ইমরান আল হাদীর কবিতা
১.
ইথারে মিলিয়ে যায় কত কত স্বর
তরঙ্গ ভেদে যদি হয় শব্দের আকার
সে সব শব্দ কি মরে যায় — দিক ভ্রষ্ট হয়ে?
রমণের সব শুক্রাণু যেমন পায় না ডিম্বকোষ
তেমনি কি মুছে যায় সব সম্বোধন?
ডাহুকের রক্ত চেরা স্বর নিয়ে আসে তার
সম্ভাব্য মরন —নিষাদের তিরের বিষে —
তবু সেই স্বর পৌঁছে না ডাহুকীর কানে
মুখের জবানে তাই ডেকে যাওয়া সারা
সমস্ত আহবান হোক, নৈঃশব্দ্যের জবানে —
২.
দুনিয়াতে এত নদী
বিবিধ শাখা প্রশাখা
সব নদী পায় কি সাগর সঙ্গম, গভীরতা?
তবু (নদী) তার সকল সফল টান
নিয়ে আসে রোজ
যেন এক মাকু বুকে নিয়ে জলের সুতা
সন্তরণ কৌশলে —- করে এফোঁড়-ওফোঁড়
বুনন বিন্যাসে কি খামতি আসে?
আসে জলের বিমার? কর্কট — ক্ষয়কাশ?
তবু ধাবমান জলের উপর ভাসে বিন্দু
কালো হরফ,
বিস্ময়চিহ্নের
কালাকাল পারি দেয়া কালা নৌকা
গলুইয়ে মুখোমুখি বসে থাকে
গৃহস্থ, মুছাফির।
মাঝির পাঞ্জা জানে বিবিধ ফিকির
তীর বদলে মুছে যায় বিধবার রাইত
নাইয়রীর লাল।
চিরকাল
দুই তির,
সামান ভাগে রাখে সকাল বৈকাল
মূক কালা অন্ধ মাঝি
দাড়ের টানে ফেলে যায় কত
বিস্মৃত আনন্দ, উপশম — ক্ষত
জীবিকার জেব ভরে ওঠে
রহস্যে —– জীবনের সমাচারে।
মাঝির পারাপার শেষ হয়
দুই পার এক করে —–
৩.
আমাকে বলতে দাও গোপন কথা গুলা
তাতে তুমি যদি ভয় পাও, তবুও বলতে দাও
হরিণের যদি না থাকে বাঘের ভয়
তবে তার হরিণ জীবন বৃথা
ভয়টা আড়াই হাত পিছনে রাইখা
ঝাড়া মারে গায় — তবু বাঘটা (মনে) থেকে যায়।
কিছু গোপন তো মানুষের লগে কবরস্থ হয়
মানুষ স্মৃতির জঠরে আমৃত পালে তারে
আপন বলে কাকে দিবে — কে এমন আমানত দার
একা একা বয়ে যাও গোপন বস্তুভার —-