৫টি কবিতা
ঋজু রেজওয়ান
সম্পর্ক
সম্পর্কের বিবর্তন! বর্তন মানুষ—
তন্ন তন্ন ক’রে
খেয়াতরী বায়
স্মৃতিতীর্থে। তীর্থসঙ্গ… নিঃসঙ্গতার
একান্নবর্তী যন্ত্রণা
না-অহং অভিমান
প্রিয় বলে আর ডাকব না ‘প্রিয়নাম’
মৌন ও মুখর
মূ্খ্য আর গৌন
অযৌনপ্রেম অথবা প্রেমযৌনাচারে
যদি ডাক না-ই দিই,
তাকে পাব-ই বা কেন?
সঙ্গ আসঙ্গের নামান্তর— ব্যতিচার
ভেতরে ভেতরে খুঁজি
আমার-ই স্থির বলয়ে
অদৃশ্যে তোমার আপেক্ষিক রূপান্তর।
সময়
নিভৃত রাত্রির খোলা হাওয়ায় বেড়াচ্ছি
সঙ্গে রাস্তারাও হেঁটে যায়;
এবং মেঘের উড়ান।
জানি না কোথায়! তবুও একাই হাঁটি—
বেলফুলের হাসিতে…।
আর, শটিফুলের কন্দ
হায়ারোগ্লিফিক আঁকছিল বৃষ্টির সন্ধ্যায়।
তবুও নিশ্চুপ তুমি।
সে-সব আড়াল করে বনরসুন ফুলের
স্মিতবদন টিলিকে…
একটা দুঃখের চিহ্ন এঁকে শুধুই কাঁদবে।
কাঁচুলির শেষ গৃহে… ঠিক মরা পূর্ণিমায়
ভেসে যাচ্ছিল সময়;
এবং নিভৃত রাত্রির তুমি! নাকি আমি।।
আততায়ী ছোরা
লাউয়ের ডগা ~ তরতর ~ চবুতর জাংলায়
কার আগে কে যায় এগিয়ে
দুই ঠোঁটের চুম্বনে, যেন ~ শঙ্খলাগা দৃশ্য।
বর্হিদৃশ্যে- শুধুই যোগিতা। কী প্রতিযোগিতা
নরম ডগার ঠোট;
সোঁদাসোঁদা গন্ধমাখা ঝরে আশৈশব স্বপ্ন।
দুরন্তকিশোর কখন আগল ভাঙে শিশিরের
কাঁচা সোনালি রোদ্দুর;
মনের ঝাঁকায় বাজে মন্দিরের শাঁখ, সুখসুখ।
দূর মসজিদে দুআ ~ অতি সন্তর্পণে হেঁটে…
বড় পুষ্করিনি পাড়;
গভীর ক্রন্দনে জলছাপ পার হয় পথ, পথে।
পথ জানে- বদ্ধ কপাটের ওপাড়ে গুমড়ে মরা…
নৈঃশব্দ্যের আততায়ী ছোরা তরতরিয়ে বেড়ায়।
ওয়ার্মহোল
নৈঃশব্দ্যের অন্তরালে মিহিরের দানার ভেতর—
যত শোক-দুঃখ-ব্যথা ঝরছে মাটির রেকাবিতে
তার থেকে কিছু দিই- ওয়ার্মহোলের ’নিষিদ্ধ না,
সবকিছু বাধ্যতামূলক’। অন্য গ্যালাক্সির প্রান্ত—
নৈঃশব্দ্যের অতিতেও হোয়াইট হোলের বিস্ফার
সেখানেই খুঁজে নাও অনিন্দ্য পাঠের আয়োজন,
আমাকে খুবলে দেখ কিছুই তো নেই অবশিষ্ট—
প্যারালাল মহাবিশ্বে আমি এক ঋণাত্মক ঐশী।
একান্ত পাঠের পর যে-টুকু শরীর খোলে ভাঁজ।
ভ্রূণ
তোমার দরোজা খোলো__নতজানু ক্লান্ত ফুল
অবিভক্ত অপেক্ষায়…
বাহিরের থেকে ভেতরের সঙ্গীহীনের প্রতীক্ষা।
কোন অলক্ষ্য ছায়ায় সিঁধকাঠিটি খরচ হলো
মায়ামৃগ জোছনার…
কুহেড়িকা শ্রাবণ-সন্ধ্যায়। পিছনও কি সামনের
তর্কাতীত ছল, নাকি…
সামনেই পিছনের খুনে খুনির দোপাট্টা বিউগল।
আমায় নেবে কি পথ__যেখানে হারিয়ে গ্যাছে
রিট্রিট সুরের…
বেখেয়ালি গম্ভীরায় সমবেত নৈঃশব্দ্য-দহন।
আর কত! কোলাহল! বাহিরে মেঘমল্লার সুর…
ভেতরে দীপক রাগ বেজেই চলেছে আগামীর।