শিশির আজম ।। দুটি কবিতা
একুশ
‘একুশের ওপর কেন তোমার এতোটা বিশ্বাস,’ জিগ্যেস করলাম সুকান্তকে
সুকান্ত
সুকান্ত ভট্টাচার্য
আমার বন্ধু,
‘একুশের ওপর কেন তোমার এতো প্যাশান কোলাজ নির্ভরতা?’
‘একুশ এক নিষ্কলঙ্ক সকাল,’ বললো সুকান্ত,
শুরুরও শুরু আছে
কিন্তু একুশ থেকেই তো আমাদের সত্যিকার নিজেকে চেনা
নিজের দিকে ফেরা
আর অন্ধকার বিস্ময়ের তন্দ্রা মুছে একুশ এক গণগনে তারুন্য
এক আগ্নেয়গিরি
এক সূর্য
বিপুল তরঙ্গে সব হিংসা কলুষ কীটনাশকের শিশি ধুয়ে
ভাসিয়ে নিয়ে যায়
কেবল রয়ে যায় বিনোদিনী দাসীর হারিয়ে যাওয়া আংটি
কৃষ্ণচূড়া ফুলের রক্ত
কল্যাণ
আর হ্যা ভাল করে দেখো তোমার ভেতরেই একুশ
আছে হয় তো।’
মা কেবল নিজের নামটাই লিখতে জানে না
কতবার বলেছি :
মা, লেখো তো তোমার নাম
আমার খাতায়।
মা লেখে
তার মায়ের নাম।
মা লেখে
তার বাবার নাম।
মা লেখে
আমার নাম।
মা লেখে
তার মেয়ের নাম।
মা লেখে
তার স্বামীর নাম।
মা লেখে
তার গ্রামের নাম
যা সে কৈশরেই হারিয়ে এসেছে।
মা লেখে
তার নদীর নাম।
যদিও আমি নিশ্চিৎ নই
আদৌ এ-নামে কোন নদী আছে কি না
বা ছিল কি না।
কেন
মা কেবল নিজের নামটাই
লিখতে জানে না?
**********************