You are currently viewing তিনটি কবিতা ||  আলী সিদ্দিকী

তিনটি কবিতা || আলী সিদ্দিকী

তিনটি কবিতা || আলী সিদ্দিকী

 

শব্দেরা শীতল তিমি

নিভে আসে রোদেলা প্রহর
আমি আলগোছে পেরিয়ে যাই
শানবাঁধানো সিঁড়ি, আলোকোজ্জ্বল তোরণ
অনর্থক হুজুগে কোলাহল
সেখানে বড্ড বেশি চাকচিক্য আর বাগাড়ম্বর
বুঝতে পারি না সেখানে আমার কি কাজ।

জলের মতো টলমল করে
পলকা বাতাসে উড়ে যাওয়ার মতো
খলবল করে, বালখিল্যতায় দারুণ ঝুরঝুরে
সোমত্ত মানুষগুলো খেই হারা
বড্ড বেশি আমি আর আমির ঢাক পেটানো
সেখানে আমার মুখে শব্দেরা নিরেট শীতল তিমি।

এখানে মুখগুলো সব ঢাকা
পুরু আস্তরণের প্রলেপে মুছে যায়
কদর্য কামনা, লোলুপতার লকলকে হিসহিসানি
আপাত আলোকিত মানুষেরা
নিছক আত্মবন্দনায় অনায়াসে ভাসায় বোধবুদ্ধি
সেখানে আমার উপস্থিতির অসারতা সহজে পরিমেয়।

নিভে আসা দিপ্র প্রহরের শোক
দিগন্তে সমবেত করে ছড়ানো দীর্ঘশ্বাস
হারিয়ে যাওয়া অশ্রুবিন্দুর অনুচ্চারিত শব্দের সঞ্চয়
আত্মপ্রসাদিত চকচকে মুখর মুখগুলো
আমার নিঃস্বতার অখণ্ডিত প্রতিপক্ষ সময় হাসে
আমি শুধু অপচিত জীবনের মুছে যাওয়া পথ খুঁজি।

আগস্ট ১৮, ২০২৩

 

আলোর নৈশভোজন

রাত্রি গা ঘেঁষে এলে
তোমার ঘ্রাণ দ্রুত ঢুকে পড়ে মগজে
পৃথিবীর অতল থেকে যেন উঠে এসেছে
অচিন নেশাময় সুরভি
তোমার ভেতর আমাকে সে অন্তর্লীন করে দেবে
হৃদয়ের দেরাজ খুলে আমি প্রহর গুনি

রাত্রি মোলায়েম হয়ে এলে
আমার ভেতরের ক্ষুধার্ত আলো নড়ে বসে
সহস্র কোটি সূচালো রেণুর দল শাণিত করে
বুভুক্ষিত পাঁজরের খাঁজ
আকাশ আর মাটির সমান্তরাল অন্ধকার দিয়ে
আজ হবে আলোর নৈশভোজন

রাত্রি ঘনিষ্ঠ হয়ে এলে
অন্ধকারে লেপ্টে থাকে কুকি রমণীর চিৎকার
ওদেসার খাদ্যশালায় পুড়তে থাকে
ক্ষুধার কামড়ে মুমূর্ষু মানুষের কঙ্কাল
সীল মেরে বাক্স ভরে সীমাহীন উল্লাসিত জনপদ
কাঁপে রক্ত পাটাতনে দাঁড়ানো পলিমাটি

রাত্রি আমার হবে ভেবে
নানা রাজসিক আয়োজনে ছড়াই রোমাঞ্চ ছটা
কাঁটা ছাড়িয়ে নিয়ে করি গোলাপের রমণীয় সব
অনন্য চিত্তাকর্ষক সাজসজ্জা
প্রাণজ সুগন্ধি সরোবরে হবে আলোর ফোয়ারায়
তোমার ভেতর আমার উজ্জ্বল অভিষেক

রাত্রি হবে দিনের সহোদর
আলো আঁধারের সমস্বরে রচিত হবে নতুন গান
তোমার হৃদয়ে পুস্পিত হবে আমাদের একক স্বপ্ন
সমতা আর সুন্দরের যৌথজীবনে
রাত্রি আর দিনের সেতু দিয়ে আমরা বানিয়ে নেবো
মানুষের হৃত সব মানবিক গৌরব।

জুলাই ২২, ২০২৩

 

স্বপ্ন প্রাসঙ্গিক

আমাদের স্বপ্ন দেখা প্রাসঙ্গিক ছিলো।

গোলাপের কাঁটা যেমন অপরিহার্য
যেমন অতি আবশ্যক নদীর ঢেউ
প্রেমের পরিপূরক যেমন অভিমান
আঁধার জুড়ে তেমনি সুচতুর ফেউ।

পূর্বপুরুষের স্বপ্ন ভীষণ অর্থবহ ছিলো।

শপথ ছিলো হবে মুক্ত এ মাতৃভূমি
পতপত উঠবে স্বাধীন এক পতাকা
রচিত হবে অনন্য প্রতিম মানচিত্র
বিশ্ব জুড়ে উড়বে গৌরবের বলাকা।

২৭ আগস্ট, ২০২৩

******************************