You are currently viewing বইমেলার খোলাচত্বর: কথোপকথন/ জিললুর রহমান

বইমেলার খোলাচত্বর: কথোপকথন/ জিললুর রহমান

বইমেলার খোলাচত্বর: কথোপকথন/ জিললুর রহমান

অমর একুশে গ্রন্থমেলাকে কেন্দ্র করে মন-মানচিত্র সাহিত্যকর্মের বার্তা সাহিত্যের পাঠকদের নিকট পৌঁছে দেয়ার উদ্দেশ্যে কবিসাহিত্যিকদের সাক্ষাৎকার প্রকাশ করছে। আমরা আজ কথা বলেছি  কবি-প্রাবন্ধিক জিললুর রহমানের সাথে। তাঁর প্রকাশিত কবিতাগ্রন্থ পপলার বন মরে পড়ে আছে প্রকাশিত হয়েছে বাতিঘর প্রকাশনা থেকে। বইটি অমর একুশে গ্রন্থমেলায় বাতিঘরের ৩২৭-৩২৯ নং স্টলে পাওয়া যাচ্ছে। সাক্ষাৎকার নিয়েছেন ধ্রুব সাদিক

মন-মানচিত্র: গ্রন্থ মূলত দীর্ঘ একটা সময়ের সাধনার ফসল। অমর একুশে গ্রন্থমেলাকে কেন্দ্র করে আপনার প্রকাশিত গ্রন্থের ব্যাপারে জানতে চাই। গ্রন্থটি প্রকাশিত হওয়ায় আপনার অনুভূতিও যদি শেয়ার করতেন।

জিললুর রহমান: এই বইমেলায় পপলার বন মরে পড়ে আছে ছাড়াও আমার আরও বই প্রকাশ পেয়েছে। গত আগস্টেও একটা কবিতাগ্রন্থ প্রকাশিত হয়েছে। পপলার বন মরে পড়ে আছে শীর্ষক বইতে যে কবিতাগুলো সংকলিত হয়েছে, তাতে কবি প্রাগৈতিহাসিক যুগের পৃথিবীতে পরিভ্রমণরত। গঠনপ্রক্রিয়াধীন প্রাগৈতিহাসিক পৃথিবীর নানা কালপর্বজুড়ে নিজের অবস্থিতির এক কাব্যিক অনুবাদ। এক কোষী প্রাণীর আবির্ভাবেরও আগে নিজেকে জগতে আবিষ্কারের এক অধিবাস্তবিক বয়ান। অন্যদিকে, হঠাৎ রাজেন্দ্রপুর গ্রন্থ মূলত বিরহ যাপনকালে প্রেয়সীর কাছে পাঠানো উপলব্ধিজাত পংক্তি ও চিরকুট।
হ্যাঁ, বই প্রকাশ পেলে সকলকে আনন্দিত হতে দেখি। আমার কিন্তু খুব উৎকন্ঠা হয়। প্রকাশকের বিনিয়োগ নিয়ে শঙ্কা ভর করে মনের ভেতরে। নিজের মনের গুঞ্জনগুলো পাঠকের মনোজগতে কোন্ উপলব্ধিতে সঞ্চারিত হচ্ছে তা নিয়ে আরও বেশি উৎকন্ঠা আমাকে অবশ করে দেয়।

মন-মানচিত্র: আপনার পূর্বে প্রকাশিত সাহিত্যকর্মও কি পাঠকরা গ্রন্থমেলা থেকে সংগ্রহ করতে পারবেন?

জিললুর রহমান: ২০১৮ সালে ভিন্নচোখ থেকে প্রকাশিত কবিতার বই ডায়োজিনিসের হারিকেন এবং বাতিঘর থেকে প্রকাশিত অনুবাদ বই নাজিম হিকমতের রুবাইয়াৎ মেলায় পাওয়া যাচ্ছে। চৈতন্য থেকে প্রকাশিত এমিলি ডিকিনসনের কবিতাও মেলায় পেতে পারেন। অন্য বইগুলো বাতিঘরের মাধ্যমে অনলাইনে সংগ্রহ করা যাবে।

মন-মানচিত্র: অমর একুশে গ্রন্থমেলা লেখক-পাঠকদের মধ্যে শুধু সেতুবন্ধনের কাজটিই যে করে তাই নয়, এইসময় গ্রন্থপ্রেমিকদের মধ্যে খুশির আমেজও পরিলক্ষিত হয়। গ্রন্থমেলাটিকে প্রাণবন্ত করার ব্যাপারে আপনার অভিমত জানতে চাই।

জিললুর রহমান: মেলার মূল উদ্দেশ্য পাঠককে আকর্ষণ করা। তাই যেসব উদ্যোগ নিলে পাঠক আরও আকৃষ্ঠ হবেন, তা করাই উচিত হবে। এসব নিয়ে মেলা আয়োজক ও প্রকাশকদের ভাবতে হবে। লেখকের কাজ মন দিয়ে ভাল লেখাটি লেখা।

মন-মানচিত্র: গ্রন্থমেলার সাথে প্রকাশনায় জড়িত মানুষের রুটিরুজির সংস্থানের ব্যাপারটি জড়িত। এই ব্যাপারে আপনার অভিমত যদি আলোকপাত করতেন।

জিললুর রহমান: প্রকাশনা তো একটা শিল্প। আর্ট অর্থে এবং ইন্ডাস্ট্রি অর্থেও। তাই এতে কম্পোজার, প্রুফ রিডার, প্রিন্টার, বাইন্ডার সহ অনেক মানুষ জড়িত। লেখক এবং প্রকাশক তো আছেনই। সুষ্ঠু নীতিমালার মাধ্যমে প্রকাশনা শিল্প পরিচালিত হলে সকলেই উপকৃত হবে বলে মনে করি।

মন-মানচিত্র: আমাদের একটা ব্যাপার পরিলক্ষিত হয়, যে, বইমেলার পর প্রকাশিত বইয়ের আর খোঁজ বিশেষ থাকে না। এদিকে, আমাদের দেশে বইয়ের দোকানও স্বল্প। এই পরিস্থিতিতে বই পাঠকের কাছে পৌঁছাতে আপনার ভাবনা যদি জানাতেন।

জিললুর রহমান: আমি মেলাকে উপলক্ষ করে বই প্রকাশে তেমন আগ্রহী নই। আমার ‘আত্মজার প্রতি ও অন্যান্য কবিতা’ খড়িমাটি থেকে আগস্ট মাসে প্রকাশিত হয়েছে। লেখক ও প্রকাশকেরা সারাবছর বই প্রকাশ করে থাকলে এবং বাতিঘর, পাঠক সমাবেশ, বিভিন্ন বইদোকানগুলোর মাধ্যমে এবং অনলাইন বই বিক্রয়ের ব্যাপারে উদ্যোগ নিলে পাঠক সারা বছরই বই কিনবে। বছরে একমাস বই কেনার চেয়ে সারা বছর প্রয়োজন মতো বই কেনাই শ্রেয়।

মন-মানচিত্র: কোভিড পরিস্থিতিতে বইমেলা অনুষ্ঠিত হচ্ছে, পাঠকদের প্রতি আপনার বার্তা যদি শেয়ার করতেন।

জিললুর রহমান: সবাই ভ্যাকসিন গ্রহণ এবং মুখোশ পরিহিত থাকলে মেলায় কোন সমস্যা দেখি না। ধন্যবাদ।