২টি মুক্তগদ্য
মহুয়া বৈদ্য
জ্যামিতিক
শিষ বাজছে, বাজছে গম্ভীর কতোয়ালী তান। এই অদ্ভুত সমন্বয়ের মাঝখানে পড়ে একটি সমবাহু ত্রিভুজ তার একটি বাহুকে খানিকটা ছেঁটে ফেলল। দুই সমান বাহু থাকার সুবিধায় চান্দ্রমাস কিছু সদয় হল তার উপরে, অতএব হাওয়ায় ভেসে পড়ার ইঙ্গিত। এদিকে শরীর অবশ করে তখন নক্ষত্র জাগছে আর তৈরি হচ্ছে নতুন তারা… দুটি করে সমবাহু ত্রিভুজ আড়ে আড়ে জুড়ে যাচ্ছে দেখে তুমি প্রবল শিষ দিয়ে পাহাড় কাঁপাচ্ছ । ওদিকে সমদ্বিবাহুজন, ভেঙে পড়েছে একটু, অকারণ হাত ছেঁটে ফেলার কষ্ট গিলছে। এজন্মে আর গ্যালাক্সিতে তার যাওয়া হল না, এমন ভেবে বমি করতে চাইছে অযাচিত সরলরেখাসমূহকে। কিন্তু তার সম্বল তো মাত্র তিনজন, তাও আবার দুজন একে অপরের প্রতিরূপ। এই অবস্থায় দাঁড়িয়ে যদি একটি বৃত্ত আসে, তার চারপাশে, তুমি কি তাকে ভাঙবে? নাকি বৃত্তের মধ্যে নিজেকে প্রবেশ করিয়ে জন্ম দেবে নতুন ত্রিমাত্রিক জ্যামিতিক চিহ্নের? এর উত্তরের আশা আমি কখনো করি না।
বিভ্রম
তারপর সবুজ আপেলে কামড় দিতেই তার মুখের ডালা খুলে গেল। আসলে মাথায় নীল হলুদ স্কার্ফ আর কানে মুক্তোর দুল দেখে আমার সন্দেহ হয়েইছিল যে এই মুখের দরজা অবশ্যই খোলা সম্ভব। তবে এর পিছনে যে একমাত্র সবুজ আপেল, তা বুঝলাম এইমাত্র। মুখের ডালা খুলে যাওয়ায় আমি দেখতে পেলাম সেই জ্বলন্ত শিখার মতো কালো ফার গাছ। আর, অনন্ত নক্ষত্র, পুঞ্জ পুঞ্জ আকাশ, মেঘ… দেখলাম চাঁদ উঠছে, চিক্কন গোল চাঁদ, যেন মুখোশ। আসলে, মুখোশের ভূমিকা মাথার মধ্যে ঘুরপাক খাচ্ছিল এতক্ষণ। এক কামড় আপেল আর জলের ঢেউ মিলে মহাকাশ সৃষ্টি হতে পারে। একটা কাটা মুন্ডুতে আমার নীল চোখের মুখোশখানি সেঁটে দেওয়ার আগে কিছু বালি ঝুরঝুর করে ঝরে পড়ল আমার পিঠে। ক্ষতি নেই তাতে…জীবন ঠিক এরকমই। আমি কি এবার এক অভূতপূর্ব বিস্তারের সামনে ক্রমাগত নতজানু হতে থাকব! না কি…