You are currently viewing এ্যালেইনা হোসেন-এর কবিতা

এ্যালেইনা হোসেন-এর কবিতা

এ্যালেইনা হোসেন-এর কবিতা

ব্রেইলিতে লেখা কিছু ফ্ল্যাশলাইট 

কার্মা কার্মা করে মহাজগৎ কত কত খণ্ড হয়ে ঝাপাইলো, ছাপাইলো

একেক মানুষের পুনঃ পুনঃ জন্ম নেওয়া জন্মসমগ্র।

আর কারোরই রোমে অটোগ্রাফ দেখা যাইতেছে না

অকাল বিকাল আইওয়াশিং মৃত্যুতে!

একদম দেয়ালের সাথে মাথাকে স্ট্যাচু বানিয়ে বলা সহজ, থরে থরে সাজানো ইট আমি, গায়ে গায়ে পোক্ত না লেগেও গেছি সিমেন্ট-ঘুম

আলমারি খুলতেই সব জামা হ্যাঙ্গার-পাখিতে উড়ে গেলো

আলমারির দুঃখী অনুরোধ–

তার শূন্য ভেতরে ঢুকে যেনো

তাকেই গায়ে পরে নেই

পাখিরা এতকাল ঐ সময়ে রাত রাত চেহারার ভোর দেখে বিভ্রান্ত,

আন্ডারগ্রাউন্ড রাজনৈতিক দলগুলোর মতো দেশাল ক্ষুব্ধতা

দুদক আকাশে তাদের এমন অভিযোগ দাখিলের পর

পালক ছেঁড়া থেকে শুরু করে

বারবিকিউ বিলুপ্তির হুমকি!

 

সূর্যের হাই তোলাটা তারা তাই ঐ সময়ে কিচিরমিচিরে ভ্যাঙ্গায়।

 

বিষাদ নিজেকে মনে করলো স্বশিক্ষিতদের গণজাগরণ, যে বিষ ফোঁটায় ফোঁটায় আধ–

বিশেষ টক শো চলছে তার সাথে;

মৌলিক চাহিদার ক্ষেত্রে খাদ্যের চেয়ে ক্লোনোজাপাম উৎপাদন বেশি জিডিপি আনে–

এ ক্ষেত্রে সরকার থেকে নিয়মিত ফার্স্ট এন্ড লাস্ট এইড ভর্তুকি চাই

বিষের সাথে অন্নের ধর্মযুদ্ধে বাংলাদেশ এখন 5G বিষন্নতাশীল রাষ্ট্র

বিষ তখনই ছদ্মবেশ ধারণ করে, যখন সে তার নিজের আত্মজীবনী জানতে চায় কোনো দুর্বল বিপরীতের কাছে।

 

মায়াপুরুষ ২

আমাকে সাথে নিও না। সঙ্গীত-ক্ষত গলায় নিয়ে কাঁপা কাঁপা কণ্ঠ। তোমার টেবিলের পেপারওয়েট, আওয়ার গ্লাস, পেন হোল্ডার, আর মানবকল্যাণের ফাঁদে পড়া ল্যাপটপের স্থির জীবন আশঙ্কায় ধরে আসবে। আর সঙ্গমে টের পেয়েছো, আঙুলগুলো কেমন কাঁটা চামচ– প্রাক্তন স্ত্রী আর প্রেমিকাদের কল্যাণে বুকের লোমের নিচের স্লেটে বরফ ঘষে ঘষে তুলতে পারে। আর এক্ষেত্রে তোমার মিষ্টি যুক্তি হতে পারে: আমিষ বা মৃতদেহ প্রিজার্ভ করার জন্য বরফ আবশ্যক।

শেষবার তোমার মুখের ভেতর আমার মাথার অনেক চুল ঢুকে পড়েছিলো। এতে কথার মিষ্টতা কিছুটা কোঁকড়া হয়ে যাওয়ার কথা। যায়নি? হ্যাঁ, গোপন কোনো স্যালুনে তোমার জিভ রেগুলার রিবন্ডিং করাও খবর পেয়েছি। আর আমি আমার আলজিভ আঁচড়ানোর চিরুনি তোমার গাড়িতেই ফেলে এসেছি

সাথে নিও না মায়াপুরুষ। সাত আটবার মরণ এনে দেওয়া দুর্ঘটনা এড়ানোর পর, মনে হয় অলৌকিক ব্যতিত প্রেমিকায় জিন্দা হয়ে ওঠাটা অনাদি বিশ্বাসে অশুভ।

 

পরিচিতি

‘পরিচয়’ শব্দটার সাথে যতো অবগত আমরা ততোটা পরিচিত না। যেমন আপনার পরিচয় কি? এটার উত্তরে যদি বলি আমি এ্যালেইনা, এ্যালেইনা হোসেন, তাহলে এটা উত্তর হইলো না। যদি বলি আমি শ্যামলী থাকি, তাহলে এটুকুতে বুঝা যাবে না শ্যামলীর আকাশ আমি আদৌও কি দেখি নাকি, বা এই এলাকা জুড়ে আমার বিস্তৃতি কতটুকু। বা শিক্ষা প্রতিষ্ঠানও যদি উল্লেখ করি, তাও বুঝা যাবে না যে সেই প্রতিষ্ঠানের রেকর্ডে আমার পাওয়া নাম্বার গুলা কেমন পুরানো কোনো বাসার ঝুলের মতো ঝুলে আছে, আর শিক্ষক শিক্ষিকারা কেউ শেয়ালের মত সেই বাড়ির আশেপাশে ঘুরঘুর করে নাকি। আর আমার পরিবারের সদস্যদের নামও যদি আনি, সেই নামগুলো কতটুকু আমার কবিতার আশেপাশে ঘুরপাক খাচ্ছে, সেই হদিস পাওয়া যাব না। দুঃখিত, তাই প্রথাগত পরিচয় দেওয়ার বিপক্ষে থেকে পরিচিতি এখানেই শেষ করছি।