মহান মে দিবস অমর হোক
সকলকে মে দিবসের রক্তিম শুভেচ্ছা। শ্রমিককে মালিকে রূপান্তরিত করার ধাপ্পাবাজির রাজনীতি, সংস্কৃতি ও অর্থনীতি নিয়ে পুঁজিবাদী দুনিয়া সবসময় উচ্চকন্ঠ। মালিকপক্ষের সকল মেশিনারিজ ব্যবহৃত হয় এই অপপ্রচারে। প্রিন্ট মিডিয়া, ইলেক্ট্রনিক মিডিয়া, সামাজিক মিডিয়া থেকে শুরু করে বিদ্যমান অসম সমাজের হালুয়ারুটি দিয়ে পালিত বুদ্ধিজীবীদের তারা নানান মুখোশ পরিয়ে শ্রমজীবী মানুষকে বিভ্রান্ত করার কাজে লাগায়। পুঁজিবাদের ইতিহাসে শ্রমিককে মালিক বানানোর এমন গপ্পের শেষ নেই। এসব শুধুমাত্র শ্রমজীবী মানুষকে বিভক্ত করে শোষণ প্রক্রিয়া অব্যাহত রাখার জোচ্চুরি।
শ্রমজীবী মানুষের নিজের শ্রমবিক্রি করে বেঁচে থাকা ছাড়া কোনো বিকল্প নেই। ধনী হবার তৈলাক্ত সিঁড়ি ভেঙে মালিক হবার প্রতিযোগিতায় মধ্যবিত্ত সমাজ যেখানে নিজেকে বিকিয়ে দিয়ে ‘ভাণ’ করে ধনী সেজেও শেষরক্ষা করতে পারে না, সেখানে গতর কিংবা মেধা বিকিয়ে খাওয়া শ্রমজীবী মানুষের বার বার আছাড় খাওয়া ছাড়া কোনো গত্যন্তর নেই। তবুও পুঁজির সাথে পাল্লা দেয়ার অবাস্তব প্রতিযোগিতা লিপ্ত হয়ে শোষণমুক্তির লড়াই থেকে বিমুখ হয় এবং পরাজিত জীবনের দায়ভার ভাগ্যের উপর ছেড়ে দিয়ে সান্ত্বনা খোঁজে।
কিন্তু শোষণমুলক সমাজের বিরুদ্ধে লড়াইয়ের কোনো বিকল্প শ্রমজীবী মানুষের নেই। ১৮৮৬ সালে আমেরিকার শিকাগো শহরের হে মার্কেট এলাকায় ৮ ঘন্টা শ্রম সময়ের দাবীতে প্রাণ দিয়ে শ্রমজীবী মানুষ স্বাক্ষর রেখে গেছে। মে দিবসের সেই রক্তাক্ত ইতিহাস আজো শ্রমজীবী মানুষের শোষণমুক্তির সংগ্রামের প্রেরণা। সেই প্রেরণায় উজ্জীবিত হয়ে শ্রমজীবী মানুষের মুক্তি আসুক। মে দিবস অমর হোক।