আজিজ কাজল
আমার বাড়ির আঙিনা পরাগে
হুতুম প্যাঁচার ডাক
নব-শকুনিরা বাতাস ছাড়িছে
চোখে তার শ্যেন হাঁক
সুবোধ ফুলের ওঠে না জোয়ার
ঘোর তমসার ঘোলা
মনের মদিরে নামাও আশান
ফাটাও পাষাণ খোলা
কত কথা আজো বাকির খাতায়
পড়িয়া রয়েছে ভারী
আলাদিনের জাদুর চেরাগে
সমাধা হবে না তারি
জ্বরা ইতিহাস গ্রহণ ভুলিয়া
ঠিকুজি ধরাও প্রত্নে
নতুন ব্যথার আগল খুলিয়া
নব সূচি দাও রত্নে
উলট ধ্যানেরা অটল আজিকে
কিরণ জাগা সুরুজে
নামিছে তরনি ভুলের সনদে
মাছিরা সব গরজে
কিল মারো ভাই খিল মারা জং
নতুন বীণার তারে
বিলাবল কাফি ভৈরব ইমনে
দাও রাঙা ঢেউ ভোরে
০২.
ব্যথা ভরা কথা লতা ঝুলে দেখো
হৃদি মন্দিরে কড়া
দুঃখের করুণে শুকালো শকুন
সোনাস্মৃতি তার ধরা
মানুষের কথা মানুষ বলিছে
কতটুকু তার রঙ
গুলতি তাহার ফাঁকাই রাখি
বাকি থাকে শুধু ভং
আগে পিছে মুই না ভাবিয়া বঁধু
ফুটাই কথার লেজ
নিজের কর্ম ফেলিয়া গলাই
বাড়তি গোবর প্যাঁচ
মননে মগজে ধরিছে ওরুশ
কামড়ে ধরেছে মাথা
চারদিকে খোলা বিষের পেয়ালা
দিবা রজনীর খাতা
সাপের সুরতে হিস্ করে উঠি
বোয়ালের মত হা-তে
সিংহ ভারী আওয়াজ তুলি
বাঘের গর্জন ঘাতে
চারদিকে শুধু কথার লতানো
ডানে বামে মারে প্যাঁচ
লতানো লতায় পৃথিবী পাড়ার
ঝিম ধরা মাথা হেট
০৩.
নগরে নগরে থু-থু হাঁচি-কাশি
বাড়ে নন্দনের খেলা
নিজেকে বানায় নগরকুটুম
পিছে আবর্জনা ম্যালা
নত হও আগে প্রকৃতির ফ্রেমে
গোলাঘরে ভর ধান
আগে পিছে ভেবে দূরদর্শী করে
সরোবরে কর চান
ভারী কোঠা ঘর দালান গাড়িতে
সোজা করে তীর লক্ষ্য
ছাদনা তলায় সাজাও বাগান
গায়ে ভর বায়ু লক্ষ
আলগা আরাম ঝেড়ে মুছে ধর
নতুন ঘরের তরে
সারা ঘর ভরে লাগাও বাতাস
প্রকৃতি বাহুর ডোরে
শিশুর হাসিতে সবুজ বুনন
দাও প্রকৃতির পাঠ
নরম ঘাসের বিচালি বাড়াও
ধরাও সবুজ মাঠ
বিষের বাতাস কাটিয়া সাজাও
নব পরশের ভোর
আগে পিছে ডানে চিনিয়া নিজেরে
বাদ করো কাল ঘোর
০৪.
কেউ খায় বেঁকে কেউ খায় সোজা
তফাৎ শুধু ধরনে
তুমি হও ভালো আমি হই কাল
মিছাটা ধরি মরমে
পেটের ভেতর ঝুলিতেছে পেটি
মুখের বাইরে মুখ
চতুর পাখির বাজার গরম
ইসকাপনের সুখ
কারো কাঁধে কেউ রাখিয়া বন্দুক
মারিছে গুলি সমানে
কেউ বলিতেছে আমি নাতো ভাই
অবাক ব্যাপার কেমনে?
সুযোগ পেলেই গুঁজে দেই ঘুষ
নিজের ভাগ্য ললাটে
আঙুল ফুলিয়া কলাগাছ হয়
ভুঁইফোড়েরা সমানে
পান থেকে চুন খসিলেই বলি
কোন রে বাপের ব্যাটা
প্রতিদিন করি সোজা গালাগাল
মুখে কুলো দে অফ জা
এই করে শুধু চলছে খাওয়া
সূর্য সমান গলায়
একেক তালের একেক নাওয়া
সাগর সমান জলায়
০৫.
ঋতুবতি দেশে ছয়টি শালুক
বাজে না তাহার রঙে
নদী জলা শাখে অশনি পাথার
মরিচা ধরেছে মনে
জলের তরল ফুলিয়া ওঠিছে
ভূতল ফাটা গানে
শরম ভরম ভুলিয়া তোমার
নব রণে দাও শানে
মাছবতি সব জাগাও সায়র
তোলাও তেলের খনি
মানুষের কোলে অনুবারো মাস
থাকো দুধেভাতে ননি
ভূতল মারিয়া ফুটিয়া উঠিছে
শত শত কোঠা ভারি
মাটির গহীনে জ্বালানি খনিজ
শুন্য রাখিছে জারি
স্বদেশ পরাণে দাও যত মান
করায়ে নতুন হালে
আধার তমসা বন্ধ করিয়া
হাওয়া দাও তার পালে
ইকো-ধ্বনি কুলে জাগাও অটবি
স্বাস্থ্য সকল মূলে
যন্ত্র কলের ঝরণা পাষাণ
সরাও ভাটির ফুলে