You are currently viewing অমিতাভ সরকারের কবিতা

অমিতাভ সরকারের কবিতা

অমিতাভ সরকার

 বর্ষার মেঘ বছরে 

ফ্ল্যাটটায় শিফট করতে অনেক কষ্ট করতে হয়েছে 

এ বয়সে এসে এত খাটুনি শরীরে আর পারে না

অনেক বছর ওখানে ছিলাম 

ব্যারাকপুরে কেউ আমায় বকতো না মারধোর করত না

এখানকার মতো কারোর এত রাগ নেই

যা ইচ্ছে তাই করতাম কেউ কিছু বলতো না 

‘এটা করিস না ওটা করিস না 

এইভাবে বোস ওইভাবে চল’

সবাই সবকিছু বলে দিলে নিজে থেকে কেউ কিছু শেখে না 

করবে আবার করে দিয়ে কথাও শোনাবে

নিজেরাও পারবেও না আবার অন্যের  হাতে ছাড়বেও না 

মন ভালোয় বড় কিছুও মাফ

চাপে শরীর খারাপে একটুতেও অনেক দোষ

তাতেই বাড়ি মাথায় তারস্বরে চিৎকার

এখানে সবাই এত রাগী কেন?

সারাটা দিন যেন কাজ আর কাজ 

বাইরে কিছু থাকতে নেই 

সন্ধ্যা হলে ঘরগুলোয় আলো জ্বলে ওঠে 

কাজ সেরে সবাই যে যার মতো ফোন  নিয়ে বসে

কারোর সঙ্গে কারোর কোনো কথা নেই

পাশাপাশি অথচ যেন কত দূর

অসুবিধা বললেও বিপদ

বোঝাতে গেলেও মুস্কিল 

মানুষ কী চায় নিজেই জানে না 

মন আর মনের বাইরেটা একই না হলে

মুস্কিল হয়

যারা গুছিয়ে কথা বলতে পারে না তাদের কম কথা বলাই শ্রেয়

 

আনন্দলোক ছেড়ে এসেছি ঠিকই কিন্তু 

আনন্দলোকের আনন্দগুলো কিন্তু  আমায় ছেড়ে যায়নি 

আজও ওখানে গেলে আমি…

চলে আসায় সব শেষ হয়ে যায় না 

যাই

জলের পাত্রগুলো খালি পড়ে আছে 

ভরতি আর হচ্ছে কই!

 

লক্ষ্যের পথ তৈরির গল্প

নাঃ গল্পটা একদম চলেনি

মুম্বাইয়ের জনপ্রিয় নায়িকা প্রথম বাংলা সিনেমায় অভিনয় করতে সে বার বলিউডের অনেকগুলো কাজ বাতিল করে বিস্তর কাঠখড় পুড়িয়ে তবে কলকাতায় আসতে পেরেছিলেন 

 

গানগুলো কিন্তু সবাইকে বেশ মাতিয়ে রাখতো 

তখন কালার টিভি, মোবাইল ফোন কিছুই আসেনি

 

এখনও পুজো প্যান্ডেলে সেইসব কণ্ঠ

শুনলে মনটা আগের মতোই ভালো হয়ে যায় 

 

সেদিনের লাস্যময়ী অনুত্তমা নায়িকা বার্ধক্যজনিত অসুস্থতায় এখন বাইরে খুব একটা বেরোন না

গায়ক কলাকুশলী পরিচালক প্রয়োজক কেউ আজ বেঁচে নেই সুরকারের নামটাও কেউ জানে না 

 

সময়কে চেনাটা খুব দরকার 

ক্রমাগত অতীতে ফিরে থাকা যেমন বর্তমানকে অবহেলা করতে শেখায় সময়কে পিছনে ফেলে বেশি এগিয়ে গেলেও কিন্তু মুস্কিল 

 

ভাবনা আর চেষ্টার সঙ্গে সাফল্যের কোনো সম্পর্ক নেই

বিজ্ঞান যতই এগুক নিয়তিকে কিন্তু মানতেই হয়

 

তারপরও পরিশ্রমের মূল্য কখনো কমে না 

সৃষ্টি সময়ের অনেক পরে গিয়েও ভালো কাজের স্বীকৃতি জানাতে বাধ্য

 

আজ কিন্তু গল্পটা নিয়ে সোস্যাল মিডিয়ায় বেশ চর্চা হয়

পেপারেও সেদিন দেখলাম একজন সমালোচক লিখেছেন একেবারে না চলার মতো স্ক্রিপ্ট কিন্তু ছিল না 

এবারের পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে এ প্রজন্মের শিল্পীরাও বইটার খুব প্রশংসা করলেন 

 

অথচ পঞ্চাশ বছর আগে তখন …

 

ভবিষ্যৎটা দেখা যায় না 

পেলে সত্যিই ভালো হতো 

 

মানুষগুলো অনেকেই হয়তো নেই 

কাজগুলো ঠিকই ছিল, আছে, আর…

=======================