You are currently viewing তিনটি কবিতা / রোজেন হাসান

তিনটি কবিতা / রোজেন হাসান

তিনটি কবিতা

রোজেন হাসান

 

মেটাফর

তোমার আত্মা যেন সমুদ্রে বসে আছে

নাবিকদের অস্ফুট কল্লোল আর হারানো রামের বোতল

তোমাকে আফ্রিকার লৌকিক নৃত্যের কথা

মনে করিয়ে দেয়।

 

তুমি শোনো, তোমার শরীর ও ক্রিয়াপদের সাথে সম্পর্ক

তুমি শোনো, তারা বলছে একটি গহনচারী মাছরাঙা

মনোলিথিক ঢেউয়ের শীর্ষে জ্বলছে।

 

অর্ধস্ফোট

যেন আমি ডুবো পাহাড়

তাসের মতো অবিকল তাসের মুখ কত

কত চড়ুই, তাইগ্রিসের উদ্দামতার উপকথা

বলে যায়,

অবিকল আরেকটা তাসের কানে,

আরেকটা যুদ্ধের কানে, যে মেঘ যেন তাস দিয়ে গড়া, কিন্তু

বৃষ্টি পড়ে দারুকার মতো

তার সুরঙ্গ বেয়ে, যেন ইউলিসিসের নৌকোর

শব্দ শুনি আমি, আয়নার প্রতিদৃশ্য থেকে

মুক্তি পাওয়া

লুব্ধকের আত্মা, স্ব-নির্বাণের দিকে যাচ্ছে

 

আবার যে প্রতীকের পৃথিবীজুড়ে অবিরাম

উত্তর সরবতা জন্ম নিচ্ছে

নির্জনতার কুহক গড়ে দিতে

যেন আমি আর কখনো উত্থাপিত হব না

শ্যাওলার প্রত্যাদেশ ভুলে

এই প্রাচীন শহরে তিনকোটি প্রজন্ম বৃষ্টি ঝরছে।

 

বস্তুর আত্মার দিকে চেয়ে থাকি আমি

কে এই পাথর? কে বলেছে তাকে পাথর। তার আত্মা কি

এই শাদা শাদা ক্ষত, দাগ আর শ্যাওলার সবুজ পর্দা।

কে এই পাথর? ভারতীয় এক না-সূচক দার্শনিক পদ্ধতি অনুসরণে

পাথর নয়, জগতের সমুদয় বস্তুর এক অপার

জঙ্গলে উপনীত হই আমি। সব বস্তুকেই আমি জানতে

শুরু করি না থেকে। তারা পাথর নয়।

 

নাস্তির চরমে একদিন আমি পৌঁছাব, সেদিন পাথর তার

হ্যাঁ রূপে ধরা দেবে। কিন্তু শব্দহীন, পাথর শব্দটি হারিয়ে

যাবে। মানব জ্ঞানের চৌহদ্দি থেকে তাকে জানা অসম্ভব,

হে মানবের পরের প্রজন্ম, স্মৃতির বিনিময়ের

অসম্ভাব্যতায়, এই পাথরের আত্মাকে আমার জানা

নিরুত্তর থেকে যাবে, আমারই মতো।

 

যখন পাথর জানতে শুরু করবে আমাকে, আমার

সংস্কৃতিকে, আমার নিজস্ব বলয়ে গড়ে ওঠা পাথর

সংস্কৃতি। সে তখন অস্বীকার করবে তাবৎ বস্তু, শুধু

আমাকে জানতে। একদিন ধরা দেব আমি পাথর-জ্ঞানে।

হ্যাঁ রূপে।