাসের সাথে সাথে বড় বড় ফোঁটায়  বৃষ্টি নামলো।  বাঁশ, দড়ি জমিতে ফেলে রেখে   বাড়ির দিকে দৌড় দিলো ফরিদ। হোগলার বেড়া পার হয়ে উঠোনে  ঢুকে দেখলো, ঝড়ে ছোট ঘরের একপাশের চাল উড়ে উঠোনেই পড়েছে। ফাতেমা বা রোশনি কাউকেই দেখতে পেলো না। বন্ধ দরজায় ধাক্কা দেওয়ার পর ফাতেমা দরজা খুলে দিলো। ঘরে অতিথির আগমন। ফাতেমার খালাতো বোন শেফালি  তার তিন বাচ্চা নিয়ে বিছানার উপর বসে ;ওদের সামনে থালা ভর্তি ‘রসগজা ‘  পিঠা, তালের নাড়ু, খই। বেশ আয়েস করে খাচ্ছে ওরা।  ফরিদ বুঝতে পারে এসব খাবার শেফালি  এনেছে ওর শ্বশুর বাড়ি থেকে, ফরিদের বাড়ি এই খাবার থাকে না। তার নুন আনতে পান্তা ফুরায়। ফরিদকে দেখে শেফালি একটু নড়েচড়ে বসে কথা বলে উঠলো,  ” কি দুলামেয়া, আছেন কেমন? আম্নে দেহি হুগাইয়া একছের ব্যাঙ ব্যাঙ অইছেন,  খায়েন না ঠিক কইরা? না খাইয়া টাহা জোমান? ”

ফরিদ শেফালির দিকে তাকায়। শেফালির  শরীর হলুদ পাখির মতো, টকটকে ফর্সা। দুই বছর আগেও সে লিকলিকে পাটকাঠির মতো সরু ছিলো, বিয়ের পর ভালো -মন্দ খেতে পেয়ে ছোটখাট হাতির আকার ধারণ করেছে। অসম্ভব মুখরা এই নারীকে ফরিদ দুই চোখে দেখতে পারে না। সে  এই বাড়ি আসুক ফরিদ একদম পছন্দ করে না। কিন্তু ফাতেমা বাদ সাধে। শেফালি  এখানে আসার সময় সাথে করে নানা রকম খাবার আনে। ফাতেমা খেতে পছন্দ করে তাই সে অনায়াসে এ বাড়িতে যাতায়াত করে, ফাতেমাকে নিজের আর্থিক স্বাচ্ছন্দ্য দেখানোর লোভ সামলাতে পারে না। শেফালির খোঁচা ফরিদ হজম করতে পারে নি ; তার মুখ কালো হয়ে যায়, ভ্রু কুঁচকে জবাব দেয়, ” কি হরমু কও, মোর তো আর চুরির অভ্যাস নাই , মুই কি তোর সোয়ামীর নাহান মোংলা জেডিতে  গম চুরি হরি ? হাঙ্গাদিন ক্ষেতে কাম হরি, রউদে পুড়ি, দেওইতে ভিজি। মোরা হুগাইয়া ব্যাঙ অমুনাতো,  অইবেডা কেডা? ”

পলকে শেফালির  মুখ চুপসে গেলো। ফাতেমার দিকে তাকিয়ে অভিমানী গলায়  বললো, “বুবু হোনছো, দুলামেয়া কইলেডা কি? মুই কইলো আর আমু না তোমাগো বাড়ি। তোমাগো বালো পাই দেইক্কা খুলনাএইদ্দা  ঝালকাঠি আই, এইহানে না আইলে মোর তো কোনো সমেস্যা নাই। ”

ফরিদের দিকে রোষ দৃষ্টি হেনে ফাতেমা শেফালিকে জড়িয়ে ধরে হাউমাউ করে কান্না জুড়ে দেয়, ” ওরে বুইন, দ্যাখ আব্বায় মোরে কার লগে বিয়া দেছে। এই বেডায় মোর জীবনডা ত্যানা ত্যানা হরছে। না পারে পেড ভইরা  খাওন দেতে না পারে এউক্কা নতুন শাড়ি  – কাপুড় দেতে।  মোছামুইল্লাডারে মুড়া পিছার বাড়ি দিয়া আইচ্ছাদ্দা ডাইক্কা থুইতে মনে লয় ।  তুই এই বাড়ি না আইলে মুই গলায় দড়ি দিয়া মরমু কইলাম “।

ফাতেমার  নির্লজ্জ কটুক্তি শুনে  কিছু না বলে অক্ষম যন্ত্রণায়  ঘর থেকে বের হয়ে গেলো ফরিদ । ভীষণ ক্ষিদে পেয়েছে তার। দুপুর গড়িয়ে প্রায় বিকেল হয়ে আসছে। ঝড় থেমে গেছে অনেকক্ষণ, উঠোনে পড়ে থাকা  টিনের চাল টেনে একপাশে সরিয়ে রেখেছে সে। আজ সম্ভব না, আগামীকাল চাল ঠিক করবে। এখন কিছু খাওয়া দরকার। ফাতেমা  রান্না করেছে কি না সে বুঝতে পারছে না। তার বোনের আনা খাবর খেয়ে পেট ভরেছে , ফরিদের ওই খাবার খেতে মনে সায় দেয় না।

অপমান, খিটখিটে মেজাজ নিয়ে দাওয়ায় বসেছে অভুক্ত ফরিদ। ক্ষুধা, তৃষ্ণায় শরীর কাঁপছে তার। ঠান্ডা বাতাসেও কপালে ঘাম জমেছে। কোমরে বাঁধা গামছা খুলে মুখ মুছে ফাতেমার কাছে ভাত চাইলো। রাগে  গজগজ করতে করতে এক সানকি পান্তা আর গতকালের বাসী ডাল  এনে ওর সামনে রাখলো।  ধুপধাপ পা ফেলে  একমুঠো খুদ নিয়ে মাটিতে ছড়িয়ে “আয় আয় তি তি ”বলে মুখে বিচিত্র  রকম শব্দ করে মুরগী ডাকতে লাগলো ফাতেমা । তিনটা মুরগী এসে খুঁটে খুঁটে খুদ খাওয়া শুরু করেছে। ফাতেমা কৌশলে খাঁচা  ফেলে ক্ষিপ্র হাতে ধরে ফেললো একটা মুরগী । শেফালিকে ডেকে দুইজনে মিলে জবাই করে মাটিতে ছুঁড়ে ফেললো।  কালো মাটি নিমেষে রক্তে লাল,  গলা কাটা মুরগী ছটফট করতে করতে এক সময় স্হির ।

ফরিদ ব্যথিত চোখে তাকায়  মুরগীর দিকে। এই মুরগীটা ডিম পেড়ে কককক করে সারা বাড়িতে জানিয়ে দিতো তার কৃতিত্বের কথা। রৌশনি খুশিতে হাততালি দিয়ে ডিম নিয়ে মায়ের কাছে যেতো,  প্রতিদিন একটা করে ডিম সেদ্ধ তার মেয়ে খেতে পায়, আজ থেকে তা  বন্ধ হয়ে গেলো। নিজের  বুকচেরা  দীর্ঘশ্বাসের আওয়াজ ডিগবাজি খেয়ে নিজেরই চারপাশে ঘোরে, সে তা এড়াতে পারে না।

খাওয়ার ইচ্ছা চলে গেছে, ভাতের সানকি একপাশে ঠেলে  ঢকঢক করে দুই গ্লাস পানি পান করে ফরিদ উঠে দাঁড়ায়। রাগ, ঘৃনা, মন খারাপ একসঙ্গে তাকে জাপটে ধরেছে। ক্লান্ত শরীরে  বাড়ি থেকে বেরিয়ে  মাঠের দিকে পা বাড়ায় সে।

ঘরের কাজ শেষ করে দুপুরের পর কলসি নিয়ে তালুকদার বাড়ির টিউবওয়েল থেকে পানি আনতে যায় রানী। সে সময় অন্য বাড়ির মেয়েরা একত্রিত হয়ে হাসি -গল্পে মেতে ওঠে ওখানে।  আজও তেমন করে সবাই গল্পে মশগুল। ফরিদের মাঠে যাওয়ার পথ এটা, রানীর চোখ পড়ে ফরিদের দিকে, একটুও অবাক না হয়ে  রানী বুঝতে পারে নিশ্চয়ই ফরিদের সঙ্গে ফাতেমা আবার খারাপ ব্যবহার করেছে। পাশ দিয়ে যাওয়ার সময় ফরিদ একবার চোখ তুলে ওর দিকে তাকিয়ে চলে গেলো। ফরিদের চোখ -মুখ শুকনো, মলিন ;গোসল, খাওয়া হয় নি বোধহয়। রানীর প্রাণ কেঁদে উঠলো। কেমন অস্হির অস্হির লাগছে ওর।

গল্পে মন বসলো না তার, বাড়িতে কাজ আছে বলে তাড়াতাড়ি পানি নিয়ে চলে গেলো সে।

দুই মুঠ চিড়া আর একটু পাটালি গুড় আঁচলে গিট দিয়ে বের হলো রানী। চারপাশে চোখ বুলিয়ে দ্রুত পায়ে মাঠে হাজির হলো। মাঠের পাশে কাঠমালতীর ঝোপের নীচে হাঁটু মুড়ে ফরিদ বসে আছে। ফরিদের সামনে বসে আঁচলের গিট  খুলে খাবার মেলে ধরলো, রানীর চোখে চোখ রেখে ফরিদ ডুকরে কেঁদে উঠলো। পুরুষ মানুষ সহজে কাঁদে না। কিন্তু ফরিদের মন ভেঙ্গে চুরমার হয়ে গেছে, কখন যে তার চোখের ভেতর এক সমুদ্র অশ্রু জমে গেছে সে টের পায় নি। রানীর সহজ, শুদ্ধ ভালোবাসায় তা বাঁধ ভেঙ্গে বেরিয়ে এলো। ফরিদকে কিছুক্ষণ কাঁদতে দিলো রানী তারপর ডান হাতের আঙুল দিয়ে চোখ মুছিয়ে একটু গুড় ভেঙ্গে ওর মুখের কাছে তুলে ধরলো।

সন্ধ্যা হয় হয়, আকাশ কালো হয়ে টুপ করে অন্ধকার নামিয়ে আনলো, সেইসাথে  ঝিরঝিরে বৃষ্টি । মুগ্ধ নয়নে ফরিদ রানীকে দেখছে। ওর শরীরে যেন বৃষ্টির ফুল ফুটছে। ভালোবাসার কাছে দুঃখ -বেদনা ঝাপসা হয়ে গেলো নিমেষে।  সব ভুলে বুকভরে ফুলের ঘ্রাণে নিজেকে তলিয়ে দিতে রানীর কাছে এগিয়ে এলো ফরিদ।