শঙ্কা-আশঙ্কার বাংলাদেশ
রুখসানা কাজল
বাংলাদেশ প্রিয় বাংলাদেশ। কেমন আছ আমার জন্মভূমি ? যতটুকু খবর পাই তাতে ভালো লাগে না। শঙ্কা জাগে মনে। আবার শঙ্কা উড়িয়ে সন্দেহ উস্কে ওঠে। চারদিকে এত শঙ্কা আশঙ্কার ভয় বজায় রেখে কুচক্রীরা অন্য কোন ষড়যন্ত্র বাস্তবায়নের কাজ চালাচ্ছে না তো ! কে জানে ! এই ত জুলাই মাসে, কোটি বাঙ্গালী কেমন ঘোল খেয়ে গেল কোটা আন্দোলনের প্রতারণার ফাঁদে পড়ে ! কথাগুলো বাংলাদেশের একজন প্রবাসী সচেতন নাগরিকের।
আবার এই কথাগুলো শুনেই একজন আওয়ামী বিরোধী সুশিক্ষিত প্রবাসী সাংবাদিক দেগে দিলেন, ও ত আফসোস পার্টির লীগপুত্র। হাসিনার হনুমান। এবার আমরা আওয়ামী লীগকে নিশ্চিহ্ন করে দেব আর আওয়ামী কব্বর ঘিরে ওদের হাহুতাশের আহাজারি দেখব।
রিং এর বাইরে থেকে খেলামোদী দর্শকের মতো আমি বলে ফেলি, যেমন আপনারা হাহুতাশ করেছেন বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার পর—
বলা মাত্রই পুরনো ঘিয়ে জ্বলা আগুনের মত ফনফনিয়ে উঠল প্রবাসী এই সাংবাদিকটি। এই সাংবাদিকের ইতিহাস কিছুটা জানি। মূল শিকড় ভারতে। মাতৃ এবং পিতৃপক্ষ বাঙ্গালী হলেও তাঁরা বাংলাভাষী ছিল না। ওদেঁর কাছে বাংলা ভাষা ছিল অচ্ছুৎ। ওঁরা বাঙ্গালীকে দেখতেন এবং এখনও দেখে্ন, নীচুজাতি হিসেবে। যদিও বর্তমানে বাংলার গান গেয়ে, বাংলায় কবিতা লেখে, বাংলার মায়াভরা পথে হেঁটে এক বাঙ্গালিনী বিয়ে করে দু সন্তানের পিতা হয়েও সাংবাদিকটির স্বপ্নে স্বাধীন বাংলা নেই। কেন নেই ?
এই প্রসঙ্গে অবধারিতভাবে চলে এলো শেখ হাসিনাসহ শেখ মুজিবের দুর্নীতির বহর। ভারতের কাছে নতজানু আওয়ামী সরকারের স্বদেশ বিক্রির কাহিনীসহ অনেক প্রশ্ন। কেন ১৯৭১এর ১৬ ডিসেম্বর পরাজিত পাকিস্তানী বাহিনীর আত্মসমর্পণের চরম মুহুর্তে মুক্তিবাহিনীর সর্বাধিনায়ক জেনারেল ওসমানী সেখানে ছিলেন না ? কেন নেই তার স্বাক্ষর ? কেন অর্ধশতাব্দী ধরে ভারতীয়দের কাছে, “সবচেয়ে বড় সামরিক বিজয়ের” প্রাণবন্ত প্রতীক ছিল ১৯৭১ সালের ১৬ই ডিসেম্বর ঢাকায় যৌথ বাহিনীর কাছে আত্মসমর্পণরত পাকিস্তানী সেনাবাহিনীর নথিতে স্বাক্ষর মুহুর্তের ছবিটি ? যুদ্ধ কি তবে ভারত- পাকিস্তানের মধ্যে হয়েছিল ? মুক্তিযোদ্ধারা ছিল ফাউ ? নাকি আঞ্চলিক শক্তির গরিমা প্রকাশে অথবা মুক্তিযুদ্ধে সাহায্য করেছি এই অহংকারে বাংলাদেশকে চিরদিনের জন্য কৃতজ্ঞতায় নতজানু দেখাতে ? তাহলে ত প্রশ্ন উঠতেই পারে, বাংলাদেশ কি স্বাধীন রাষ্ট্র, নাকি ভারতের অধীনতা মেনে নামসর্বস্ব কোন রাজ্য ?
তাছাড়া দুর্নীতি কি হয়নি ? দিব্য হয়েছে। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবের আমলেও হয়েছে। লুট করেছে তার দল আওয়ামী লীগের মন্ত্রী, নেতা পাতিনেতা, পাড়া মহল্লার মস্তানরা। শেখ হাসিনার আমলে রাজনীতিবিদদের লুটপাটের সঙ্গে কি জড়িয়ে যায়নি দেশের সরকারী কর্মকর্তা, কর্মচারী, প্রশাসন, বিচার, নৌ, বিমান স্থলবাহিনীসহ পুলিশ প্রশাসন,ব্যাংক বীমা বড় ব্যবসায়ী থেকে খুচরো ফিচকে ব্যবসায়ীরা ? শেখ হাসিনা নিজেই বলেছেন, তার বাসার একসময়ের পরিচারক কয়েক শ কোটি টাকা বানিয়ে চলে গেছে বিদেশে। লোকে বলে, হাসিনার আমলে টাকা উড়ত। উন্নয়নে যতটা টাকা খর্চা হয়েছে তারচে বেশী উড়ে ঢুকে গেছে মন্ত্রী প্রতিমন্ত্রী, এনজিও দালাল, আমলা, আওয়ামী নেতা পাতিনেতাদের ব্যাংক একাউন্ট হয়ে বিদেশে। বাঙ্গালীর দুর্ভাগ্য, জনগণের ম্যান্ডেট নিয়ে আসা সব দলের ক্ষমতাসীন সরকাররা নিজ দলের লু্টেরারদের শাসন না করে বরং নিজেরাই ডুবে গেছে দুর্ণীতির অতল সাগরে।
কিন্তু এসব ত পুরনো কথা। গোটা কয়েক মাস হতে চললো, ইউনুসীয় সরকার কেমন চালাচ্ছে বাংলাদেশ ? কেমন আছে পুনর্বার স্বপ্নে ভাসা বাংলাদেশের সাধারণ জনগণ ? লুটপাট ঘুষপাশ কি কমেছে ?
গত পনেরো দিন ব্যক্তিগত কৌতুহল থেকে হেঁটে হেঁটে ঢাকা শহরের খেটে খাওয়া মানুষদের সাথে কথা বলেছি। ঢাকার বাইরের তীব্র আওয়ামী সমর্থক এবং বিএনপি সমর্থক কয়েকটি জেলার গ্রামে ঘুরে যা দেখেছি, শুনেছি তাতে মনে হচ্ছে বাংলাদেশ যেন বুঝতে পেরেছে তা্র সাথে প্রতারণা করা হয়েছে। গরম কড়াই থেকে জ্বলন্ত আগুনে ফেলে খেলা দেখছে আমেরিকা, পাকিস্তান, চিন ভারত।
পঞ্চগড়ের একজন দরিদ্র রিকশাচালক হতাশায় মাথা নাড়ছিল, ক্যাংকা করি বাঁচিবু– হাসিনা থাকিতে তবু খায়া বাঁচিনু। এলায় ত মরার দশা। দৈনিক পাঁচশ টাকার বাজার লাগিলে চলিবু ক্যাংকা—
ভাইও, হাসিনার আমলে কি ভালো আছিলেন ?
পাঞ্জাবীর পকেটে টাকা রাখতে রাখতে বলে ওঠে ভ্রাম্যমাণ এক চাওয়ালা, চোররা চুরি কইরছে এইডা সইত্য। কিন্তুক ইউনুচ্চে থাকলে আর কয়ডা দিন পর মোগো একশ টেহা করি এক কেজি মোডা চাল কিনতে হবেনে ।
রিকশার চাকা ঘোরে, ইউনুস না ইবলিশ। সুদখোরের আবার দেশপ্রেম। হেয় নিজেই ত সরকারের কাছে কোটি কোটি টেহার খেলাপকারী আছিল। ক্ষমতায় বইসাই বিনা পয়সায় মুক্তি লইছে। এই টেহা ত জনগণের টেহা। জনগণই পাইতো।
লাকসামের কয়েকটি গ্রামের লোকজন গভীর বিষাদে আলোচনামগ্ন, আল্লায় হাসিনারে ওডায় নেছে ভালো কথা। কিন্তু নাস্তিক সুদখোররে এরা সরকার বানাইছে ক্যান ? হক কথা হল, এদেশে কুরানের শাসন ছাড়া কুনোদিন শান্তি আসবে না। কুরানের শাসন চাই–
যে পদ্মাসেতু নিয়ে ইউনুস সাহেব বিশ্বব্যাংককে লাগানি ভাঙ্গানি দিয়েছিলেন বলে অভিযোগ আছে, সেই উপকারী পদ্মা সেতুর সাথে সংযুক্ত দক্ষিণবঙ্গের ২১টি জেলার জনগণ কিছুটা বিচলিত। অঞ্চলটিতে নাকি আওয়ামী হাওয়ার ঐতিহাসিক ঘুর্ণিবাত্যা এখনও বহমান। যদিও এই কমাসে মামলা মোকদ্দমায় ঘরছাড়া হয়েছে অনেক আওয়ামী নেতা এবং সমর্থক। যশোরের মনিরামপুরের এক ফসল ব্যবসায়ী হতাশ, দেখলেন ত, এইমাত্র কারা চান্দা নিয়ি গেল। হাসিনা গিয়িছে। তবু, যে লাউ সেই কদু হয়ি দুর্নীতির জাঙলায় ঝুলতিসে বাংলাদেশ।
নারী উন্নয়নের এক অভূতপূর্ব জাগরণ ঘটেছিল বাংলাদেশে। ইউনুস সরকারের সহযোগী এবং ছাত্র উপদেষ্টাদের রাজনৈতিক চরিত্র ও মন্তব্য থেকে এটা পরিষ্কার, জুলাই/চব্বিশের আন্দোলনে ধর্মীয়দলগুলোর প্রত্যক্ষ সহযোগীতা ছিল। মাজার ভাঙ্গা, মাইজভান্ডারিদের নির্মূল করার চেষ্টা, বিশ্ব ইজতেমা নিয়ে ওহাবী এবং সাদপন্থীদের মধ্যে ভয়াবহ সংঘর্ষ, খুনখারাবিতে প্রকাশ- অপ্রকাশের অদৃশ্য পর্দা সরে গেছে। বাংলাদেশ সেনাবাহিনী আর জামায়াত ইসলামসহ ছোটবড় নানাবিধ ধর্মীয় দলগুলোর জোর সমর্থনপুষ্ট সাম্প্রতিক বাংলাদেশকে দেখে মনে হচ্ছে, ধর্মীয় দলগুলোর ডানার জোর বেড়েছে। বাংলাদেশের নারীদের মনে ভয় ঢুকেছে। যখন তখন তৌহিদি জনতা ঝাঁপিয়ে পড়ছে। মোল্লাহুজুররা জোর গলায় নারীদের বিপক্ষে অয়াজ, নসিহত, বক্তব্য-মন্তব্য দিচ্ছে। তবে কি আফগানিস্তানের পথে হাঁটছে বাংলাদেশ ?
শোনা যাচ্ছে, বাংলাদেশের সাগর দ্বীপ সেন্ট মার্টিনে সামরিক ঘাঁটি করবে আমেরিকা। এদিকে টেকনাফ ছুঁয়ে মায়ানমার থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে একটি নতুন রাষ্ট্র আত্মপ্রকাশ করছে বলে প্রকাশ্য। বাংলাদেশের সার্বভৌমত্বের জন্য এটা হুমকির বিষফোঁড়া থেকে যে কোন মুহুর্তে দখলদার হয়ে উঠতে পারে। দেশের মানচিত্র থেকে খসে যেতে পারে টেকনাফ, কক্সবাজার, চট্টগ্রাম, খাগড়াছড়ি। তখন কি করবে বাংলাদেশের এই নাজুক সরকার ? ধরা যাক্, আমেরিকার প্রত্যক্ষ মদদে সৃষ্ট ইউনুসীয় সরকার ঘাপ্টি মেরে নিখোঁজ হল। জনগণের কি হবে ? মেনে নেবে নাকি প্রতিবাদ করবে ? কার নেতৃত্বে করবে ? গত ১৫ বছরে সংঘটিত আওয়ামী সরকারের বেশুমার স্বৈরাচারের বিরুদ্ধে যারা দু ঘন্টার প্রতিরোধ গড়ে তুলতে পারেনি, আওয়ামী সরকারের পতনের সাথে সাথে যারা চাঁদাবাজি, দখলদারী শুরু করে দিয়েছে সেই বাংলাদেশের জাতীয়তাবাদী দলের কি শিরদাঁড়া আছে স্বতন্ত্রভাবে নেতৃত্ব দেওয়ার ?
ওদিকে ভারত সরকার এই নতুন রাষ্ট্র সম্পর্কে আপাত নিশ্চুপ— ভারতের উত্তরপূর্বের অশান্ত রাজ্যগুলোও এই নতুন রাষ্ট্রের নিশানায় বলে মালুম হলেও ভারত সরকার নির্মোহ ভাব দেখাচ্ছে। কিন্তু সার্বভৌমত্বের উপর দখলদারিত্ব প্রয়োগ করলে ভারত কি বরদাস্ত করবে ? তবে কি তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধের সলতে জ্বলে উঠতে যাচ্ছে ! এমন পরিস্থিতিতে বাংলাদেশের অবস্থা সম্পর্কে রাজনীতি থেকে স্বেচ্ছায় নির্বাসনে থাকা এক পাতিনেতার মতামত, “লাভের গুড় আমেরিকা খেয়ে লিবে। সুদ পাইবে ইউনুস। টাকা খাইয়া আন্দোলন করা ছাত্রনেতারা পলাইবে মেজর ডালিম, কর্নেল রশিদের লাহান আর জনগণ ফির ভি হোগা চুলকাইবে পুরানো —-।”
বাংলাদেশে আজকাল এরম আলোচনাই বেশী হচ্ছে। তৃণমূল পর্যায়ের এই চিত্র মধ্যবিত্ত, উচ্চবিত্তের ড্রয়িংরুম থেকে ছড়িয়ে পড়েছে প্রকাশ্য রাস্তাঘাট, গঞ্জ, বাজার, ষ্টেশন, শপিং মল, দুজন তিনজন, চার, পাঁচজনের জমায়েতে। বুদ্ধিজীবি রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা ব্যস্ত সংবিধান সংস্কারের কাজে। সেখানেও নিত্য নূতন সংলাপ বয়ে যাচ্ছে। সংস্কার প্রসঙ্গে আদিবাসীদের রক্ত ঝরেছে রাজপথে। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র সমন্বয়করা বাংলাদেশের ৭২এর সংবিধান সংস্কারে দৃঢ়চিত্ত। তারা এখনই সংস্কার সম্পন্ন করতে চায়। এদের কাছে একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধ গুরুত্বহীন। বঙ্গবন্ধু বলে কেউ নেই, শেখ মুজিব ক্ষমতালোভী বাকশালী একনায়ক। অতি উৎসাহী কেউ কেউ জিন্নার ছবি ঝুলিয়ে দিয়েছিল দেওয়ালে। ইতোমধ্যে সমন্বয়কদের মধ্যে বিভক্তি চুড়ান্ত পর্যায়ে দেখা দিচ্ছে। দুর্নীতিতে জড়াজড়ির খবরও আসছে অহরহ।
মাঝে মধ্যে নির্বাচন দেওয়ার টোপ দেওয়া হচ্ছে। অনেকগুলো নতুন রাজনৈতিক দলের নবজন্ম হচ্ছে, ধর্মীয় দলগুলো এক হচ্ছে। এরাও নির্বাচন সামনে রেখে কাজ করে যাচ্ছে। যে কোন মূল্যে আওয়ামী লীগকে নিশ্চিহ্ন করাই এদের লক্ষ্য।
এদিকে রাজনৈতিক এই ঘোলা জলের ফাঁকে জনগণের উপর বাড়তি ভ্যাট চাপিয়ে দিয়েছে সরকার। পেনশন অধিকারী বেসরকারী শিক্ষকরা অনিশ্চয়তায় ধুঁকছে। তাদের টাকা খেয়ে নিয়েছে ব্যাংক ডাকাত এস আলম। ছোটখাটো চাকুরেরা বেকার হয়ে পড়ছে। বেকারত্বর সাথে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে অপরাধ। দ্রব্যমূল্যের দাম আকাশচুম্বী । পাড়া মহল্লায় আগে ভিখারী ছিল না। এখন দেখা যাচ্ছে। বস্তিবাসী কিশোররা আইন ভাঙ্গতে, নেশা করতে অপ্রতিরোধ্য। চুরি ডাকাতি, খুন, অপমৃত্যু বেড়ে গেছে। শিক্ষকরা মুখ লুকিয়ে চলছে। পুলিশ ভীত এবং মনঃক্ষুণ্ণ। কারণ তারা সরকারের গোলাম। সরকারের হুকুম পালন করাই তাদের কর্তব্য। হাসিনা সরকারের গোলামি করতে গিয়ে যারা মারা গেছে তাদের পরিবারসহ আত্মীয়স্বজন অভাব অনটনসহ দুঃসহ কষ্ট এবং অপমানে আছে। জনগণের সুর পাল্টাচ্ছে। অনেকটা, ছিলাম ছিলাম ভালোই ছিলাম হাসিনা সরকারের আমলে—
আওয়ামী লীগ নাকি গোপনে স্বপনে গা ঝাড়া দিয়ে উঠছে। তা দিক, গনতান্ত্রিক রাষ্ট্রে সে অধিকার তাদের আছে। কিন্তু তারা কি অনুতপ্ত তাদের স্বেচ্ছাচারী কর্মকান্ডের জন্য ? এখনও কি তারা পরিবারতন্ত্রের পদযুগলে ভক্তির নৈবদ্য দিতে চায় নাকি নতুন করে কিছু ভাবতে পেরেছে ? ছাত্র- জনতার ২৪ এর অভ্যুত্থান কি কোন শিক্ষা দিতে পেরেছে তাদের ? তারা কি সেই শিক্ষা থেকে কোন মেসেজ পেয়েছে ? সেই আলোকে আওয়ামী লীগ কি নতুন করে কার্যক্রম গ্রহন করার শক্তি অর্জন করতে পেরেছে ? জরুরি কথা হল, আওয়ামী লীগ কি পারবে তাদের রক্তধারায় মিশে যাওয়া চোর অপবাদ ঘুচিয়ে পুনরায় জনগণের আস্থা অর্জন করতে ?
ইতোমধ্যে বিএনপি লক্ষ্যনীয় ভাবে সমঝদার হয়ে উঠেছে। এতকাল আওয়ামী লীগের বিরোধীতা করে বিএনপিপন্থীরা এখন মুক্তিযুদ্ধ প্রশ্নে অনড় ভূমিকা দেখাচ্ছে। শেখ মুজিব প্রসঙ্গে নমনীয়। সংবিধান সংস্কার প্রসঙ্গে আইনি বৈধতা তুলে নির্বাচনের দাবি করে সমগ্র বাংলাদেশে রাজনৈতিক কর্মকান্ড শুরু করে দিয়েছে। অত্যন্ত পরিপক্ক বক্তব্য রেখে এরই মধ্য জনগণের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি)। সে ক্ষেত্রে সংখ্যাগরিষ্ঠ জনগণের হাতের পাঁচ হয়ে উঠছে বিএনপি। তবে তারা এটাও ভাবছে, বিএনপির এই ভূমিকা –এ কি সত্য ? নাকি বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের মতো মেটিকুলাস কোন প্রতারণা নয় ত ? ঘরপোড়া বাঙ্গালী ভয় খাচ্ছে, নির্বাচন কি আদৌ হবে নাকি তলে তলে কোন দলকে শক্তিশালী এবং গ্রহনযোগ্য করে নেওয়ার সুযোগ দিচ্ছে এই হ্যাংগিং সরকার !
এরকম কত শত শঙ্কাআশঙ্কার ভাবনা কল্পনা, বাস্তবতার মধ্যে দিয়ে হয়ত বাংলাদেশের আগামী দিনগুলো বদলে যাবে। আমরা চাই, কি না চাই তাতে কিস্যু আটকাবে না। বরং রাজনীতির নবধারায় শিল্প- সাহিত্য সংস্কৃতিতে আসবে নতুন বাঁক। নতুন শক্তি। প্রান্তিক স্তরের জনগণ এরই মধ্যে শেখ হাসিনার পক্ষে মুখ খুলতে শুরু করেছে। আর কে না জানে, বিরোধী শক্তি হিসেবে আওয়ামী লীগের কোন তুলনাই হয়না।
বর্তমান বাংলাদেশ দেখে এই প্রেডিকশন করাও হয়ত স্প্যাম মাত্র। সময়, রাজনীতি আর রাজনীতির সঙ্গে জড়িত দেশি বিদেশি কুশীলব হয়ত বাংলাদেশ নিয়ে আরও কিছুদিন খেলবে।
——————————