You are currently viewing একগুচ্ছ কবিতা // সাজ্জাদ সাঈফ 

একগুচ্ছ কবিতা // সাজ্জাদ সাঈফ 

একগুচ্ছ কবিতা // সাজ্জাদ সাঈফ 
 
 
দ্রাঘিমালণ্ঠন-০৬
 
 
সামনে ভূগোল জুড়ে মানুষের হট্টগোল। ফাইফরমাশ।
মহুয়া পালার ধারা। তোমাকে রক্তকরবী ডাকি।
ধানখেতে মুনিয়াডানা, দিগন্তে কুয়াশাতুলারা ওড়ে।
ঘুরেফিরে চেনা জানা হয় অবাধ বসন্ত!
 
আমাদের বিকল্প নাই একসাথে পায়চারি বাদে। সামনেই প্রমত্ত ফুল, শিশুকান্না, কাছেপিঠে এম্বুলেন্স; মহাসড়কে দিনভর অবাধ ঝাঁকুনি। আমাদের বিকল্প নাই, একই গল্পে এসে বাস করে তামাশার ধারে গান।
 
জনপদ ঝড়বন্দী লেন, ঝড়ের ওপর ভেসে বাতাসের ঘূর্ণী নগরীকে তাওয়াফ করে। আয়ুষ্কাল জুড়ে কাতরতা ভারী মানুষের, সংশয়ে বর্ণিল! আর জীবনে যুক্ত সব ছায়াময় পঙক্তিকে রাষ্ট্রেরই অধীনস্থ লাগে, ধোঁকা, ফাঁদ আর প্রবাদে ভরপুর!
 
 
দ্রাঘিমালণ্ঠন-০৭
 
 
আমাকে দিয়েছো বুকে জ্বরের সত্যতা, সারারাত বধির শিশিরঝরা; হে বিষাদ, আগুনের ফুল, যা কিছু জীবনে নিবিড় লাগে, অস্তকে আপন ভেবে লঘু হয় সূর্য নিজে, নিজেরই ছায়ার কাছে হাত পেতে দাঁড়ায় আকাশ!
 
অযুত কবর ডাকে নাম ধরে আমাকে শুনি, স্বপ্নকে স্বাধীন ভেবে গোধূলিতে বেঁচে থাকা ভালো, যে-রকম ইতিহাস বেয়ে সুস্পষ্ট মধু দত্ত; ডানা ঝাপটানো ধ্বনির নীচে, অপঘাত কোনো সাধনার ফল নাকি?
 
আমাকে নিয়েছো তুলে দলছুট একাকীত্বে, একঘেয়ে নির্জনতায়; ঘিরে থাকে বজ্রধ্বনি, ঘিরে থাকে ঝড়ের আভাস, এই পথে ঘনিষ্ঠ যে তার নাম দুঃস্বপ্ন!
 
 
দ্রাঘিমালণ্ঠন-০৮
 
 
ঘুরেফিরে পাই ফণিমনসার তলে ঘর, বেদের বহর, ঘাড় তুলে অনেকটা দূর শুধু হুইসেল মিস করা যাত্রীর ভিড়, সামনে ক্রসিং, সেইদিকে মুখ করে আছে মাচানের ফুল, সুদক্ষ মৌয়াল তার নিশানায় চেয়ে স্থির। ঘুরেফিরে মাঠের ভিতর পথ। সন্ধ্যাকে অমরত্ব মনে হয়। তোমার আত্মাকে ধীরস্থির লাগে মাগরিবে৷ যেন একজন্মের ভার নিয়ে থিতু। এরপর কলিজায় ম ম করা পায়রার ঝাঁক। মৃত্যুও দূরের জংশন কোনো। যার যার উড়ালকৌশল নিয়ে সবারই যাত্রা সেইদিকে। পথে পাবে ব্যঞ্জনবর্ণ। রিপুর ওজনে থ মেরে আছে সকল হৃদয়।
 

পিতার অসুখ
 
 
অসুখ এসেছে কাছে, পাশের খুপরি ঘরে
জোড়া কবুতর ডাকে, পেশিতে প্রশ্নেরা ঝরে।
ঘামের মতন ঝরে, খোলা মাঠ চারিদিকে;
মায়ের নজর লেগে হাসিরা ফুটছে ঘাসে!
 
বুকের উপর যেন বুকের চাইতে পুরু
চিম্বুক হাওয়া বয়, ধান কাটা মৌসুমে;
তোমার বাড়ির পথে আমার প্রেমের শুরু!
অসুখ এলেই স্মৃতি, কথা কয় কানে কানে।
 
কথা হয়, গীত হয়, ফণীমনসার ঝাড়
এমন অসুখ চায় সযত্ন উপসংহার!
 
দীর্ঘশ্বাস পরমায়ু কিনা, বেঁচে থেকে কতকাল হলো
নিজেকে নিত্য দেখা! পিতার অমল চোখে
ভারি হলো দেখো আজ অনিদ্রাশাসিত আলো;
অসুখ বন্ধু নাকি, সব কেনো চোখে চোখে রাখে?
==============================