You are currently viewing কেয়া ওয়াহিদের তিনটি কবিতা

কেয়া ওয়াহিদের তিনটি কবিতা

কেয়া ওয়াহিদের তিনটি কবিতা

মৌলিক জ্যোৎস্না 

দিনের সব কাজ শেষে আটপৌরে ক্লান্তিরা

ফিরে শোবার ঘরে,

অপেক্ষায় থাকে চীনাংশুক শীতল বিছানা;

জানালায় ঝুলে থাকে ভ্যানগগের বিমূর্ত ‘স্টারি নাইট’

 

রাত যত গভীর ক্যানভাসের রঙ তত গাঢ় নিঃশ্বাসের আভায় নীল হতে থাকে ঘূর্ণি…

আখাঙ্ক্ষা, বন্টন নিয়ে তারা’দের অভিযোগনামা–

একপ্রান্তে ক্ষুধা অন্য প্রান্তে যৌনতা; সবাক- নির্বাক, অন্তহীন এক লড়াই।

উদাসীন চোখে আকাশনীলা তাকিয়ে থাকে, নিরুত্তর–

 

গরাদ ভেঙ্গে আসা চন্দ্রাহত দ্যুতি–

শিয়রে বসে জীবনের চুলে বিলিকাটে–

ধার করা আলোয় জ্যোৎস্না লিখে মৌলিক গল্প।

 

মোহমায়া 

দক্ষিণের আকাশ যখন ঘুমুচ্ছিলো,

রিমঝিম রিমঝিম বৃষ্টি এসে ভিজিয়ে দিলো উত্তরের প্রদেশ।

প্রবল বৃষ্টি শেষে বিহ্বল বিকেলের যে দৃশ্য,

তার শাব্দিক বর্ণনা কঠিন—-

মৃন্ময়ী হাওয়া; ল্যাভেন্ডার সুগন্ধী আকাশ; মন ক্যামন করা মদিরা আলো আর পরিপূর্ণ হাহাকার।

 

আকাশ জুড়ে ফুটেছে শুভ্রতার মেঘফুল,

সোনার শেকল ভেঙ্গে ফুল কুড়াতে এসেছে আফ্রোদিতি; মেঘদূতের সাথে তার তুমুল প্রণয়।

মহাকাশে তাদের ফুল ছোড়াছুড়ির কোমল আঘাতে মার্তণ্ডের ঝড় ওঠে অন্যবিশ্বে।

 

অষ্টাদশী ফোয়ারা ভিজছে মেঘের সাথে বৃষ্টিস্নানের আকাঙ্ক্ষায়; বাহারি খামে আমন্ত্রণ পত্র জমতে জমতে উপচে পড়া চিঠিবক্স।

আহ বিষণ্নতা–

কেন জড়ালে এই মোহমায়ায়?!

শুধু তোমার জন্য আমি নির্দ্বিধায় ফিরিয়ে দেই

সর্বসুখী আহবান…

 

আত্মহনন 

অসহ্য সুন্দর রোদসী

ঝলসানো নীল চুইয়ে পড়া ব্লাশনমাখা গাল

রোদ চশমার ফ্রেমে পেঁজোতুলা মেঘ

আহ্নিক গতিপথে উত্তপ্ত লু হাওয়ায় অসহনীয় হয়ে উঠেছে বিরতিহীন ৩৯ ডিগ্রি তাপমাত্রা…

 

তৃষ্ণার্ত বিটপী পল্লব, বৃষ্টিবন্দনায় কাঠবিড়ালি,

যৌবনবতী ফুলের অকাল বার্ধক্য দেখে আমার মায়া হয়

শাখাচ্ছিন্ন করতে গেলে তারা ফিরিয়ে দেয়

সুসজ্জিত ফুলদানিতে মলিন মৃত্যু

আরাধ্য উষ্ণতা হারায় মধ্যাহ্নের প্রখরতায়

উপেক্ষার তালা ঝুলে সদর দরজায়।

 

অতঃপর,

মহাকালের অপেক্ষায় থেকে একটি প্রাপ্ত বয়স্ক দিন আত্মহনন করে প্রেমিকার অভাবে।