You are currently viewing করোনাকালের একগুচ্ছ গল্পকাব্য/ হোসাইন কবির

করোনাকালের একগুচ্ছ গল্পকাব্য/ হোসাইন কবির

হোসাইন কবির-এর একগুচ্ছ গল্পকাব্য

লড়াই

******

করোনাকাল; কিশোরী মেয়েকে নিয়ে রাহেলা রেলবস্তিতে; চারদিকে লালসার চোখ। নিরাপত্তার জন্য ভ্যানচালক রমিজকে বিয়ে করলো; ক’মাস ঘুরতেই মা-মেয়ের চোখে এক-সমুদ্র জল।

 

মানুষও এক কালো মাছি

*******************

নাঈমা মাসখানেক হয় ওর বাবার সাথে কথা বলেছিল, এ ক’দিন ও বেশ কাজের চাপে ছিল। দেশ থেকে কল সাধারণত ওর বাবাই করে। সেবার বাবা তাকে বলেছিল সপ্তাহখানেক ধরে শরীর তার খুব একটা ভালো যাচ্ছে না; নাঈমা নিজের ব্যস্ততা আর ক্লান্তির কথা বলে লাইনটা কেটে দিয়েছিল। আজ দেশ থেকে খবর এলো– তার বাবা যে বাসায় থাকতো, সে বাসার বন্ধ দরজা ভেঙে পুলিশ দেখতে পায়– বাসা ভর্তি বড় কালো মাছি ভন ভন করছে; দরজা খোলা মাত্র অসংখ্য মাছি ঘর থেকে বেরিয়ে গেলো।

 

অদেখা অভিমান

*******

মহুয়া ক’দিন আগে জানিয়েছিল রোমেলের অসুস্থতার কথা। করোনা দুর্যোগে প্রশাসনিক কাজের চাপে এ ক’দিন জগতের কোন খোঁজই রাখেনি দেবযানী । সকালে ঘুম থেকে উঠে নজরে পড়লো  মহুয়ার একটি এসএমএস। দেবযানী  হাসপাতালের করোনা ইউনিটে খোঁজ নিয়ে জানলো, রোমেলের লাশ তখন গোরস্তানের পথে। দেবযানী পা বাড়ালো নিজ গন্তব্যে; বত্রিশ বছর পর রোমেলের অভিমানের অবয়বটা বারবার সাজাতে চাইলো। বাসায় ফেরার সময়টা তার মনে হলো বেশ দীর্ঘ, পথে পথে নীরব আঁধারে কারা যেন আঁকছে রোমেলের সাদাকালো ছবি। অনেকদিন পর শুনতে পেলো সেই চেনা কণ্ঠে– সাদাকালো ছবি বর্গফুটে সাজাতে গিয়ে তোমাকে হারাই!

ছায়া

****

বহুদিন পর, মধ্যেরাতে জানালার ওপারেতে–

কে দাঁড়িয়ে! অবিকল সেই অবয়ব! চিবুকে জড়ুল-তিলক

স্বপ্নে জাগরণে প্রেম-অপ্রেমে–

যেন নদী-পয়স্তিতে কন্যা জায়া জননী আজ একাকার।

পঁচিশ বছর পর, রোমেল ভাবে

কার দেখা মিলেছিল! কিংবা মিলে নি আবার!

তবু চেনা অচেনায় বিমূর্ততায় হয়ে ওঠে

আবছায়ায় আলোয় নিষেধে বারণে উদ্বেগ আকাঙ্ক্ষায়

মগ্ন এক পাতার সানাই

ভাবে– একই ছায়া! অবয়ব!

সে কি তবে উভয়েরই কৃষ্ণকুমার