You are currently viewing অনন্ত পৃথ্বীরাজ- এর কবিতা

অনন্ত পৃথ্বীরাজ- এর কবিতা

অনন্ত পৃথ্বীরাজ- এর কবিতা

 

১. বিচ্ছিন্ন ঘটনার গল্প

দিগন্ত প্লাবিত মাঠ; তারপর নদী
নদীতে নৌকো চলে, হাঁসেরা সাঁতরায়
মাঠে আমন ধানের শীষ ঢেউ তোলে বাতাসে।
মা বলতেন, এই নদী মোহনায় নিঃখোঁজ হয়!
তখন অন্য কোনো গল্পে প্লটে আমরা ভেসে যাই,
পক্ষীশাবক শালিক, শুক খিলখিলায়।

হরিজনপাড়ায় প্রবারণার উৎসব জমে উঠেছে
হাসি, আনন্দ প্রার্থনায় মানুষের ব্যস্ততা বাড়ে
দূরে বহু দূরে, বাতাসে মানুষের হাহাকার ভেসে আসে।
চেংটিয়ার আফছার মণ্ডলের আর্তনাদ-
প্রিয়জনের কান্না রোল বাতাস ভারি করে-
ছোট ছেলেটি মিশুক চালাতে গিয়ে খুন হয়ে পড়ে আছে ।

 

২. তৃতীয় জন্মের পরে

কবিতার আরেক নাম আধ্যাত্মিকতা
গভীর ধ্যানের পরে পার্থিব প্রতিটি শব্দ
এক এক করে মালা গেঁথে কবিতা বানায়
তারপর কবি বন্দনা চলে অবিরাম।
আমরা জমিতে ফুলের চাষ করি,
আর কবিরা হলেন মস্তিষ্ক চাষী।
কলমের লাঙলে শব্দ আর ছন্দে
অনবরত চলে সাহিত্যের চাষাবাদ।
কবিরা না বর্তমান, না অতীত অথবা ভবিষ্যৎ
তারা কোনো কালেরই নন, ত্রিকালদর্শী।

 

৩. প্ল্যান বি : ড্রামা এক্সচেঞ্জ

অন্ধকার গুহা জ্বর ঘুমে নিমজ্জিত
সরব পৃথিবীর সবাই যেন নিষ্ক্রিয় দর্শক-
কেউ কেউ ঢেউ তোলে, জাবর কাটায়,
বুত বুত ওঠে তয় বাইরে যেতে পারে না।
পৃথিবী নিজস্ব বলয়ে আবর্তন করে
বাইরে ডাক্তারদের পোয়া বারো;
তারা ঘণ্টায় ঘণ্টায় প্রেসস্ক্রীপশন পাল্টায়
ওষুধের কার্যকারিতা নাই বলে
ফাও কাজে পকেট সয়লাভ।

আমাদের দেশটা জ্বর ঘুমে নিমজ্জিত।

 

৪. ফেয়ারি টেলস্

শামুকের খোলস ভেঙে উঁকি দেয় বর্ষিয়ান চাঁদ। নিয়তি কতটা প্রতিমুখীন হলে কলঙ্কিত অধ্যায়ের রচনা প্রকাশ করে স্বস্তি পায় ফেরারি বসন্ত। আমাদের পয়মন্ত রোজনামচা করগুণে হিসেব-নিকেষ মাসকাবারি খরচের ফর্দ বাপজান লুকিয়ে রাখে কোমরের গিট্টুতে।

ও চাঁদ, তুমি কেন এতো আলো ধার করো? রবিরৌদ্রের পকেট থেকে আব্বার দিলখুশ অনেক বড়ো। ভাটার টানে সমুদ্রকেও জলশূন্য দেখায়; বাবার সাময়িক টানাটানির সংসার। আমরা কষ্টে থাকি ভেবে লোকে কী তবে অভাবের সংজ্ঞা মুখস্ত করেছে?

৫. আঙুরলতা এখন আর নন্দকে ভালোবাসে না

সস্তা ডিমাই সাইজের কাপড় কেটে পা-জামাটা তৈরি করেছে আঙুরলতা। এখন একটা পাঞ্জাবি বাকি। নিত্য বাজার খরচ লাফিয়ে চলে খরগোশের পায়ে চলা দৌঁড়ের মতো। নন্দের আজও কোনো চাকরি নাই। জুলাই বিপ্লবের আগে-পরেও ছিল না। আশা আছে, প্রত্যাশা বাড়ে এবার নিশ্চয়ই একটা কিছু হবে। রিটেন পাশ করে; বারবার ভাইভা ফেল করে নন্দ। মাসের পরে মাস যায়, বিপ্লব প্রতিবিপ্লবে মধ্যে কেবলি চাকরিওয়ালাদের দাবি-দাওয়া। নন্দের কেবল হাসি পায়। নাহ, চাকরি তার হবে না আর।

আঙুরলতা যেন এখন আর আগের মতো নেই। প্রত্যহ একাকী কাজে যায়। গার্মেন্টসের পথে একটা ছেলে রোজ ওৎ পেতে থাকে। একদিন, দু’দিন; এভাবে মাসের পরে মাস। কই, আঙুরলতা তাকে কোনোদিন এ কথা বলে নাই। হয়তো, কোনো প্রয়োজন নেই অথবা, আঙুরলতা বলতে চায়নি, এমনও হতে পারে আঙুরলতা চায় রাস্তায় কেউ তার জন্য অপেক্ষা করুক।

*********************************